-
অর্থনৈতিক সংবাদ
টানা পঞ্চম মাসের মতো রফতানি প্রবৃদ্ধিতে জাপান
জুলাইয়ে জাপানের রফতানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। টোকিওর কাছে ইয়োকোহামা বন্দরে রফতানির অপেক্ষায় থাকা গাড়ি ছবি: এপি
কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে জাপান। আমদানি-রফতানি থেকে শুরু করে অর্থনীতির প্রতিটি খাতে দেখা দেয় মন্দা। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে সেই বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। জুলাইয়ে দেশটির রফতানি টানা পঞ্চম মাসের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে জাপানের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এ তথ্য মহামারীর আঘাত থেকে বিশ্বজুড়ে জোরালো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দেয়। জাপান সরকারের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা পঞ্চম মাসের মতো দেশের রফতানিতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সময়ে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের পাশাপাশি চীনসহ এশীয় দেশগুলোতে চিপ ও চিপের সরঞ্জাম রফতানি অবদান রেখেছে।
এদিকে দ্বিতীয় মাসের মতো দেশটির আমদানিও বেড়েছে। জুলাইয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ব্রাজিল, বেলজিয়াম ও কুয়েত থেকে দেশটির আমদানি বেড়েছে। আমদানি করা পণ্যগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে, খাদ্য, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও জ্বালানি তেল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হলেও চীনের সঙ্গে ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে।
বণিক বার্তা
-
যুক্তরাজ্যে জুলাইয়ে খুচরা বিক্রি কমেছে
ব্রিটিশ খুচরা বিক্রি গত জুলাইয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে কমে গেছে। ইউরো কাপ ও কভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি ভোক্তাদের দোকান থেকে দূরে রেখেছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে খুচরা বিক্রি আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। গত জানুয়ারির পর এটি সবচেয়ে বড় পতন। রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা দশমিক ৪ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
বণিক বার্তা
-
গতি হারাচ্ছে এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার
কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে এশিয়ার অর্থনীতি। কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকোচনের মুখোমুখি হয় দেশগুলো। চলতি বছরের শুরু থেকে সেই বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এ অঞ্চলের উদীয়মান অর্থনীতিগুলো। তৈরি হয় শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের রেকর্ডও। তবে কভিডের অত্যন্ত সংক্রামক ডেল্টা ধরনের ধাক্কা সেই পুনরুদ্ধারের গতিকে স্তিমিত করে দিয়েছে। পুনরায় খুচরা ব্যবসা ও কারখানা বন্ধ হয়ে শক্তিশালী প্রথমার্ধের পর ক্ষীণ হয়ে গেছে করপোরেট মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দ্রুত বিস্তার ও স্বল্প টিকার হার এশিয়ার, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর পুনরুদ্ধারের পথে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। যেখানে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অর্থনীতিগুলো মহামারীকে পেছনে ফেলে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজির এশীয়-প্যাসিফিক অঞ্চলের গবেষণা বিভাগের প্রধান রব কর্নেল বলেন, এটা স্পষ্ট যে, এ অঞ্চলের অর্থনীতিগুলো আগের তুলনায় এখন কভিডে বেশি ভুগছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কারণ হলো কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা দেয়ার হারে স্বল্পতা।
২০২০ সালে তীব্র হ্রাসের সঙ্গে তুলনা করে এ অঞ্চলে করপোরেট ও অর্থনৈতিক সূচকগুলো শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের চিত্র ফুটে ওঠে। প্রান্তিক থেকে প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে প্রবৃদ্ধিও হয়েছে। তবে এবার এ চিত্র পাল্টাতে চলেছে। রেফিনিটিভ ইকনের তথ্যের ভিত্তিতে রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এশিয়ার বৃহৎ সংস্থাগুলোর মুনাফা কমতে পারে। কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলারের বাজার মূলধন থাকা ১ হাজার ৬৯টি সংস্থার মুনাফা কমতে পারে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বণিক বার্তা
-
আগস্টে ইউরোজোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লম্ফন
আগস্টে ইউরোজোনের পিএমআই ৫৯ দশমিক ৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে ছবি: রয়টার্স
কভিড-১৯ মহামারীর বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। টিকাদান কার্যক্রমের হার বাড়িয়ে শিথিল করা হয়েছে কভিডজনিত বিধিনিষেধ। পুনরায় খোলার অনুমতি পেয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছে গ্রাহকরা। ফলে শক্তিশালী পুনরুদ্ধার দেখা দিয়েছে ইউরো জোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে। একটি জরিপে দেখা গেছে, আগস্টে ইউরো জোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যদিও এ গতি জুলাইয়ের দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ গতির চেয়ে কম।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সরবরাহ চেইন ব্যাহত না হলে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা দেশগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত হতে পারত। তবে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় আবারো বিধিনিষেধ আরোপের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাণিজ্যিক কার্যক্রমের দিকনির্দেশক হিসেবে বিবেচিত আইএইচএস মার্কিটের ফ্ল্যাশ কম্পোজিট পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) গত মাসে ৬০ দশমিক ২ পয়েন্ট থেকে কমে আগস্টে ৫৯ দশমিক ৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে। এ সূচক ৫০-এর উপরে থাকা প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করে। চলতি মাসে পিএমআই রয়টার্সের জরিপের পূর্বাভাস ৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টকে ছাড়িয়ে গেছে।
ড্যানিশ ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজির বিশ্লেষক বার্ট কলিন বলেন, ইউরোজোনের অর্থনীতিতে পুরোদমে কার্যক্রম চলছে। কারণ কভিডজনিত বিধিনিষেধ শেষে পুনরায় খোলার পর প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যাশিত ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যদিও কভিডের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাব এবং যন্ত্রাংশের ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত পুনরুদ্ধার লাইনচ্যুত হয়নি।
বণিক বার্তা
-
দ্বিতীয় বছরের মতো উত্থান-পতনে এশিয়ার পর্যটন খাত
চীনের মহাপ্রাচীর থেকে মনোরম কাশ্মীর উপত্যকা। জনপ্রিয় এ গন্তব্যগুলো এখন দেশীয় দর্শনার্থীদের দিকে চেয়ে আছে। কভিডের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ দ্বিতীয় বছরের মতো গন্তব্যগুলোকে দর্শনার্থীশূন্য করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ব্যাপকভাবে সীমাবদ্ধ থাকায় বিদেশী পর্যটকরা অনেক দেশেই প্রবেশ করতে পারছেন না। অনেক দেশে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না স্থানীয়রাও।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হংকং মহানগরীর ৭৪ লাখ নাগরিকের মধ্যে অনেক লোক বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাদ দিচ্ছে। পরিবর্তে তারা দেশের মধ্যেই গ্ল্যাম্পিংকে বেছে নিচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন অনুসারে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়ে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমন ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ছিল।
বছরের মাঝামাঝি থেকে অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের আগমনে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছিল এ অঞ্চলের পর্যটন খাত। যদিও কভিডের নতুন ধরন অভ্যন্তরীণ পর্যটনের পুনরুদ্ধারেও ঝুঁকি তৈরি করেছে। ভারতে কভিডের সম্ভাব্য তৃতীয় ঝড় দেশটির পর্যটনে জড়িতদের চিন্তিত করে তুলেছে।
ইমরান আলী। কাশ্মীরের ডাল লেকের ভাসমান বাড়িই (হাউজবোট) তার আয়ের একমাত্র উৎস। তিনি বলেন, আমরা পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ার আশা করছি। এজন্য আমরা চাই না নতুন করে কভিডের সংক্রমণে আবার পর্যটন খাত প্রভাবিত হোক।
