-
অর্থনৈতিক সংবাদ
টানা পঞ্চম মাসের মতো রফতানি প্রবৃদ্ধিতে জাপান
জুলাইয়ে জাপানের রফতানি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। টোকিওর কাছে ইয়োকোহামা বন্দরে রফতানির অপেক্ষায় থাকা গাড়ি ছবি: এপি
কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে জাপান। আমদানি-রফতানি থেকে শুরু করে অর্থনীতির প্রতিটি খাতে দেখা দেয় মন্দা। তবে চলতি বছরের শুরুর দিকে সেই বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। জুলাইয়ে দেশটির রফতানি টানা পঞ্চম মাসের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে জাপানের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এ তথ্য মহামারীর আঘাত থেকে বিশ্বজুড়ে জোরালো অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দেয়। জাপান সরকারের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাপানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা পঞ্চম মাসের মতো দেশের রফতানিতে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সময়ে ৬ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের পাশাপাশি চীনসহ এশীয় দেশগুলোতে চিপ ও চিপের সরঞ্জাম রফতানি অবদান রেখেছে।
এদিকে দ্বিতীয় মাসের মতো দেশটির আমদানিও বেড়েছে। জুলাইয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় আমদানি ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। ব্রাজিল, বেলজিয়াম ও কুয়েত থেকে দেশটির আমদানি বেড়েছে। আমদানি করা পণ্যগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে, খাদ্য, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও জ্বালানি তেল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত হলেও চীনের সঙ্গে ঘাটতির সৃষ্টি হয়েছে।
বণিক বার্তা
-
যুক্তরাজ্যে জুলাইয়ে খুচরা বিক্রি কমেছে
ব্রিটিশ খুচরা বিক্রি গত জুলাইয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে কমে গেছে। ইউরো কাপ ও কভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি ভোক্তাদের দোকান থেকে দূরে রেখেছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে খুচরা বিক্রি আগের মাসের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমে গিয়েছিল। গত জানুয়ারির পর এটি সবচেয়ে বড় পতন। রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদরা দশমিক ৪ শতাংশ কমার পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
বণিক বার্তা
-
গতি হারাচ্ছে এশিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার
কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে এশিয়ার অর্থনীতি। কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকোচনের মুখোমুখি হয় দেশগুলো। চলতি বছরের শুরু থেকে সেই বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এ অঞ্চলের উদীয়মান অর্থনীতিগুলো। তৈরি হয় শক্তিশালী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের রেকর্ডও। তবে কভিডের অত্যন্ত সংক্রামক ডেল্টা ধরনের ধাক্কা সেই পুনরুদ্ধারের গতিকে স্তিমিত করে দিয়েছে। পুনরায় খুচরা ব্যবসা ও কারখানা বন্ধ হয়ে শক্তিশালী প্রথমার্ধের পর ক্ষীণ হয়ে গেছে করপোরেট মুনাফা বৃদ্ধির সম্ভাবনাও।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দ্রুত বিস্তার ও স্বল্প টিকার হার এশিয়ার, বিশেষ করে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর পুনরুদ্ধারের পথে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। যেখানে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অর্থনীতিগুলো মহামারীকে পেছনে ফেলে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজির এশীয়-প্যাসিফিক অঞ্চলের গবেষণা বিভাগের প্রধান রব কর্নেল বলেন, এটা স্পষ্ট যে, এ অঞ্চলের অর্থনীতিগুলো আগের তুলনায় এখন কভিডে বেশি ভুগছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কারণ হলো কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা দেয়ার হারে স্বল্পতা।
২০২০ সালে তীব্র হ্রাসের সঙ্গে তুলনা করে এ অঞ্চলে করপোরেট ও অর্থনৈতিক সূচকগুলো শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের চিত্র ফুটে ওঠে। প্রান্তিক থেকে প্রান্তিকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে প্রবৃদ্ধিও হয়েছে। তবে এবার এ চিত্র পাল্টাতে চলেছে। রেফিনিটিভ ইকনের তথ্যের ভিত্তিতে রয়টার্সের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এশিয়ার বৃহৎ সংস্থাগুলোর মুনাফা কমতে পারে। কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলারের বাজার মূলধন থাকা ১ হাজার ৬৯টি সংস্থার মুনাফা কমতে পারে ৬ দশমিক ১৯ শতাংশ।
বণিক বার্তা
-
আগস্টে ইউরোজোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে উল্লম্ফন
