মারকিনে যদি এমন কোন ভাইরাস ধরা পড়তো তাহলে আমার জন্য খুব ভাল হতো।আমার সব ডলার কেন রইছে।ডলার প্রতিনিয়ত যে পরিমান উধগতিতে রয়েছে তাতে আমার খুব লস হয়ে যাচ্চে।তাই আমি আশাবাদি যে চিনের মত মারকিনেও কোন ভাইরাস বা ব্যাপক ক্ষতি হোক।
Printable View
মারকিনে যদি এমন কোন ভাইরাস ধরা পড়তো তাহলে আমার জন্য খুব ভাল হতো।আমার সব ডলার কেন রইছে।ডলার প্রতিনিয়ত যে পরিমান উধগতিতে রয়েছে তাতে আমার খুব লস হয়ে যাচ্চে।তাই আমি আশাবাদি যে চিনের মত মারকিনেও কোন ভাইরাস বা ব্যাপক ক্ষতি হোক।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বব্যাপী ২৪টিরও বেশি প্রদর্শনী ও সম্মেলন স্থগিত হয়েছে। এতে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের শিল্পে বড় আকারের ধাক্কা লেগেছে। এছাড়াও এবার করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে বিশ্বের নামকরা মোবাইল ব্র্যান্ড স্যামসাংয়ে। ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রতিষ্ঠানটির মোবাইল কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
[attach=config]10165[/attach]
বিশ্বে চায়নার অর্থনীতি হলো দ্বিতীয় বৃহত্তম, তারা বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য নিজেরাই নিজেদেরকে প্রায় আবদ্ধ করে ফেলেছে। দোকান বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে নাইকি, অ্যাডিডাস, এপেলের মত বড় কোম্পানিরা ইতোমধ্যে জানিয়েছে তাদের বিক্রিতে ভাটা পরেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে চীনা প্যাসেঞ্জার কার অ্যাসোসিয়েশন (cpca) রিপোর্ট করেছে তাদের দেশের প্যাসেঞ্জার কার বিক্রির বাৎসরিক হার ৯২% কমে গিয়েছে। ২০০৩ সালের সার্স ভাইরাসের সময় চীনের বাৎসরিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১১.১% কমে গিয়েছিল, যার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পরেছিল। সেবার প্রায় ৭৭৪ জন মারা গিয়েছিল আর প্রায় ৮ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল কিন্তু করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৫০০ জন মারা গিয়েছে আর আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৭৮,৭৭০ জন। পরিসংখ্যান দেখে বুঝতেই পারছেন করোনা ভাইরাসের অবস্থা আগের সার্স ভাইরাস থেকে অনেক ভয়াবহ এবং এটার ক্ষয়ক্ষতি আগের থেকে বেশিই হবে।অক্সফোর্ডের অর্থনীতিবিদের হিসাবে এই বছর ১ ট্রিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের উৎপাদন কম হবে এবং ১.৩% বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধি কমে যাবে যদি করোনা ভাইরাস প্যানড্যামিক হয়ে যায়।
[ATTACH=CONFIG]10222[/ATTACH]
‘মেড ইন চায়না’ সস্তা শ্রম ও অল্প পরিসরে বৃহৎ উৎপাদনের জন্য বেশ পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে অর্থনৈতিকভাবে চীন ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতেও পড়তে শুরু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের বর্তমান এ পরিস্থিতির ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এদিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া সত্ত্বেও চীন প্রায় ৩০০ মিলিয়ন অভিবাসী কর্মীকে চাকরিতে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করছে। ‘দ্য স্লিপিং জায়ান্ট: পোস্টারস অ্যান্ড দ্য চাইনিজ ইকোনমি’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে ১৯২০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০০০ দশকের গোড়ার দিকের প্রায় ৫০টিরও বেশি পোস্টার প্রদর্শিত হচ্ছে। এ পোস্টারগুলোতে পণ্য থেকে শুরু করে রাজনৈতিক প্রচার—সব কিছুই উঠে এসেছে। প্রদর্শনীটির মধ্য দিয়ে চীনা অর্থনীতির ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকানোর এটাই উপযুক্ত সময় বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