বণিক বার্তা
-
মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে এয়ার নিউজিল্যান্ড
২০২০ অর্থবছরে মোট ক্ষতির এক-তৃতীয়াংশ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার নিউজিল্যান্ড। দেশের অভ্যন্তরে বিমান চলাচলসহ কার্গো সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা মহামারীর এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর জাপান টুডে।
দেশটির বৃহত্তম উড়োজাহাজ সংস্থাটি জানায়, গত ১২ মাসে প্রতিষ্ঠানটির গড় ক্ষতির পরিমাণ ২৮ কোটি ৯০ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার বা ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। বিগত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার।
সংস্থাটির কার্গো পরিবহন সেবার চাহিদা ৭১ শতাংশ বাড়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ খাতে উড়োজাহাজ চলাচলের পরিমাণ করোনা-পূর্ববর্তী ৯৩ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। তবে সীমান্ত বন্ধ থাকায় পরিচালন খাতে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ৪৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারওম্যান থেরেশ ওয়ালশ বলেন, উড়োজাহাজ পরিবহন খাতে সংস্থাটির ক্ষতির পরিমাণ প্রতিষ্ঠানটির দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রীর সেবা প্রদানে অপারগতার বিষয়টিকে নির্দেশ করছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীতেও এয়ার নিউজিল্যান্ড তাদের সার্বিক ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। পাশাপাশি যেসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, সেসব খাতে ভালো সেবা প্রদানের চেষ্টা করেছে।
বণিক বার্তা
-
গ্রীষ্মেও গতি হারাচ্ছে বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ
নাটকীয়ভাবে কমে গেছে তাইওয়ানের রফতানি। গাড়ি ও মোবাইলে ব্যবহূত কম্পিউটার চিপ তৈরি করা দেশটিতে আবারো ছড়িয়ে পড়েছে কভিডের প্রাদুর্ভাব। অস্ট্রেলিয়া, চীন ও জাপানে সাময়িকভাবে বন্দর বন্ধ ও লকডাউন আরোপের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক বাণিজ্য পুনরুদ্ধারে। ফলে গ্রীষ্মের সময়ও গতি হারাতে শুরু করেছে বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ। যদিও বছরের এ সময়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চাঙ্গা থাকে। পূর্ব এশিয়ার উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া কভিডের সংক্রমণ এমন নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাণিজ্যে এমন মন্থরতা জ্বালানি তেল উত্তোলনেও প্রভাব ফেলেছে। ওপেকের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য দেশ জানিয়েছে, এ পরিস্থিতির কারণে জ্বালানি তেলের উৎপাদন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাতিল করতে হতে পারে।
কুয়েতের জ্বালানি তেলমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুলতিফ আল-ফারেস রয়টার্সকে বলেন, ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলো জ্বালানি তেলের উৎপাদন প্রতিদিন চার লাখ ব্যারেল বাড়াতে সম্মত হয়েছিল। তবে পূর্ব এশিয়ার দেশ ও চীনা অর্থনীতিতে কভিডের অতি সংক্রমণের ধরন ডেল্টার প্রভাব অব্যাহত থাকলে আমাদের তেল উত্তোলন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লুয়েলেন কনসাল্টিংয়ের অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, তাইওয়ানের রফতানি ক্রয়াদেশ ২০২০ সালে বার্ষিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। যেখানে আগামী তিন মাসের পূর্বাভাসে এ প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। রফতানি ক্রয়াদেশের পতনের ফলে আগামী মাসে গাড়ি প্রস্তুতকারক ও অন্যান্য নির্মাতাদের উৎপাদনক্ষমতা সীমিত করে আনতে হতে পারে। এরই মধ্যে কিছু গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সতর্ক করেছে, কিছু মডেল কিনতে হলে গ্রাহকদের ছয় মাসেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে।
বণিক বার্তা
-
জার্মানিতে ভোক্তা মূল্যস্ফীতির হার ১৩ বছরের সর্বোচ্চে
জার্মানির বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। আগস্টে ত্বরিতগতিতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এ তথ্যে এমনটা দেখা যায়।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ চিত্র ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে কভিড সংকট কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের অবস্থা এবং সরবরাহ ঘাটতি মোকাবেলায় কোম্পানিগুলোর সীমাবদ্ধতাকে স্পষ্ট করে তোলে।
জার্মানির ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের প্রাথমিক চিত্রে দেখা যায়, জুলাইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশের মূল্যস্ফীতির তুলনায় আগস্টে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
জুলাইয়ে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
আগস্টে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ হার রয়টার্সের জরিপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তা ২০০৮ সালের জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ পরিমাণ। এ মাসে দেশটিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এমনকি আগস্টে জার্মানির জাতীয় মূল্যস্ফীতির হার (সিপিআই) দাঁড়িয়েছিল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। সে সময় দুই জার্মানির মিলনের ফলে জার্মান অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছিল।
কমার্জব্যাংকের বিশ্লেষক রালফ সলভেন বলেন, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে এ মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। এ সময়ে মূল মূল্যস্ফীতি সম্ভবত ২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
জার্মান প্রাথমিক ভোক্তা মূল্যের পরিসংখ্যান সাধারণত তাদের মূল মূল্যস্ফীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
ল্যান্ডেজব্যাংক বাডেন ওয়াটেমবেগের (এবিবিডব্লিউ) অর্থনীতিবিদ এলমান ভয়েলকার বলেন, সামনের মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার আরো বাড়তে পারে। ২০২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বিশেষ কারণে ও ভিত্তি প্রভাবের কারণে সাময়িকভাবে ভ্যাটের হার হ্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি জানান, এটি তুলনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
বণিক বার্তা
-
চিপ সংকটে জাপানের শিল্পোৎপাদনে ধীরগতি
জুলাইয়ে শিল্প উৎপাদন আগের মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে ছবি: রয়টার্স
ধীরগতিতে হলেও জাপানের শিল্পোৎপাদন কমতে শুরু করেছে। জুলাইয়ে আগের মাসের চেয়ে উৎপাদনের হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। বিশ্বজুড়ে চলা চিপ সংকট এবং এশিয়াজুড়ে কভিড-১৯ সংক্রমণ পুনরুত্থান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির শিল্প খাতকে ধীর করে দিয়েছে। সম্প্রতি দেশটির সরকারি এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
দেশটির অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাপানের গাড়ি শিল্পে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। পাশাপাশি ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ খাতের বৈদ্যুতিক সামগ্রীর উৎপাদনও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ও এয়ার কন্ডিশনারের দুর্বল উৎপাদনের কারণে এ খাতে উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার কারণে এ খাতের উৎপাদন বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মহামারীসংক্রান্ত বিধিনিষেধ থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। অনেক দেশের সরকারই নতুন করে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে, যার প্রভাব পড়ে সরবরাহ চেইনে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে চিপসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ কমে যায়। ফলে এর সরাসরি প্রভাব পড়ে গাড়ি উৎপাদনের ওপর।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, চিপস্বল্পতার কারণে অটোমোবাইল ও এয়ার কন্ডিশনার শিল্প ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো, উৎপাদন শিল্পের যন্ত্রপাতি তৈরির খাতটিতে উৎপাদন বেড়েছে। এজন্য সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক চাহিদা অবদান রেখেছে বলে জানান তিনি।
বণিক বার্তা
-
বেসরকারি খাতে সমর্থন অব্যাহত রাখবে চীন!
