কাঠামোগত দুর্বলতার ফাঁদে আটকা পড়েছে ব্যাংক
ঢাকার মতিঝিল-গুলশান আর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি-ডবলমুরিং থানাকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের ব্যাংক খাত। এ চারটি থানাভুক্ত এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকার ঋণ, যা দেশের মোট ব্যাংকঋণের ৫৭ শতাংশেরও বেশি। ধনীদের বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত এসব এলাকায় বিতরণকৃত ঋণ গিয়েছে মূলত বৃহৎ করপোরেট ও ট্রেড ফাইন্যান্সে। দশকের পর দশক ধরে গড়ে ওঠা এ কাঠামোকেই দেশের ব্যাংক খাতের বড় বিপদের কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ভাষ্যমতে, করোনাসৃষ্ট আর্থিক দুর্যোগ ও পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতি দেশের ব্যাংক খাতে প্রচুর পরিমাণে অলস তারল্য তৈরি করেছে, যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। সুদহার ৫-৬ শতাংশে নামিয়েও এখন বড় করপোরেটকে ঋণ দিতে পারছে না ব্যাংকগুলো। অন্যদিকে ঋণের খরা চলছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান এবং কুটির শিল্প (সিএসএমই) খাতে। কৃষি খাতের দশাও তথৈবচ। এ পরিস্থিতিতে খাত দুটিতে নতুন ঋণ দেয়া দূরের কথা, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজও বাস্তবায়ন করতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এজন্য দায়ী করা হচ্ছে ব্যাংকগুলোর কাঠামোগত সীমাবদ্ধতাকেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের ব্যাংক খাত বেড়ে উঠেছে বৃহৎ শিল্প ও ধনীদের ঋণ দেয়ার মানসিকতা নিয়ে। দেশের ব্যাংকগুলোর কাঠামোগত ভিতও তৈরি হয়েছে বড় ঋণকে কেন্দ্র করে। এ কারণে বড় ঋণের চাহিদা না থাকায় ব্যাংকগুলোর নতুন বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে সিএসএমই, কৃষি ও মধ্যবিত্তের ব্যক্তিগত ঋণের চাহিদা থাকলেও সেখানে যেতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এজন্য মূলত ব্যাংকিং প্রডাক্টে বৈচিত্র্যের অভাব ও ব্যাংকারদের মানসিকতাই সবচেয়ে বেশি দায়ী।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/481023068.jpg[/IMG]