1 Attachment(s)
বিশ্ব অর্থনীতির বারোটা বাজলেও শীর্ষ ধনীদের পোয়াবারো
[ATTACH=CONFIG]13251[/ATTACH]
বছরজুড়ে লকডাউন ও মানুষের নানা দুরবস্থার মধ্যেও শীর্ষ ধনীদের গায়ে আঁচড়টুকু লাগেনি। বরং তাঁরা আরও ফুলে–ফেঁপে উঠেছেন। তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির হার অবিশ্বাস্য। লকডাউনের শুরুতে অনেক দেশের শেয়ারবাজার মন্দার কবলে পড়লেও বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে অধিকাংশ শেয়ারবাজার চাঙা। ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্যমতে, ২০২০ সালে বিশ্বের ২ হাজার ২২০ জন শতকোটি কোটি টাকার মালিকের সম্পদ ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলার বেড়েছে। ১১ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, এ মুহূর্তে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদের পরিমাণ ১১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর যা ছিল ৯ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার।
মার্কিন ধনকুবেরদের জন্য এই বছরটা ছিল খুবই দারুণ। এবার তাদের সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ৫৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ মুহূর্তে তাদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক এখন সর্বকালের সর্বোচ্চ উচ্চতার কাছাকাছি। এ বছর সূচকটির প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ১৩ শতাংশ। আরেক সূচক নাসডাক বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।
তবে ২০২০ সাল সবচেয়ে পোয়াবারো ছিল টেলার ইলন মাস্কের জন্য। এ বছর তাঁর সম্পদ বেড়েছে ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন তাঁর সম্পদের পরিমাণ ১৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। টেসলা মোটরসের শেয়ারের দামের ওপর ভিত্তি করে তাঁর সম্পদ এতটা বেড়েছে। এ বছর টেসলা মোটরসের শেয়ারের দাম ৬৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁর সম্পদ এভাবে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
এতক্ষণ মার্কিন ধনকুবেরদের কথা বলা হলো, কিন্তু অর্থের পরিমাণের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চীনা ধনীদের সম্পদ। অথচ কোভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল চীনেই। তবে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এবার বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে যাদের প্রবৃদ্ধি হবে, তাদের মধ্যে চীন অন্যতম।
চীনের শীর্ষ ধনীদের গতিবিধি নজরে রাখে সিএসআই ৩০০ সূচক। সেই *সূচক এবার ১৯ শতাংশ বেড়েছে। চীনা ধনীদের সম্পদ এবার ৭৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে ৪০০ চীনা ধনীর সম্পদ এখন ২ ট্রিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে অবশ্য হংকংয়ের ৬৭ জন ধনীর সম্পদ যুক্ত করা হয়নি। এবার তাঁদের সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ ৬০ বিলিয়ন ডলার। হংকংয়ের ধনীদের সম্পদের পরিমাণ এখন ৩৮০ বিলিয়ন ডলার।
বড় বড় কয়েকটির আইপিওর কারণেও এবার চীনা ধনীদের সম্পদ অনেকটা বেড়েছে। বোতলজাত পানির কোম্পানি নোংফু স্প্রিং চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হংকং শেয়ারবাজরে তালিকাভুক্ত হয়। এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ঝং শানশানের সম্পদের পরিমাণ চলতি বছরে ছিল ২ বিলিয়ন ডলার। আইপিওর পর তাঁর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আলিবাবার অ্যান্ট ফাইন্যান্সিয়ালের আইপিও শেষমেশ না হলেও প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মার সম্পদ বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার।
তবে দুনিয়ার সব ধনকুবেরের সম্পদ বৃদ্ধি পায়নি। ব্রাজিলের শীর্ষ ধনীদের সম্পদ এ বছর ১৩ বিলিয়ন ডলার কমেছে। একই সঙ্গে ব্রাজিলের মুদ্রার মান কমেছে। এতে তাঁরা আরও বেশি গরিব হয়ে পড়েছেন। থাইল্যান্ডে এসইটি সূচক ৭ শতাংশ কমেছে। দেশটির শীর্ষ ৩০ ধনীর সম্পদ ৬০০ কোটি ডলার কমেছে।
নভেল করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে ধুঁকছে ভারতের অর্থনীতি। পরপর দুই ত্রৈমাসিকে জিডিপি সংকোচনের ফলে আপাতমন্দায় প্রবেশ করেছে ভারত। কিন্তু এমন দুঃসময়েও মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্স ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। লকডাউন চলাকালে একাধিক বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগ এসেছে তাদের কাছে। ঋণের বোঝাও লাঘব হয়েছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসের তুলনায় গত এক বছরে আম্বানি পরিবারের সম্পত্তির পরিমাণ এক লাফে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বেশি বেড়েছে। এখন তাঁর আম্বানি পরিবার এশিয়ার শীর্ষ ধনী।
যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবীতেই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। মূলত মহামারির মধ্যে মানুষ ঘরে বসে অনলাইনে প্রয়োজনীয় সব কাজ সারার চেষ্টা করেছে বলেই তাদের এমন পোয়াবারো হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। অথচ যুক্তরাষ্ট্রসহ সব বড় দেশের এবার অর্থনৈতিক সংকোচন হবে।