বেসরকারি খাতকে সমর্থনকারী নীতিতে পরিবর্তন আনা হবে না বলে জানিয়েছেন চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হি। গতকাল রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তিনি। বিস্তৃত শিল্পের বিরুদ্ধে চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে এমন ঘোষণা দেয়া হলো। খবর রয়টার্স।
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে একটি ফোরামে লিউ বলেন, বেসরকারি খাতকে সমর্থন করার জন্য চীনের নীতি পরিবর্তন হয়নি এবং ভবিষ্যতেও পরিবর্তন হবে না।
চীন বিভিন্ন শিল্পের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। ফলে স্টার্টআপ ও কয়েক দশকের পুরনো সংস্থাগুলো অনিশ্চিত পরিবেশের মধ্যে রয়েছে। উদ্বেগের মধ্যে আছেন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বিনিয়োগকারীরা।
লিউ বলেন, বেসরকারি খাতগুলো চীনের রাজস্ব আয়ে ৫০ শতাংশ, জিডিপিতে ৬০ শতাংশ ও শহুরে কর্মসংস্থানে ৮০ শতাংশ অবদান রাখে। অর্থনৈতিক উত্থান ও কমিউনিস্ট পার্টির শাসনের বৈধতাকে হুমকির মুখে ফেলা চীনের সম্পদের ব্যবধান ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। এজন্য সম্পদের ব্যবধান কমিয়ে আনতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘সাধারণ সমৃদ্ধি’ অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রকাশ্য মতবিরোধের ফলে জিনপিংয়ের নীতি পরিবর্তনের প্রভাবগুলো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক এ পদক্ষেপকে ‘বিপ্লব’ আখ্যা দিয়েছিলেন পিপলস ডেইলি প্রকাশিত টেবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু জায়জিন। তার এ মতামত রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়েছিল। সেখানে জায়জিন বলেন, সংস্কারগুলো নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী ও সামাজিক শাসন ব্যবস্থাকে উন্নত করবে।
বণিক বার্তা
-
চার বছর পর আবারো বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো
চার বছর পর আবারো উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক আলোচনা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদোরের শীর্ষ উপদেষ্টারা এ আলোচনায় অবকাঠামো, বাণিজ্য ও অভিবাসনের মতো উভয় দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো এগিয়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বারাক ওবামা প্রশাসনের অধীনে বাইডেন ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে এ আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছিল।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মাধ্যমে এ আলোচনা শুরু করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। আলোচনায় তিনি মেক্সিকোর প্রতিনিধি দলকে ‘আমাদের বন্ধু, আমাদের অংশীদার’ উল্লেখ করে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বণিক বার্তা
-
ঝুঁকিতে যুক্তরাজ্যের সাড়ে ছয় লাখ কর্মসংস্থান
পরিবেশ রক্ষায় গ্রিনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ শূন্যে নামাতে বিশ্বের বহু দেশই গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট বা সবুজ বিনিয়োগের দিকে এগোচ্ছে। কথা ছিল, যুক্তরাজ্যও এ খাতে বিপুল বিনিয়োগ করবে। কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী অবকাঠামো ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি তারা। বরং বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
সম্প্রতি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (টিইউসি) এক গবেষণার তথ্য বলছে, এর ফলে দেশটির ৬ লাখ ৬০ হাজারের বেশি চাকরি হুমকির মধ্যে পড়বে। আর মাত্র দুই মাস পর যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬। বরিস জনসনের সরকার এ সম্মেলনের আয়োজক। ঠিক এ মুহূর্তে খবর জানা গেল যে, দেশটির কর্মসংস্থানের ওপর সবুজ বিনিয়োগের প্রভাব কতটুকু।
গত জুনে টিইউসির করা আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, জি৭ দেশগুলো সবুজ অর্থনীতিতে যে বিনিয়োগ করছে তার তালিকার শেষ থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। যদিও বরিস জনসনের দাবি, পৃথিবীকে উষ্ণায়ন থেকে বাঁচাতে সব ধরনের কাজের শীর্ষে রয়েছে তার দেশ।
বণিক বার্তা
-
অবকাঠামো খাতে বৃহৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের
আগামী ১০ বছরে দেশজুড়ে অবকাঠামো খাতে ৬৫ হাজার কোটি পাউন্ড (৯০ হাজার কোটি ডলার) বিনিয়োগ করতে চায় ব্রিটিশ সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির ভিত্তিতে এ বিনিয়োগ করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় অবকাঠামো ও নির্মাণ পাইপলাইনকে উচ্চাভিলাষী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার। এ প্রকল্প আগামী চার বছরে বার্ষিক ৪ লাখ ২৫ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশাবাদী সরকার।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্ত ক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পরিকল্পনায় আগামী ১০ বছরে সারা দেশে অবকাঠামো প্রকল্পে রেকর্ড ৬৫ হাজার কোটি পাউন্ড সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়ন হবে। প্রকল্পটি হাজার হাজার শিক্ষানবিশ, প্রযুক্তিবিদ, স্নাতক ও দক্ষ কর্মীদের জন্য নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে। সরকারের দাবি, প্রকল্পটি দেশজুড়ে সমানভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
ব্রিটিশ সরকার বলেছে, নতুন প্রকল্পে সামাজিক অবকাঠামোতে ৮ হাজার ৯০০ কোটি পাউন্ড বিনিয়োগের লক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে বড় পুনর্নির্মাণসহ সম্প্রদায়গুলোকে সহায়তায় ১৬৫টি শিক্ষা প্রকল্পে ২৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া সরকার আগামী ১২ মাসে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোতে ৩ হাজার কোটি পাউন্ডের পরিকল্পিত অর্থায়নও নির্ধারণ করেছে।
সরকারের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, কভিড-১৯ মহামারীতে এখন পর্যন্ত কর্মীদের বেতন সহায়তা (ফোরলগ স্কিম) বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ কোটি পাউন্ড এবং ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষ এ সহায়তা পেয়েছেন। এর মধ্যে স্কটল্যান্ডে ৯ লাখ ১০ হাজার কর্মসংস্থান, ওয়েলসে ৪ লাখ ৭০ হাজার এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ২ লাখ ৯০ হাজার কর্মসংস্থানকে সমর্থন দেয়া হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, কর্মসংস্থান পরিকল্পনা কাজ করছে। আট মাসের মধ্যে ফ্রন্টলাইন জব সেন্টারের কর্মীদের সংখ্যা দ্বিগুণ করে ২৭ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রমের ফলে বেকারত্বের পূর্বাভাস পূর্বের আশঙ্কার চেয়ে ২০ লাখ কম হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বেকারত্ব হার এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, স্পেন ও অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে কম।
বণিক বার্তা
-
ব্রেক্সিটের প্রভাবে ব্যয় বেড়েছে আমদানিকারকদের
ব্রেক্সিটের যে প্রভাব ব্রিটিশ আমদানি বাণিজ্যে পড়েছে তার সবচেয়ে প্রথম শিকার বলা যেতে পারে মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের পারসি পিগ সুইটস ব্র্যান্ডকে। জানুয়ারি থেকে যুক্তরাজ্যের এ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি আমদানি শুল্ক গুনতে হয়েছে ৬০ কোটি পাউন্ড। দিন দিন এ ব্যয় বাড়ছেই। চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ আমদানিকারকদের রেকর্ড পরিমাণে ব্যয় বেড়েছে।
দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পারসি পিগ সুইটসের পণ্য তালিকায় প্রায় দুই হাজার ধরনের খাবার রয়েছে। আর এসবের ওপরই আঘাত হেনেছে গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ব্রেক্সিটের রুলস অব অরিজিন। যদিও পারসি পিগসের খাবারগুলো জার্মানিতে তৈরি হয়, তবু আয়ারল্যান্ডে রফতানির আগে সেগুলো যুক্তরাজ্যে নেয়া হয়। সেখান থেকেই মূলত এগুলো আয়ারল্যান্ডে যায়। এখন পারসি পিগসের এ যাত্রাই শুল্কের আওতায় পড়ে যাচ্ছে। যে বিষয়টি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।