আগস্টে ইউরোজোনের পিএমআই ৫৯ দশমিক ৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে ছবি: রয়টার্স
কভিড-১৯ মহামারীর বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। টিকাদান কার্যক্রমের হার বাড়িয়ে শিথিল করা হয়েছে কভিডজনিত বিধিনিষেধ। পুনরায় খোলার অনুমতি পেয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান। বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেয়েছে গ্রাহকরা। ফলে শক্তিশালী পুনরুদ্ধার দেখা দিয়েছে ইউরো জোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রমে। একটি জরিপে দেখা গেছে, আগস্টে ইউরো জোনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যদিও এ গতি জুলাইয়ের দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ গতির চেয়ে কম।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান সরবরাহ চেইন ব্যাহত না হলে ইউরো মুদ্রা ব্যবহার করা দেশগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরো সম্প্রসারিত হতে পারত। তবে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় আবারো বিধিনিষেধ আরোপের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বাণিজ্যিক কার্যক্রমের দিকনির্দেশক হিসেবে বিবেচিত আইএইচএস মার্কিটের ফ্ল্যাশ কম্পোজিট পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) গত মাসে ৬০ দশমিক ২ পয়েন্ট থেকে কমে আগস্টে ৫৯ দশমিক ৫ পয়েন্টে পৌঁছেছে। এ সূচক ৫০-এর উপরে থাকা প্রবৃদ্ধিকে নির্দেশ করে। চলতি মাসে পিএমআই রয়টার্সের জরিপের পূর্বাভাস ৫৯ দশমিক ৭ পয়েন্টকে ছাড়িয়ে গেছে।
ড্যানিশ ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থা আইএনজির বিশ্লেষক বার্ট কলিন বলেন, ইউরোজোনের অর্থনীতিতে পুরোদমে কার্যক্রম চলছে। কারণ কভিডজনিত বিধিনিষেধ শেষে পুনরায় খোলার পর প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যাশিত ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যদিও কভিডের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাব এবং যন্ত্রাংশের ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত পুনরুদ্ধার লাইনচ্যুত হয়নি।
বণিক বার্তা
-
দ্বিতীয় বছরের মতো উত্থান-পতনে এশিয়ার পর্যটন খাত
চীনের মহাপ্রাচীর থেকে মনোরম কাশ্মীর উপত্যকা। জনপ্রিয় এ গন্তব্যগুলো এখন দেশীয় দর্শনার্থীদের দিকে চেয়ে আছে। কভিডের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ দ্বিতীয় বছরের মতো গন্তব্যগুলোকে দর্শনার্থীশূন্য করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ব্যাপকভাবে সীমাবদ্ধ থাকায় বিদেশী পর্যটকরা অনেক দেশেই প্রবেশ করতে পারছেন না। অনেক দেশে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছেন না স্থানীয়রাও।
এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হংকং মহানগরীর ৭৪ লাখ নাগরিকের মধ্যে অনেক লোক বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাদ দিচ্ছে। পরিবর্তে তারা দেশের মধ্যেই গ্ল্যাম্পিংকে বেছে নিচ্ছে। জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন অনুসারে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়ে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আগমন ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৯৫ শতাংশ কম ছিল।
বছরের মাঝামাঝি থেকে অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের আগমনে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছিল এ অঞ্চলের পর্যটন খাত। যদিও কভিডের নতুন ধরন অভ্যন্তরীণ পর্যটনের পুনরুদ্ধারেও ঝুঁকি তৈরি করেছে। ভারতে কভিডের সম্ভাব্য তৃতীয় ঝড় দেশটির পর্যটনে জড়িতদের চিন্তিত করে তুলেছে।
ইমরান আলী। কাশ্মীরের ডাল লেকের ভাসমান বাড়িই (হাউজবোট) তার আয়ের একমাত্র উৎস। তিনি বলেন, আমরা পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ার আশা করছি। এজন্য আমরা চাই না নতুন করে কভিডের সংক্রমণে আবার পর্যটন খাত প্রভাবিত হোক।
বণিক বার্তা
-
মহামারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠছে এয়ার নিউজিল্যান্ড
২০২০ অর্থবছরে মোট ক্ষতির এক-তৃতীয়াংশ কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে উড়োজাহাজ সংস্থা এয়ার নিউজিল্যান্ড। দেশের অভ্যন্তরে বিমান চলাচলসহ কার্গো সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় করোনা মহামারীর এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। খবর জাপান টুডে।
দেশটির বৃহত্তম উড়োজাহাজ সংস্থাটি জানায়, গত ১২ মাসে প্রতিষ্ঠানটির গড় ক্ষতির পরিমাণ ২৮ কোটি ৯০ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার বা ২০ কোটি ২০ লাখ ডলার। বিগত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪৫ কোটি ৪০ লাখ নিউজিল্যান্ড ডলার।
