-
ব্রেক্সিট আর কত দূর? কেননা সম্প্রতি দেখা যায় ইইউ থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যেতে এবং সমঝোতায় পৌঁছাতে আরো বাড়তি সময় লাগতে পারে। ব্রাসেলসে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফার বৈঠক হলেও বড় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। তাই ধারনা করা হচ্ছে ব্রেক্সিট সম্পন্ন হবার জন্য আরো বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হওয়ার শঙ্কায় চাপ বাড়ছে প্রধানমন্ত্রি থেরেসা মের।
-
ব্রেক্সিট বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মুখ্য সমঝোতাকারী মিশেল বাহনিয়ে জানিয়েছেন, বহুল আলোচিত ব্রেক্সিট নিয়ে ২৭ সদস্যের ব্লকটির সঙ্গে কোনো চুক্তিতে পৌঁছেনি ব্রিটেন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের বিবৃতিতে বলা হয়, ঐকান্তিক আলোচনা চললেও কোনো চুক্তিতে পৌঁছা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাহনিয়ে। আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত ইস্যুর মতো বেশ কয়েকটি বিষয়ে এখনো উভয়পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। যদিও এর আগে ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ এ সপ্তাহে সতর্কসংকেত দিয়েছেন ইইউর মন্ত্রীরা। আগামী ২৯ মার্চ ইইউ থেকে ব্রিটেনের প্রস্থানের বিষয়ে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট ব্লকটির মন্ত্রীদের ব্রিফিং করার কথা ছিল ইইউর মুখ্য সমঝোতাকারীর।
-
ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা প্রায় শেষ সময়ের। যদিও ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এই দুই পক্ষকে যাবতীয় বিরোধ মিটাতে হবে। পৌঁছতে হবে সমঝোতায়। নয়তো কোন চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের পথে এগুতে হতে পারে ব্রিটেনকে। অবশ্য আজ বুধবার যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় টেরিজা মে খসড়া নথিটি নিয়ে তার ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে প্রত্যেক মন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক এর পর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তির খসড়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন।এই আলোচনার ফলে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার পর ডলারের বিপরীতে পাউন্ড ও ইউরো শক্তিশালী হয়ে উঠলেও এটি স্বল্পমেয়াদী হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা। কারণ নথিটির বিষয়ে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা ও পার্লামেন্টে অনুমোদন বাকি রয়ে গেছে।
-
সম্প্রতি থেরেসা মে সরকার ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যেতে ব্রেক্সিট সমঝোতা নিয়ে সংকটে পড়েছে। বিরোধীরা চুক্তি সংস্কারের পাশাপাশি থেরেসা মেকে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর আহবান জানিয়েছেন। যদিও হাতে সময় আছে মাত্র এক সপ্তাহ। এমন অবস্থায় চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট সম্পন্ন হলে যে খারাপ পরিস্থিতির শিকার হবে ব্রিটেন এর ব্যবসায়ীরা। তাই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র ও বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা।
-
অনেক টানাপোড়েনের পর ব্রাসেলসে রোববার ব্রেক্সিট চুক্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ সদস্য দেশের নেতারা। ফলে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ বা ব্রেক্সিটকে সময়ের ব্যপার মাত্র, যা ইতিমধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপিয় নেতারা। যদিও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়াটা খুব সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না এবং আশঙ্কা করা হচ্ছে চুক্তিটি পার্লামেন্টে ঘোর বিরোধিতার মুখে পড়বে যা মের জন্য থেরেসা মে। অন্যদিকে ইইউ সতর্ক করেছে যে, যদি পার্লামেন্টের ভোট অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে এই চুক্তিটি নিয়ে পুনরায় আলোচনার আর কোনো সুযোগ পাবেন না প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
-