আমদানিকারকদের ওপর বহাল হওয়া জটিল কিছু নিয়মের কারণে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা বিনা মূল্যে ব্যবসার যে প্রচার চালানো হয়েছিল তা মিথ্যায় পরিণত হয়েছে। এর পর থেকেই হাজারো ব্যবসায়ীরা দেখতে পেলেন, তারা যদি চুক্তির আওতায় এমন সব পণ্য আমদানি করেন যেগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নে পর্যাপ্তভাবে উৎপাদন হয় না, তাহলে সেগুলোর জন্য তাদের শুল্ক দিতে হবে। বাণিজ্য সংস্থাগুলো বলছে, কিছু প্রতিষ্ঠান মনে করছে যে এ চুক্তির নিয়মগুলো ভীষণ জটিল হয়েছে। তারা বাণিজ্য সুবিধার জন্য কেবল শুল্ক বিভাগকে শুল্ক পরিশোধ করেই ব্যবসা চালিয়ে যেতে চান।
অ্যাকাউন্ট্যান্স ফার্ম ইউএইচওয়াই হ্যাকার ইয়ংয়ের সিনিয়র ম্যানেজার মিশেল ডেল বলেন, ব্রেক্সিটের কারণে যে পরিমাণ দালিলিক কাজ করতে হচ্ছে বা দলিল প্রস্তুত করতে হচ্ছে তার জন্য যুক্তরাজ্যের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ুলোকে যথাযথ সময় দেয়া হয়নি। ফলে ওইসব কাজের জন্য এখন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনিতেই মহামারীর কারণে অনেক ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার ওপর এখন কাগজপত্র-সংক্রান্ত ঝামেলা আর শুল্কের ঝামেলা শুরু হয়েছে। বিষয়টি বেশ সমস্যা সৃষ্টি করছে।
বণিক বার্তা
-
দক্ষিণ কোরিয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড নিম্নে
দক্ষিণ কোরিয়ায় বেকারত্বের হার রেকর্ড নিম্নে পৌঁছেছে। কভিডজনিত বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে দেশটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় এমনটা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও মূল উৎপাদন খাতগুলোতে এখনো শ্রমিক সংকট রয়েছে বলে প্রকাশিত এক তথ্যে দেখা যায়। খবর রয়টার্স।
আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার মৌসুম অনুযায়ী সমন্বিত বেকারত্বের হার নেমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশে। গতকাল স্ট্যাটিসটিকস কোরিয়ার প্রকাশিত এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়। ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বেকারত্বের হার নির্ধারণ শুরু হওয়ার পর এটিই দেশটির জন্য সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার। আগস্টে ২ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসার ফলে টানা তিন মাসের মতো বেকারত্বের হার নিম্নগামী অবস্থায় রয়েছে। জুলাইয়ে এ হার ছিল ৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
এক বছর আগের তুলনায় বর্তমানে দেশটিতে চাকরিজীবীর সংখ্যা বেড়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজারের মতো। জুলাইয়ে বিভিন্ন খাতে ৫ লাখ ৪২ হাজার কর্মসংস্থান যুক্ত হওয়ার পর এ উন্নতি দেখা দিয়েছে। নতুন সৃষ্ট এসব কর্মসংস্থানের অধিকাংশই হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক পরিষেবা, নির্মাণ, পরিবহন এবং গুদামজাতকরণ খাতে। স্ট্যাটিসটিকস কোরিয়ার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনটা দেখা যায়।
বেকারত্বের হার হ্রাস পাওয়ার পরও দক্ষিণ কোরিয়ার মূল উৎপাদন খাতগুলোতে শ্রমিক সংকট বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমানে উৎপাদন খাতে কর্মীর সংখ্যা আট বছরের সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এ খাতে শ্রমিকের সংখ্যা ২০২০ সালে ৭৬ হাজার থেকে কমে বর্তমানে ৪২ লাখ ৮৯ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
বণিক বার্তা
-
চতুর্থ প্রান্তিকে সক্ষমতার পূর্বাভাস কমিয়েছে ক্যাথে প্যাসিফিক
চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) সক্ষমতার পূর্বাভাস কমিয়েছে ক্যাথে প্যাসিফিক। যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা প্রাক-কভিড স্তরের ১৩ শতাংশে নামিয়ে এনেছে হংকংয়ের উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাটি। এর আগে সংস্থাটি সক্ষমতা ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছিল। খবর রয়টার্স।
ক্যাথে প্যাসিফিক জানিয়েছে, বছরের বাকি সময়ে প্রতি মাসে ১৩ কোটি ডলারের কম নগদ অর্থ ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা অব্যাহত রাখা হয়েছে।
হংকংয়ে অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজ চলাচলের বাজারের অভাব রয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কভিডজনিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ ‘উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত গন্তব্যগুলোতে থেকে যাওয়া পূর্ণ ডোজের টিকা নেয়া ভ্রমণকারীদেরও তিন সপ্তাহ হোটেল কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক। শক্তিশালী এ বিধিনিষেধের প্রভাব গিয়ে পড়েছে ক্যাথে প্যাসিফিকের ওপর।
গত মাসে ক্যাথে প্যাসিফিক বলেছিল, অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে যাত্রী পরিবহন সক্ষমতা প্রাক-কভিড স্তরের ৩০ শতাংশে উন্নীত করার বিষয়টি যাত্রী ও ক্রুদের জন্য কোয়ারেন্টিন বিধির ওপর নির্ভর করছে।
আগস্টে যাত্রী সংখ্যা আগের মাসের তুলনায় বেশি ছিল। কারণ চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বেড়েছিল। যদিও সেটি প্রাক-কভিড ২০১৯ সালের একই মাসের তুলনায় ৯৫ দশমিক ৩ শতাংশ কম ছিল।
বণিক বার্তা
-
ইউএইতে দেড় হাজার কর্মী নেবে অ্যামাজন
চলতি বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) গুদামের ধারণক্ষমতা ৬০ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে অ্যামাজন। এ লক্ষ্যে দেড় হাজার কর্মী নিয়োগ দেবে সংস্থাটি। বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান তার ডেলিভারি স্টেশনের এলাকা ৭০ শতাংশ বাড়ানোর কথাও জানিয়েছে।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রসারণ পরিকল্পনার অধীনে অ্যামাজন ইউএইতে চারটি নতুন ডেলিভারি স্টেশন খুলবে। সংস্থাটির মতে, এ পদক্ষেপ ডেলিভারির গতি বাড়িয়ে দেবে এবং আরো গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেবে।
চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইউএইতে সংস্থাটির গুদামের ধারণক্ষমতা ৩৭ লাখ ঘনফুটেরও বেশি অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত হবে। এটি ৪০টি অলিম্পিক আকারের সুইমিং পুলের সমান।
দুবাই চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে, ইউএইর খুচরা ই-কমার্স বাজার ৫৩ শতাংশ বেড়ে গত বছর ৩৯০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ বাজারটি ৮০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বণিক বার্তা
-
এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে বিশ্বব্যাংক
পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে বিশ্বব্যাংক। কভিডের অতি সংক্রামক ডেল্টার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি এ পূর্বাভাস কমিয়েছে। গতকাল সংস্থাটি দরিদ্র ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এড়াতে সহায়তা করার জন্য সরকারগুলোর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের অপ্রত্যাশিত শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি বাদ দিয়ে পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলো এ বছর ২ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে। যেখানে গত এপ্রিলে বিশ্বব্যাংক ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এ অঞ্চলের বৃহত্তম অর্থনীতি চীনের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও অন্যান্য অর্থনীতিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম উন্নত হচ্ছে। তবে দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি প্রত্যাশার তুলনায় ধীর হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
বণিক বার্তা
-
শক্তিশালী কাঠামো তৈরির আহ্বান আইএমএফের
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা ছবি: আইএমএফ ওয়েবসাইট
বিশ্বের এক দেশ থেকে অন্য দেশে অর্থ লেনদেনের জন্য একটি শক্তিশালী কাঠামো তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিভা। এজন্য নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। খবর দ্য ন্যাশনাল।
চলতি সপ্তাহে ব্যাংক অব ইতালি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আন্তঃদেশীয় অর্থ লেনদেনের গতি অনেক ধীর। এ পদ্ধতি অনেক ব্যয়বহুল, অস্বচ্ছ ও কিছু মানুষের জন্য দুর্গম। বিশেষ করে দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ, যাদের কাছে এ অর্থ পৌঁছানো দরকার। আমাদের অবশ্যই এক্ষেত্রে যত বাধা আছে, সেগুলোর সমাধান করতে হবে। এমন একটি পদ্ধতিতে আসতে হবে যেটা সব দেশের জন্য সুবিধাজনক হয়। সাময়িক সমাধান দেয়া হলে তা ভোক্তাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনে না।