সংস্থাটির কার্গো পরিবহন সেবার চাহিদা ৭১ শতাংশ বাড়ার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ খাতে উড়োজাহাজ চলাচলের পরিমাণ করোনা-পূর্ববর্তী ৯৩ শতাংশে উন্নীত হওয়ায় এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। তবে সীমান্ত বন্ধ থাকায় পরিচালন খাতে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আয় ৪৮ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ২৫০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারওম্যান থেরেশ ওয়ালশ বলেন, উড়োজাহাজ পরিবহন খাতে সংস্থাটির ক্ষতির পরিমাণ প্রতিষ্ঠানটির দুই-তৃতীয়াংশ যাত্রীর সেবা প্রদানে অপারগতার বিষয়টিকে নির্দেশ করছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারীতেও এয়ার নিউজিল্যান্ড তাদের সার্বিক ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। পাশাপাশি যেসব বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, সেসব খাতে ভালো সেবা প্রদানের চেষ্টা করেছে।
বণিক বার্তা
-
গ্রীষ্মেও গতি হারাচ্ছে বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ
নাটকীয়ভাবে কমে গেছে তাইওয়ানের রফতানি। গাড়ি ও মোবাইলে ব্যবহূত কম্পিউটার চিপ তৈরি করা দেশটিতে আবারো ছড়িয়ে পড়েছে কভিডের প্রাদুর্ভাব। অস্ট্রেলিয়া, চীন ও জাপানে সাময়িকভাবে বন্দর বন্ধ ও লকডাউন আরোপের প্রভাব পড়েছে বৈশ্বিক বাণিজ্য পুনরুদ্ধারে। ফলে গ্রীষ্মের সময়ও গতি হারাতে শুরু করেছে বৈশ্বিক বাণিজ্যপ্রবাহ। যদিও বছরের এ সময়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চাঙ্গা থাকে। পূর্ব এশিয়ার উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া কভিডের সংক্রমণ এমন নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববাণিজ্যে এমন মন্থরতা জ্বালানি তেল উত্তোলনেও প্রভাব ফেলেছে। ওপেকের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য দেশ জানিয়েছে, এ পরিস্থিতির কারণে জ্বালানি তেলের উৎপাদন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা বাতিল করতে হতে পারে।
কুয়েতের জ্বালানি তেলমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুলতিফ আল-ফারেস রয়টার্সকে বলেন, ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলো জ্বালানি তেলের উৎপাদন প্রতিদিন চার লাখ ব্যারেল বাড়াতে সম্মত হয়েছিল। তবে পূর্ব এশিয়ার দেশ ও চীনা অর্থনীতিতে কভিডের অতি সংক্রমণের ধরন ডেল্টার প্রভাব অব্যাহত থাকলে আমাদের তেল উত্তোলন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
লন্ডনভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লুয়েলেন কনসাল্টিংয়ের অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, তাইওয়ানের রফতানি ক্রয়াদেশ ২০২০ সালে বার্ষিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। যেখানে আগামী তিন মাসের পূর্বাভাসে এ প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। রফতানি ক্রয়াদেশের পতনের ফলে আগামী মাসে গাড়ি প্রস্তুতকারক ও অন্যান্য নির্মাতাদের উৎপাদনক্ষমতা সীমিত করে আনতে হতে পারে। এরই মধ্যে কিছু গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সতর্ক করেছে, কিছু মডেল কিনতে হলে গ্রাহকদের ছয় মাসেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে।
বণিক বার্তা
-
জার্মানিতে ভোক্তা মূল্যস্ফীতির হার ১৩ বছরের সর্বোচ্চে
জার্মানির বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। আগস্টে ত্বরিতগতিতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এ তথ্যে এমনটা দেখা যায়।
রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোক্তা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ চিত্র ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে কভিড সংকট কাটিয়ে পুনরুদ্ধারের অবস্থা এবং সরবরাহ ঘাটতি মোকাবেলায় কোম্পানিগুলোর সীমাবদ্ধতাকে স্পষ্ট করে তোলে।
জার্মানির ফেডারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের প্রাথমিক চিত্রে দেখা যায়, জুলাইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্যান্য দেশের মূল্যস্ফীতির তুলনায় আগস্টে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
জুলাইয়ে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
আগস্টে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির এ হার রয়টার্সের জরিপের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তা ২০০৮ সালের জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ পরিমাণ। এ মাসে দেশটিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এমনকি আগস্টে জার্মানির জাতীয় মূল্যস্ফীতির হার (সিপিআই) দাঁড়িয়েছিল ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে সর্বোচ্চ। সে সময় দুই জার্মানির মিলনের ফলে জার্মান অর্থনীতি চাঙ্গা হতে শুরু করেছিল।