ব্রেক্সিট চুক্তির কারণে প্রতিবছর যুক্তরাজ্যকে প্রায় ১৩ হাজার কোটি ডলার ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোস্যাল রিসার্চে'র গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে যে অর্থনৈতিক লোকসানের মধ্য দিয়ে যেতে হবে যুক্তরাজ্যকে। সংস্থাটি বলছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত ৪৬% শতাংশ ব্যবসা কমে আসবে এবং বিদেশী বিনিয়োগ কমবে ২১ শতাংশ। ফলে রাজস্ব আয় কমবে ১.৫ থেকে ২ ভাগ, যা ২৯০০ কোটি ডলার পর্যন্ত। তবে থেরেসা মে বলছে ‘‘কিছু পেতে হলে কিছু ছাড়তে হবে। ব্রেক্সিট চুক্তির ফলে একদিকে যেমন লোকসান হবে ঠিক তেমনি অন্য দিকে নতুন নতুন ব্যবসায়ের সুয়োগ তৈরী হবে।’’
-
ব্রেক্সিট নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটির অপেক্ষায় পুরো ব্রিটেন। আর এই ভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে দেশটির বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক কি হবে তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে। একইসাথে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থেরেসা মে'র ভাগ্যও নির্ভর করছে এই ভোটের ওপর। এমন অনিশ্চয়তায় শেষ মুহুর্তে ভোটাভুটি বাতিল করা হয়েছে
-
যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগে তিন মাসেরও কম সময় বাকি রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জোটটির কাছ থেকে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে আশ্বাস আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। তবে আগামী সপ্তাহে হাউজ অব কমন্সে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর অনুষ্ঠেয় ভোটে জয়লাভ করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মে। এদিকে ব্রেক্সিটের পর ইইউর ভর্তুকি প্রত্যাহারের আশঙ্কায় ব্রিটেনের কৃষিজমির দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে। এছাড়া ব্রেক্সিটের আগে আগে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের সম্পদ ব্রিটেন থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন আর্থিক কেন্দ্রগুলোয় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
-
ব্রেক্সিট হবার আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তি করা নিয়ে প্রচুর আপত্তি রয়েছে যেমন ঠিক তেমনভাবে চুক্তি ছাড়া বিচ্ছেদ কার্যকর হলে বাধবে মহা বিপত্তি। তাই যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের সর্বদলীয় এমপিদের একটি জোট কোন চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট ঠেকাতে উঠে পড়ে লেগেছে। গত মঙ্গলবার সরকারের আর্থিক বিলে (ফাইন্যান্স বিল) সংশোধনী চেয়ে সংসদে একটি প্রস্তাব পাস হয়। এর ফলে চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট কার্যকর করতে গেলে সরকার জনগণের ওপর করের বাড়তি বোঝা চাপাতে পারবে না। আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর সরকারকে নিরুৎসাহিত করতেই এই কৌশল। বিরোধী দল লেবার পার্টির আইনপ্রণেতা ইভেট কোপার এবং ক্ষমতাসীন দলের সাবেক মন্ত্রী নিকি মর্গান যৌথভাবে প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা এতে সমর্থন দেন। আর ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ২০ জন আইনপ্রণেতা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। মাত্র ৭ ভোটের ব্যবধানে (পক্ষে ৩০৩, বিপক্ষে ২৯৬) পাস হওয়া প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের জন্য বড় রকমের হার বলে বিবেচিত হচ্ছে।
-
যুক্তরাজ্যের ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট নিয়ে আজ মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ হবে। এ নিয়ে গোটা ব্রিটেনে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ডিসেম্বরে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও পরাজয়ের আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে এসে মে ভোটের তারিখ পিছিয়ে দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। তিনি সতর্ক করেছেন, পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদন ব্যর্থ হলে যুক্তরাজ্যে বিপর্যয় নেমে আসবে, তাই সব কিছু ভুলে দেশের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখনই সময়। কেননা আগামী ২৯ মার্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার শেষ সময়সীমা। বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বলেছেন, ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়া যুক্তরাজ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে। ব্রেক্সিট চুক্তির অনুমোদন পেতে আমার দল পূর্ণ সমর্থন দেবে।