বৈশ্বিক আন্তঃদেশীয় অর্থ লেনদেনের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এখন এর বার্ষিক হার ৫ শতাংশের মতো। আগামী বছর নাগাদ এ পরিমাণ ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াং জানিয়েছে, মহামারীর কারণে আন্তঃদেশীয় লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেন, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ড দেখিয়েছে যে কীভাবে আন্তঃদেশীয় লেনদেন ব্যবস্থাকে সহজ করা যায়। এ দুই দেশের মধ্যে অর্থ লেনদেন ব্যবস্থার চুক্তি রয়েছে। এর মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে কর্মরত কোনো ব্যক্তি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে থাইল্যান্ডে নিজের পরিবারের কাছে অর্থ পাঠাতে পারে। আর মাত্র দুইদিনের মধ্যে তার পরিবারের কাছে অর্থ পৌঁছে যায়। তিনি আরো বলেন, এখন নতুন নতুন প্রযুক্তির আবিষ্কার হচ্ছে। এর মাধ্যমে অর্থ পাঠানো ও লেনদেন আরো সহজ করা সম্ভব।
বণিক বার্তা
-
জরুরি অবস্থা শেষে চালু হচ্ছে জাপানের অর্থনীতি
শুক্রবার থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা হচ্ছে জাপানের কভিড-১৯ সংক্রান্ত জরুরি বিধিনিষেধ। এপ্রিলের পর জাপানজুড়ে সংক্রমণ প্রতিরোধে কোনো ধরনের কঠোর বিধিনিষেধ ব্যতীত এটিই প্রথম দিন। এর আগে কভিড-১৯-এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রোধে জাপানজুড়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। রাজধানী টোকিওসহ জাপানের ১৮টি প্রদেশে এ জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল। এর আগে বৃহস্পতিবার একটি সাময়িক জরুরি অবস্থার অবসান ঘটেছে দেশটিতে। জাপানজুড়ে কভিড-১৯ সংক্রমণের হার হ্রাস পাওয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা শক্তিশালী হওয়ার ফলে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও বিধিনিষেধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। খবর নিক্কেই এশিয়া।
সরকার কর্তৃক বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পাশাপাশি জনগণকে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরে আসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নতুন কোনো ধরনের সংক্রমণ রোধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জাপান সরকার। এ অবস্থায় রেস্টুরেন্ট ও থিম পার্কের মতো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোর নির্বাহীরা আশা প্রকাশ করছে যে, তারা পুনরায় আগের মতো গ্রাহক আকৃষ্ট করতে সক্ষম হবেন।
জরুরি অবস্থার সময় জনগণকে ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণায় বর্তমানে জাপানের পর্যটন খাত অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ও ভ্রমণকালীন বাসস্থানের জন্য বুকিংয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ করছেন।
বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ঘোষণার পর অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ কোম্পানি আনুমানিক ৫০ হাজার বুকিং গ্রহণ করেছে, যা গত মাসের তুলনায় ১০ গুণ বেশি বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি। গত বুধবার জাপান সরকার কর্তৃক বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পরের দিন এ তথ্য জানায় তারা। এ সময় টোকিওর ডিজনি থিম পার্ক এবং ইউনিভার্সাল স্টুডিওজ জাপান দৈনিক হিসাবের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক দর্শনার্থীর বুকিং রেকর্ড করেছে। আগে এসব পার্কের দৈনিক দর্শনার্থী পাঁচ হাজার থাকলেও বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের পর তা ১০ হাজার পর্যন্ত স্পর্শ করছে বলে জানায় তারা।
বণিক বার্তা
-
কর্মী সংকটে ভয়াবহ চাপে ব্রিটিশ অর্থনীতি
গত বছরের শুরু থেকে কর্মী সংকট দেখা দেয় যুক্তরাজ্যজুড়ে। কভিড-১৯ মহামারীর পাশাপাশি ব্রেক্সিটের প্রভাব এ সংকটকে আরো ঘনীভূত করে। এরই মধ্যে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে জ্বালানি সংকট। কর্মী সংকটের প্রভাব থেকে বাদ যায়নি পরিবহন, কৃষি থেকে শুরু করে আতিথেয়তা পর্যন্ত কোনো খাতই। অর্থনীতির প্রতিটি অংশে ছড়িয়ে পড়া এ সংকট মধ্যম আকারের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর গুরুতর চাপ সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫০০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। জরিপে এক-চতুর্থাংশেরও বেশি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, কর্মীদের অভাব স্বাভাবিক স্তরের কাজের সক্ষমতার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি মজুদ কমে যাওয়ায় সংস্থাগুলোর সরবরাহ চেইন ব্যাহত হচ্ছে ও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ সংকট মোকাবেলায় কিছু প্রতিষ্ঠান উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে এবং কিছু প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। ফলে ক্রিসমাসের কেনাকাটার মৌসুম ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। জরিপের প্রায় ২০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান বলেছে, তারা নতুন কর্মীদের আকৃষ্ট করার জন্য মজুরি বৃদ্ধি করছে এবং অন্যরা শ্রমিকদের প্রলুব্ধ করার জন্য অতিরিক্ত নানা সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে।
অ্যাকাউন্টিং ও পরামর্শক সংস্থা বিডিওর করা জরিপে বলা হয়েছে, এ সংকটে ভোক্তাদের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যবসায়ী বলেছে, এ সংকট মোকাবেলায় আগামী তিন থেকে ছয় মাস পণ্যের দাম বাড়াতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার দাম বাড়ানোর পরিবর্তে পণ্য ও পরিষেবার ধরনগুলো কমিয়ে এনেছে। এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান এ পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে। আরো এক-তৃতীয়াংশ প্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি আমূল উন্নতি না হলে আগামী মাসে একই পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা করেছে।
বণিক বার্তা
-
নিউজিল্যান্ডে সাত বছরে প্রথমবারের মতো সুদহার বৃদ্ধি
সুদহার বৃদ্ধি করেছে নিউজিল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল এ ঘোষণা দেয় রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ড (আরবিএনজেড)। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কঠোরতার ইঙ্গিতও প্রদান করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মুদ্রাস্ফীতির চাপের উপরে উঠতে এবং উত্তপ্ত আবাসন মার্কেটে শিথিল অবস্থা আনয়ন করতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির হার একটি কঠিন চক্রের সূচনা করে, যা চলতি বছরের আগস্টে শুরু হওয়ার কথা ছিল। নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি নিউজিল্যান্ডের বৃহত্তম শহর অকল্যান্ডে লকডাউন ঘোষণার ফলে এ ঘোষণা পিছিয়ে দেয়া হয়। আরবিএনজেডের নগদ হার দশমিক ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি সম্পর্কে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল রয়টার্সের ২০ জন অর্থনীতিবিদ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ঘোষণার পর মার্কিন ডলারের বিপরীতে নিউজিল্যান্ড ডলারের মূল্য সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে বিস্তৃত বাজার ব্যবস্থার কারণে তা পরবর্তী সময়ে হ্রাস পেয়ে প্রতি নিউজিল্যান্ড ডলারের বিপরীতে মার্কিন ডলারের দর ৬৯ সেন্টে দাঁড়ায়।
ব্যাংক অব নিউজিল্যান্ডের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক জেসন ওং বলেন, সুদহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো যে পন্থা অবলম্বন করছিল, তার সঙ্গে আরবিএনজেডের এ পদক্ষেপের বেশ মিল রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা বর্তমানে সুদহার বৃদ্ধির একটি সিরিজ প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছি। বাজার ব্যবস্থা এর জন্য উপযুক্ত অবস্থানে রয়েছে।
সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর আরবিএনজেড জানায়, মুদ্রানীতি প্রণোদনা প্রত্যাহার করার ব্যাপারটি প্রত্যাশিত ছিল। মুদ্রাস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের মাঝারি দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সুদহার বৃদ্ধির এ পদক্ষেপ অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় নিউজিল্যান্ডকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। জরুরি পরিস্থিতিতে গৃহীত ঋণের খরচ ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর উদ্যোগের ফলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও নরওয়ে, চেক রিপাবলিক এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলোও সুদহার বৃদ্ধি করেছে।
