1 Attachment(s)
মার্সিডিজের মিড-সাইজড এসইউভি -> জিএলই ৪৫০!!
মার্সিডিজ-বেঞ্জ জিএলই হচ্ছে মার্সিডিজ-বেঞ্জের মিড-ক্লাস অর্থাৎ ই-ক্লাসের এসইউভি ভ্যারিয়েন্ট। গাড়িটি মিড-সাইজড এসইউভি, অর্থাৎ টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডোর একই সেগমেন্টের গাড়ি এটি। একই সেগমেন্টের মধ্যে প্রাডোর থেকে সাইজে জিএলই বড়। গাড়িটি দেখতে বেশ সুন্দর, হেডলাইটে ২টি ডে-টাইম লাইট আছে কারণ ই-ক্লাস চেনার উপায় হচ্ছে হেডলাইটের মধ্যে ২টি ডিআরএল। সামনে গ্রিলের উপর ২টি ক্রোম বার দিয়ে ডেকোরেশন করা, যার মাঝখানে বড় করে মার্সিডিজ-বেঞ্জের লোগো দেওয়া। গাড়িটি দেখতে একটি স্লিম, প্রাডোর মতো একদম ইয়া বিশাল না। বড় ২০ ইঞ্চি সাইজের চাকাগুলোতে ৫টি স্পোক, এবং হাইয়ার ট্রিমে ২১” রিমস আছে। সাইড প্রোফাইলের একমাত্র খুঁত হচ্ছে এ-পিলারে লাগানো লুকিং গ্লাস, যেখানে এরকম টাইপের গাড়িতে হাই-এন্ড অ্যাটেনশন টু ডিটেইল হিসেবে সামনের ২ দরজায় লাগানো লুকিং গ্লাস লাগানো উচিত ছিলো। পিছনে চিকন একজোড়া টেইললাইট আছে, যেগুলোর ডিজাইন বেশ সুন্দর। মার্সিডিজের আগের মিড-সাইজড এসইউভি এমএল-এর রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে জিএলই আসার কারণে টেইললাইট দেখতে এমএল-ক্লাসের মতোই।
মার্সিডিজ-বেঞ্জ জিএলই-এর সাইজের ব্যাপারে তো আগেই বলেছি। এখন আসি সাস্পেনশনে। এই গাড়িটির হাই ট্রিমে আছে ই-অ্যাক্টিভ বডি কন্ট্রোল নামের একটি এয়ার-কন্ট্রোল্ড সাস্পেনশন সিস্টেম। এই সাস্পেনশনের কারণে প্রত্যেকটি চাকা স্বাধীনভাবে মুভ করতে পারে, আর এটা কাজ করে বিখ্যাত বোস সাস্পেনশনের মতো যেটাতে ভিতরে একটা ফোঁটাও ঝাঁকি গাড়ির ভিতরে অনুভূত হয় না। এটি দিয়ে গাড়ি যেমন নিচু করে সিটি ক্রুজ করে তেল বাঁচানো যায় অ্যারোডাইনামিক ড্র্যাগ কমিয়ে, আবার এক্সট্রিম অফ-রোডিংয়ের সময়ে গাড়ি অনেক উঁচু করে নেওয়া যাবে। এই গাড়িটির আরেকটি মজার দিক হচ্ছে, বালুতে আটকে গেলে এই গাড়িতে আছে ফ্রি ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট মোড, যেটি দিলে গাড়ি বাউন্স করা শুরু করে এয়ার সাস্পেনশনের মাধ্যমে। লাফিয়ে লাফিয়ে গেলে গাড়ি সহজে কাঁদা বা বালু থেকে উঠে আসতে পারবে। আর এই এয়ার সাস্পেনশনের কারণে গাড়ি একদিকে বাঁক নিলে অন্যদিকের এয়ার সাস্পেনশন ফুলে গাড়ি সমান রাখে, একফোঁটাও বডিরোল থাকে না।
জিএলই ৪৫০ গাড়িটিতে আছে ৭টি আরামদায়ক সিট যেগুলো প্রিমিয়াম গ্রেডের নাপা লেদারে মোড়া। সামনের ২টি সারিতে লম্বা যাত্রীরা আরামসে বসতে পারবে, শেষের সারিতে একটু মোটামুটি লম্বা যাত্রীরা বসতে পারবে। সিটগুলো সব লেদারে মোড়া। ৪-জোন ক্লাইমেট কন্ট্রোল আছে ৪টি আলাদা তাপমাত্রা প্রথম ২ সারিতে ভোগ করার জন্য। ৪টা দরজাতেই সিট পজিশনের সিস্টেম আছে প্রথম ২ সারির সিট সামনে-পিছনে ও হেলানো-খাড়ানোর জন্য। আরেকটি মজার ফিচার হচ্ছে, একটা মাইক আছে সব সারিতে, যেন সবার কথা সবাই স্পষ্টভাবে শুনতে পায় গাড়ির মধ্যে। অ্যাম্বিয়েন্ট লাইটিং তো বলাই বাহুল্য যে আছে। বার্মেস্টার সাউন্ড সিস্টেম আছে অসাধারণ সাউন্ড কোয়ালিটির জন্য। প্যানোরামিক সানরুফও বলাই বাহুল্য যে আছে।
মার্সিডিজ-বেঞ্জ জিএলই ৪৫০-তে আছে একটি ৩০০০ সিসির টার্বোচার্জড ইনলাইন-৬ ইঞ্জিন ও সাথে ই.কিউ বুস্ট মাইল্ড হাইব্রিড সিস্টেম, যার শক্তি হচ্ছে ৩৬২ হর্সপাওয়ার ও ৫০০ নিউটন-মিটার টর্ক!!! ২০০০ থেকে ৩০০০ সিসির ট্যাক্স একই, কিন্তু মাইল্ড হাইব্রিড হওয়ার কারণে ট্যাক্সেশন হয়েছে অনেক কম, ১৫০০ সিসি নন-হাইব্রিড গাড়ির চেয়ে অল্প কয়েক পার্সেন্ট বেশি। এই কারণে এই গাড়িটির একটা জার্মান লাক্সারি মিড-সাইজড এসইউভি ও এতো পাওয়ারফুল হওয়ার পরেও গাড়িটির ব্র্যান্ড নিউ দাম একটা ব্র্যান্ড নিউ প্রাডোর চেয়েও কম -> ১.৬ কোটি টাকা। যাইহোক, এই শক্তি নিয়ে গাড়িটা এতো বড় এসইউভি হওয়ার পরেও মাত্র ৫.৭ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিমি/ঘন্টা উঠাতে পারে, ও টপস্পিড উঠাতে পারে ২৫০ কিমি/ঘন্টা।
[ATTACH]14531[/ATTACH]