কমার্জব্যাংকের বিশ্লেষক রালফ সলভেন বলেন, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে এ মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। এ সময়ে মূল মূল্যস্ফীতি সম্ভবত ২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
জার্মান প্রাথমিক ভোক্তা মূল্যের পরিসংখ্যান সাধারণত তাদের মূল মূল্যস্ফীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।
ল্যান্ডেজব্যাংক বাডেন ওয়াটেমবেগের (এবিবিডব্লিউ) অর্থনীতিবিদ এলমান ভয়েলকার বলেন, সামনের মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতির হার আরো বাড়তে পারে। ২০২০ সালের মধ্যবর্তী সময়ে বিশেষ কারণে ও ভিত্তি প্রভাবের কারণে সাময়িকভাবে ভ্যাটের হার হ্রাসের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি জানান, এটি তুলনাকে প্রভাবিত করতে পারে।
বণিক বার্তা
-
চিপ সংকটে জাপানের শিল্পোৎপাদনে ধীরগতি
জুলাইয়ে শিল্প উৎপাদন আগের মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে ছবি: রয়টার্স
ধীরগতিতে হলেও জাপানের শিল্পোৎপাদন কমতে শুরু করেছে। জুলাইয়ে আগের মাসের চেয়ে উৎপাদনের হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। বিশ্বজুড়ে চলা চিপ সংকট এবং এশিয়াজুড়ে কভিড-১৯ সংক্রমণ পুনরুত্থান বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির শিল্প খাতকে ধীর করে দিয়েছে। সম্প্রতি দেশটির সরকারি এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স।
দেশটির অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাপানের গাড়ি শিল্পে জুনের চেয়ে জুলাইয়ে উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ১ শতাংশ। পাশাপাশি ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি এবং তথ্য ও যোগাযোগ খাতের বৈদ্যুতিক সামগ্রীর উৎপাদনও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ও এয়ার কন্ডিশনারের দুর্বল উৎপাদনের কারণে এ খাতে উৎপাদন কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটার কারণে এ খাতের উৎপাদন বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় মহামারীসংক্রান্ত বিধিনিষেধ থাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। অনেক দেশের সরকারই নতুন করে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে, যার প্রভাব পড়ে সরবরাহ চেইনে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে চিপসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানির পরিমাণ কমে যায়। ফলে এর সরাসরি প্রভাব পড়ে গাড়ি উৎপাদনের ওপর।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, চিপস্বল্পতার কারণে অটোমোবাইল ও এয়ার কন্ডিশনার শিল্প ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো, উৎপাদন শিল্পের যন্ত্রপাতি তৈরির খাতটিতে উৎপাদন বেড়েছে। এজন্য সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক চাহিদা অবদান রেখেছে বলে জানান তিনি।
বণিক বার্তা
-
বেসরকারি খাতে সমর্থন অব্যাহত রাখবে চীন!
বেসরকারি খাতকে সমর্থনকারী নীতিতে পরিবর্তন আনা হবে না বলে জানিয়েছেন চীনের ভাইস প্রিমিয়ার লিউ হি। গতকাল রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে এ ঘোষণা দেন তিনি। বিস্তৃত শিল্পের বিরুদ্ধে চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে এমন ঘোষণা দেয়া হলো। খবর রয়টার্স।
চীনের উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে একটি ফোরামে লিউ বলেন, বেসরকারি খাতকে সমর্থন করার জন্য চীনের নীতি পরিবর্তন হয়নি এবং ভবিষ্যতেও পরিবর্তন হবে না।
চীন বিভিন্ন শিল্পের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। ফলে স্টার্টআপ ও কয়েক দশকের পুরনো সংস্থাগুলো অনিশ্চিত পরিবেশের মধ্যে রয়েছে। উদ্বেগের মধ্যে আছেন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বিনিয়োগকারীরা।
লিউ বলেন, বেসরকারি খাতগুলো চীনের রাজস্ব আয়ে ৫০ শতাংশ, জিডিপিতে ৬০ শতাংশ ও শহুরে কর্মসংস্থানে ৮০ শতাংশ অবদান রাখে। অর্থনৈতিক উত্থান ও কমিউনিস্ট পার্টির শাসনের বৈধতাকে হুমকির মুখে ফেলা চীনের সম্পদের ব্যবধান ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে। এজন্য সম্পদের ব্যবধান কমিয়ে আনতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘সাধারণ সমৃদ্ধি’ অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে রাজনীতিবিদদের মধ্যে প্রকাশ্য মতবিরোধের ফলে জিনপিংয়ের নীতি পরিবর্তনের প্রভাবগুলো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণমূলক এ পদক্ষেপকে ‘বিপ্লব’ আখ্যা দিয়েছিলেন পিপলস ডেইলি প্রকাশিত টেবলয়েড গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু জায়জিন। তার এ মতামত রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়েছিল। সেখানে জায়জিন বলেন, সংস্কারগুলো নিয়ন্ত্রণকে শক্তিশালী ও সামাজিক শাসন ব্যবস্থাকে উন্নত করবে।
বণিক বার্তা