বণিক বার্তা
-
বাণিজ্য বৈঠকে চীন-যুক্তরাষ্ট্র
দীর্ঘ বিরতির পর আবারো দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল দুই দেশের কর্মকর্তারা একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। খবর এপি।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির শীর্ষ বাণিজ্য আলোচক লিউ হি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন তাইয়ের প্রতি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আলোচিত ‘ফেজ ১’ বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অন্যান্য প্রধান অর্থনৈতিক উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিবৃতি অনুসারে, উভয় পক্ষ বাস্তববাদী, অকপট ও গঠনমূলক আলোচনা করেছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি তাই জানিয়েছিলেন, তিনি শুল্কযুদ্ধ সমাধানের লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তী বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে বেইজিংয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার পরিকল্পনা করছেন।
আলোচনায় চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হি চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা বাতিলের বিষয়ে জোর দেন।
দুই দেশের বাণিজ্যযুদ্ধের অবসান ঘটাতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ফেজ ১’ বাণিজ্য চুক্তি প্রণয়ন করেছিলেন। বেইজিংয়ের শিল্পনীতি ও বাণিজ্য উদ্বৃত্তের অভিযোগ তুলে ট্রাম্পই চীনের পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে মার্কিন সয়াবিন কেনা বন্ধ এবং অন্যান্য পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে প্রতিশোধ নেয় চীন।
বণিক বার্তা
-
ব্রিটেনে শিল্প উৎপাদন বন্ধের হুমকি
ব্রিটেনের বেশির ভাগ শিল্প উৎপাদকরা, বিশেষ করে স্টিল, গ্লাস, সিরামিক ও কাগজ কল মালিকরা উৎপাদন বন্ধের হুমকি দিয়েছেন সরকারকে। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, জ্বালানির মূল্য লাফিয়ে বাড়ছে। উৎপাদকরা বলছেন, গ্যাসসহ জ্বালানিপণ্যের পাইকারি মূল্য কমানো না হলে স্টিল উৎপাদন চলমান রাখা সম্ভব নয়। খবর রয়টার্স।
এদিকে ইউরোপে চলতি বছর কয়েক দফায় পাইকারি বাজারে গ্যাসের দাম বেড়েছে অন্তত ৪০০ শতাংশ। এশিয়ায় গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি ও মজুদ কমে যাওয়ায় ইউরোপে এমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যমন্ত্রী জ্বালানির দাম কমানোর বিষয়ে কোনো সহযোগিতা ব্যবসায়ীদের করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। যুক্তরাজ্য স্টিল লিমিটেডের পরিচালক গ্যারেথ স্টেস বলেছেন, ‘জ্বালানির দাম না কমানো হলে প্রতিদিনই চাপের মধ্যে উৎপাদনকাজ চালিয়ে যেতে হবে। এভাবে একদিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর উপায় থাকবে না।’
যুক্তরাজ্যের সরকারের বক্তব্য, বর্তমান সংকটের ফলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে নজর দিতে হবে। এ খাতে বিপ্লব ঘটানো ছাড়া সমাধান সম্ভব হবে না। দেশটির গ্যাস ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের সিইউ ডেভিড ডেলটন বলেছেন, অনেক কোম্পানি প্রতিদিন গ্যাস উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে।
তবে ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, তিনি জ্বালানির দাম কমিয়ে আনতে আগামীতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন। যদিও তার এ আশ্বাসকে টিকে থাকার জন্য পর্যন্ত মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা।
বণিক বার্তা
-
যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা
যুক্তরাষ্ট্রে সেপ্টেম্বরে নিত্যপণ্যের চাহিদা ও খুচরা বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সরবরাহের সীমাবদ্ধতা ও পণ্য সংকটের কারণে ছুটির মৌসুমে সামগ্রিক বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়বে। খবর রয়টার্স।
সম্প্রতি দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা বিক্রি বৃদ্ধির বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত মাসে খুচরা বিক্রির হার শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। আগস্টে এ বৃদ্ধির হার ছিল শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ। রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদরা খুচরা বিক্রির হার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ভোক্তারা ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছিলেন দেশটির অর্থনীতিবিদরা। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিক্রি বৃদ্ধির যে তথ্য প্রদান করা হয়েছে, সেটি অর্থনীতিবিদদের ধারণায় তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। টরন্টোভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান বিএমওর প্রবীণ অর্থনীতিবিদ সাল গুয়াটিয়েরি বলেন, খুচরা বিক্রির যে প্রতিবেদন সেটি ভোক্তাদের স্থিতিস্থাপকতা ও পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকেই নির্দেশ করে। বর্তমান সময়ে সরবরাহ সংকট ও মাইক্রো চিপের ঘাটতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। ফলে ক্রেতাদের পছন্দের পণ্যের পরিমাণ কমছে ও চাহিদা বাড়ছে।
বণিক বার্তা
-
আগামী বছরে ৫% মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা যুক্তরাজ্যের
আগামী বছরে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৫ শতাংশ। ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের (বিওই) এক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ এ পূর্বাভাস দেন। উপকরণ ও শ্রমিকস্বল্পতায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ব্যাহত হওয়ায় এমনটা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। খবর সিএনএন বিজনেস।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বিওই অর্থনীতিবিদ হাও পিল জানান, সামনের মাসগুলোতে ৫ শতাংশের উপরে মূল্যস্ফীতি থাকলে আমি অবাক হব না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেখানে ২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে, তাতে আমরা খারাপ অবস্থাতেই আছি।
৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পলিসি মিটিংয়ে সুদহার নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সেখানে তিনি সুদহার বৃদ্ধির পক্ষে ভোট দেবেন কিনা এ বিষয়ে মন্তব্যে অস্বীকৃতি জানান পিল। মূল্যস্ফীতি কমাতে এবং স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদহার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
২০২০ সালের সংকোচন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। তবে আর্থিক পুনরুদ্ধার যে ঝুঁকির মুখে আছে সাম্প্রতিক কিছু উপাত্তে তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি বেশ ঊর্ধ্বমুখী।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের (ওএনএস) সর্বশেষ প্রতিবেদনে আরো উদ্বেগের বিষয় উঠে এসেছে। শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে টানা পাঁচ মাসের মতো খুচরা বিক্রি কমেছে যুক্তরাজ্যের। ১৯৯৬ সাল থেকে এ উপাত্ত রাখার শুরুর পর একটানা মাসের দিক থেকে এটা সর্বোচ্চ শ্লথগতি। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি অন্যান্য খাতের বিক্রিও হতাশাজনক। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি এবং ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সদ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে আসা দেশটি অর্থনৈতিক স্থবিরতায় প্রবেশ করতে পারে, এমন উদ্বেগ অনেক অর্থনীতিবিদের।
বণিক বার্তা
-
চলতি বছরও প্রতিশ্রুত অনুদান দিতে ব্যর্থ হবে উন্নত দেশগুলো
প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি ডলার অনুদান সরবরাহের লক্ষ্য ছিল ধনী দেশগুলোর। বৈশ্বিক উষ্ণতা মোকাবেলায় দরিদ্র দেশগুলোকে এ সহায়তা দেয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। চলতি বছরও এ সহায়তার সব অর্থ পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। খবর এপি।
যুক্তরাজ্য, কানাডা ও জার্মানির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রত্যাশা করেছিলেন, অর্থ অনুদান নিয়ে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে তা হয়তো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। হয়তো জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন বা কপ২৬-এর আগেই তা হয়ে যাবে। কিন্তু সেটি হয়নি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের আগে এ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছা সম্ভব নয়। অর্থাৎ অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রুতি ঘোষণার তিন বছর পর তা পাওয়া যেতে পারে।
চলতি মাসের শেষ দিন গ্লাসগোয় হতে যাওয়া জলবায়ু আলোচনায় যুক্তরাজ্যের পক্ষে সভাপতিত্ব করবেন সংসদ সদস্য অলোক শর্মা। তিনি বলেন, ২০২০ সালের লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিতভাবেই নষ্ট হয়েছে। এর আগে প্রথম প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ হয় ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু আলোচনায় নতুন করে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। সে সময়টা ছিল উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য গভীর হতাশার।
সময়মতো অর্থায়নের ঘাটতির জন্য অলোক শর্মাকে এখন দরিদ্র দেশগুলোর হতাশার মুখোমুখি হতে হবে। তিনি বলছেন, সামনের বছরগুলোতে ধনী দেশগুলোকে অর্থায়ন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। ২০২৩ সালের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলার অর্থায়নের বিষয়ে নিশ্চিত করতে হবে। সময়ের সঙ্গে অনুদানের অর্থের পরিমাণও বাড়াতে হবে। ২০২৫ সাল নাগাদ এ অর্থ ১১ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে।
প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী জোনাথান উইলকিনসন ও জার্মানির উপপরিবেশ মন্ত্রী জোসেন ফ্ল্যাশবার্থ। প্যারিসভিত্তিক সংস্থা ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। সংস্থাটি জলবায়ু খাতে বিশ্বের দেশগুলোর অর্থায়ন পর্যবেক্ষণ করে।
বণিক বার্তা
-
ইউরোপের ভোক্তামূল্য ১৩ বছরের সর্বোচ্চে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউরোজোনভুক্ত (ইউরো মুদ্রা ব্যবহারকারী) ১৯টি দেশে ভোক্তামূল্য ১৩ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি ও নভেল করোনাভাইরাস মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ইইউর পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের প্রকাশিত এক তথ্যে এমনটা দেখা যায়। খবর এপি।
ইউরোস্ট্যাট জানায়, সংস্থাটির ইউরোজোনভুক্ত দেশগুলোয় চলতি বছরের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৪ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরে এসব অঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০০৮ সালের জুলাইয়ের পর এটিই সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির হার। ওই সময়েও মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ।
ইইউর ১৯টি দেশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির হার লক্ষ করা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিশ্বব্যাপী মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শুরু হওয়ার ফলে মূল্যস্ফীতির হার বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের এ যাত্রা খুব একটা সহজভাবে যাচ্ছে না। সরবরাহ চেইনে নানা প্রতিবন্ধকতা বৈশ্বিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের চাহিদায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। পাশাপাশি শ্রমিক সংকট এ পরিস্থিতিকে আরো কঠিন করে তুলছে। ফলে খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে খেলনাসামগ্রী ও অবকাশকালীন কেনাকাটার খরচ বেড়েছে বহুগুণ।
বণিক বার্তা
-
সেপ্টেম্বরে জাপানের শিল্পোৎপাদন কমেছে
জাপানের শিল্পোৎপাদনের হারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে এ খাতের উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা গত ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। মূলত সেমিকন্ডাক্টর বা চিপ সংকটের কারণে গাড়ি উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে জাপানের গোটা শিল্পোৎপাদন খাতের হিসাবে। খবর কিয়োদো নিউজ।
দেশটির গাড়ি নির্মাণ শিল্পে আগের মাসের তুলনায় ২৮ দশমিক ২ শতাংশ সংকোচন হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলের পর এটিই সবচেয়ে বড় সংকোচন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় কভিড-১৯ মহামারী ও এ-সংক্রান্ত নানা বিধিনিষেধের কারণে গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও চিপ সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে জাপানের গাড়ি উৎপাদন শিল্পে। টানা তৃতীয় মাসের মতো গাড়ি উৎপাদন শিল্পে উৎপাদন কমছে। সাধারণ ও ব্যবসার কাজে ব্যবহূত যন্ত্রপাতি যেমন কনভেয়রস ও কম্প্রেসশনের উৎপাদন কমেছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
বণিক বার্তা
-
বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে আরো চাপ বাড়ার শঙ্কা
মহামারীর শুরু থেকেই বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে দেখা দেয় জটিলতা। ঘাটতি তৈরি হয় বিভিন্ন পণ্যের। কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের পর তুমুল ভোক্তা চাহিদা সরবরাহ চেইনের ব্যাঘাতকে আরো ঘনীভূত করেছে। কম্পিউটার থেকে শুরু করে অটোমোবাইল পর্যন্ত বিভিন্ন খাত যন্ত্রাংশ ঘাটতিতে বিপর্যস্ত অবস্থা পার করছে। সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমার পর অক্টোবরে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য প্রবাহের এ ব্যবস্থা আবারো জটিল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই টোল বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ। ফলে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে আরো চাপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সুয়েজ খাল পারাপারে টোল বাড়ছে ৬ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথে ব্যয় বৃদ্ধি সরবরাহ চেইনে আরো মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ছোট সামুদ্রিক এ পথ দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ সম্পন্ন হয়।
এদিকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সরবরাহ চেইনের প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করেন কিছু বিশেষজ্ঞ। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের সমীক্ষা অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে কিছুটা হালকা হওয়ার পর অক্টোবরে মার্কিন সরবরাহ চেইনের চাপ আবারো বেড়েছে। অক্টোবরে লস অ্যাঞ্জেলেস ও লং বিচ বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী জাহাজের সংখ্যা সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছিল।
বণিক বার্তা
-
চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য ৯ গুণ বেড়েছে
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) চীনের যোগ দেয়ার ২০ বছর পূর্তি হলো। এ সময়ে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নয় গুণ বেড়েছে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে এশিয়ার অর্থনৈতিক জায়ান্টটি। তবে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত উদ্যোগগুলোয় প্রত্যাশিত সংস্কার কার্যকর এবং দেশের বিভিন্ন অংশে সমতাপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এখনো হিমশিম খাচ্ছে চীন। খবর নিক্কেই এশিয়া।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে ডব্লিউটিওতে যোগ দেয় চীন। সস্তা শ্রমের ওপর দাঁড়িয়ে অল্প সময়ের ব্যবধানেই বিশ্বের কারখানায় রূপান্তরিত হওয়া দেশটির রফতানি বাড়তে থাকে। শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে আমদানিও বাড়াতে থাকে চীন।
জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের (আঙ্কটাড) বরাতে জানা গেছে, ২০০১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চীনের রফতানি ও আমদানি বেড়েছে যথাক্রমে ৮৭০ ও ৭৪০ শতাংশ। বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়েছে ৮১০ শতাংশ, যেখানে পুরো বিশ্বের বৈদেশিক বাণিজ্য বেড়েছে ১৮০ শতাংশ।
দেশীয় কোম্পানিগুলোকে ভর্তুকি ও বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ শুরু থেকেই চীনের পিছু ছাড়ছে না। এতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১১ জাতিরাষ্ট্রের সিপিটিপিপিতে যোগ দিয়ে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরো শক্তিশালী অবস্থানের উচ্চাভিলাষ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সাংহাইয়ে আয়োজিত চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপোতে বাণিজ্য উদারীকরণে দেশটির বিশাল অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, ডব্লিউটিওতে যোগ দিয়ে যে অঙ্গীকার করেছিল তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেছে চীন। বৈদেশিক পণ্য আমদানিতে শুল্ক ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ করা হয়েছে। ডব্লিউটিওতে যোগদানের সময় যেখানে শুল্ক ৯ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার শর্ত ছিল।
বণিক বার্তা
-
ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় বাড়ছে চীনের স্বর্ণ উত্তোলন
চীন বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ উত্তোলক দেশ। মূল্যবান ধাতুটি ব্যবহারের দিক থেকেও নেতৃস্থানীয় দেশটি। গত বছর বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতার কারণে দেশটির স্বর্ণ উত্তোলন ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছর পরিস্থিতি ইতিবাচকতায় মোড় নিয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় উত্তোলন ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় তথ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ডেটা।
সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ডেটার প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত বছর চীনে স্বর্ণ উত্তোলনের উৎস কমে যায়। স্বর্ণ ও অন্য খনিজসম্পদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় ক্ষুদ্র ও কম উত্তোলন সক্ষমতার খনিগুলো। মূলত এসব কারণেই ওই বছর উত্তোলন কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছর থেকে উত্তোলন বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গ্লোবাল ডেটা বলছে, ২০২১-২৫ সালের মধ্যে চীনে স্বর্ণ উত্তোলনের চক্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ১ দশমিক ১ শতাংশ। চীন বেশ কয়েকটি স্বর্ণ উত্তোলন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যেই এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। এসব প্রকল্পই ভবিষ্যতে চীনকে স্বর্ণ উত্তোলনে সবচেয়ে বড় সুবিধা দেবে।
বণিক বার্তা
-
চীনের আমদানিতে উল্লম্ফন রফতানি প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি
নভেম্বর মাসে চীনের রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। নিংবো জোশান বন্দর ছবি: রয়টার্স
চীনের রফতানি প্রবৃদ্ধি আবারো গতি হারিয়েছে। শক্তিশালী ইউয়ানের চাপ, দুর্বল চাহিদা ও উচ্চ ব্যয় নভেম্বরে দেশটির রফতানি প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিয়েছে। যদিও গত মাসে দেশটির আমদানি অপ্রত্যাশিতভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উচ্চ চাহিদা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির আমদানি উল্লম্ফনে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর রয়টার্স।
গতকাল প্রকাশিত কাস্টমস ডাটা অনুসারে, নভেম্বরে চীনের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। আগের মাসে ২৭ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি ধীর। যদিও এ প্রবৃদ্ধি রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশিত ১৯ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে।
গত মাসে দেশটির আমদানি ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এমনকি এ হার অক্টোবরে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশকেও ছাড়িয়ে গেছে। অর্থনীতিবিদরা ২০ দশমিক ৬ শতাংশ আমদানি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভে থাকা নগদ অর্থ কমানোর ঘোষণা দেয়ার একদিন পর বাণিজ্যের এ তথ্য প্রকাশিত হলো। মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলতে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো এ পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে চীনা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির লক্ষণ রয়েছে। বিদ্যুতের ঘাটতি, প্রধান শিল্পের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও আবাসন খাতে ঋণের সমস্যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় বিশ্লেষকরা আগামী মাসে আরো সহায়ক নীতি পদক্ষেপের আশা করছেন।
বণিক বার্তা
-
ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে জাপানে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ
জাপানে বেসরকারি খাতের যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে। অক্টোবরে এ ক্রয়াদেশের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত বছরের ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। গতকাল প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কিয়োদো নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্পোৎপাদন খাতের বাইরের ক্রয়াদেশ বাড়ার কারণে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ বেড়েছে। মন্ত্রিপরিষদ অফিস অনুসারে, বাজার অস্থিরতার কারণে এ ক্রয়াদেশের হিসাবে জাহাজ ও বিদ্যুৎ খাতকে বাদ দেয়া হয়েছে। অক্টোবরে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশের পরিমাণ মোট ৮৭ হাজার কোটি ইয়েনে (৭৭০ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটির ক্রয়াদেশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
প্রতিবেদনে মন্ত্রিপরিষদ অফিস একটি মূল্যায়নে জানায়, করপোরেট মুনাফা বাড়ার একটি প্রধান সূচক হিসেবে চিহ্নিত যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশে কয়েক মাসের নিম্নমুখী প্রবণতার পর অক্টোবরে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা গেছে।
দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি দেখলেও যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ গড়ে তিন মাসে মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এজন্য পুনরুদ্ধার বলতে গেলে আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে এবং আগামী কয়েক মাস দেখতে হবে।
বণিক বার্তা
-
জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদায় পুনরুদ্ধার
চলতি বছর শক্তিশালী পুনরুদ্ধার দেখেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা। তবে পুরোপুরি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এভিয়েশন খাতে কেরোসিনের নিম্নমুখী চাহিদা। শীর্ষস্থানীয় তথ্য সেবাদাতা ও বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ডাটা সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বাজার নিয়ে গ্লোবাল ডাটার করা বিশ্লেষণ বলছে, কেরোসিন বাদে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা সম্পূর্ণভাবে মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে এসেছে। চলতি বছরজুড়ে কেরোসিনের চাহিদা মহামারীপূর্ব পর্যায়ের তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ নিচে অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেরোসিন প্রধানত জেট জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ খাতে নতুন করে বাধার সৃষ্টি করলে জেট জ্বালানির চাহিদা আবারো দুর্বল হয়ে পড়ে।
গ্লোবাল ডাটার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কেরোসিনসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা ছিল মহামারীপূর্ব অবস্থার মাত্র ৩ শতাংশ নিচে। আকাশপথে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা কেটে গেলে সব ধরনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরবে।
গ্লোবাল ডাটার ম্যানেজিং এনার্জি এনালিস্ট উইল স্কারগিল বলেন, বৈশ্বিক চাহিদা পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে চীন। দেশটির পরিবহন খাতে গ্যাসোলিনের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা বিশ্ববাজারে প্রভাবকের কাজ করেছে। এছাড়া পেট্রোকেমিক্যাল খাতে লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে নাপথা ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) চাহিদা।
অন্যান্য বড় অর্থনীতিগুলোয় চাহিদা এখনো পুরোপুরি মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরতে পারেনি। তবে চীনে এসব পণ্যের চাহিদায় শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি শূন্যস্থান পূরণে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এভিয়েশন খাতে নিম্নমুখী চাহিদার মানে বৈশ্বিক চাহিদা এখনো কিছু ঘাটতিতে রয়েছে।