করোনা ভাইরাসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিতে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, এখন পর্যন্ত শেয়ার মার্কেট তিন ট্রিলিয়ন ডলার ক্রাস করেছে। এর কারন হিসাবে সোশাল মিডিয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। কেননা দুর বলতে এখন আর কিছুই নেই, প্রতি সেকেণ্ডেই দুঃসংবাদ ছড়াচ্ছে আর একটা ভাইরাসে একজন মানুষের মৃত্যু সংবাদ এখন মুহুর্তেই বিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। সুতরাং মানুষতো আতংকিত হয়ে চায়নার উহানের দূর্ঘটনাকে মনে হবে আপনার পাশের বেডরুমেই ঘটছে বলে মনে করছে। হাজার হাজার গ্রুপে, হাজার হাজার পেজে একই সংবাদ ছড়াচ্ছে। বিশেষ করে সংবাদ যদি হয় দুঃসংবাদ। আর এই বিশাল মিডিয়া পাওয়ারই দুনিয়াব্যাপি মানুষকে আতংকিত করেছে এবং গ্লোবাল ইকোনিমিতে ধ্বস নামিয়েছে।
নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুরো বিশ্ব। এরই মধ্যে ১০৯টি দেশে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসের ধাক্কা লেগেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। প্রতি মুহূর্তে মূল্য হারাচ্ছে বৈশ্বিক পুঁজি ও পণ্যবাজার। মন্দা থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে রাজস্ব ও মুদ্রানীতি এবং আর্থিক প্রণোদনা নিয়ে এগিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। করোনায় ভুতুড়ে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পুরো ইতালিতে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েতসহ সৌদি আরবে জেঁকে বসেছে করোনা আতঙ্ক।
করোনার কাঁপুনি অব্যাহত শেয়ারবাজারে। সোমবার বাজার খুলতেই BSE Sensex ২,০১৫ পয়েন্ট অর্থাত্ ৫.৯১% পড়ে যায়। সূচক গিয়ে পৌঁছয় ৩২,০৮৯-এ। NSE Nifty-র সূচক ৫৪৯ পয়েন্ট অর্থাত্ ৫.৫২% পড়ে পৌঁছে যায় ৯,৪০৬-এ। করোনার ত্রাসে গত কয়েকদিন ধরেই বিপুল ধস নামে শেয়ারবাজারে। বৃহস্পতিবার এক দিনে সেনসেক্স পড়ে ২,৯১৯ পয়েন্ট। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত সংস্থাগুলির মধ্যে ১,১৮০টির শেয়ারদর গত এক বছরের সর্বনিম্ন মাত্রা ছুঁয়েছে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ সূচক নিফটিও ৮৬৮ পয়েন্ট কমে ৯,৫৯০ পয়েন্ট হয়ে যায়। এক দিনে নিফটির পতন ৮.৩০ শতাংশ যা গত এক যুগে সর্বোচ্চ। বৃহস্পতিবার দালাল স্ট্রিটে যা রক্তক্ষরণ ঘটেছে, তা নজিরবিহীন। এক দিনে লগ্নিকারীদের প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা উবে গিয়েছে!
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ফিলিপাইন প্রথম দেশ হিসেবে তার শেয়ারবাজার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছে। এর মধ্যে দেশটি মুদ্রাবাজার ও বন্ড বাণিজ্যও বন্ধ রেখেছে। দেশটির সব আর্থিক বাজার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফিলিপাইন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান র্যামন মনজুন বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শেয়ারবাজার বন্ধ থাকবে। এ সিদ্ধান্ত ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার হাত থেকে কর্মচারী ও ট্রেডার্সদের রক্ষা করবে। এছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় তিনটি গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি।
বিশ্ব অর্থনীতিতে রীতিমতো তাণ্ডবলীলা চালাচ্ছে কভিড-১৯। অভূতপূর্ব এক দুর্যোগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক শিল্পোৎপাদন খাত। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোসহ বৈশ্বিক অর্থনীতির রথী-মহারথী সব দেশেরই উৎপাদন খাত এখন পুরোপুরি ধরাশায়ী। ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে পুঁজি, মুদ্রা ও পণ্যবাজার। অর্থনৈতিক এ মহাদুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি থেকে নিজ নিজ দেশের আর্থিক খাত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সর্বোপরি নিজ জনগণকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে নেয়া হয়েছে প্রণোদনামূলক নানা পদক্ষেপ। ৮০টিরও বেশি দেশ এরই মধ্যে আংশিক বা পূর্ণভাবে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। লকডাউনে রয়েছে এর অধিকাংশই। পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত চালু থাকলেও বিদেশীদের ঢুকতে দিতে চাচ্ছে না কেউই। বৈশ্বিক পর্যটন, শিল্পোৎপাদন, সেবা ও আর্থিক খাতকে পুরোপুরি তলানিতে এনে ফেলেছে নভেল করোনাভাইরাস। ধস নেমেছে জ্বালানি তেলের বাজারেও। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক দুই বাজার আদর্শ ডব্লিউটিও এবং ব্রেন্টের দাম নেমে এসেছে কয়েক বছরের সর্বনিম্নে, ব্যারেলপ্রতি যথাক্রমে ২৭ ও ২৫ ডলারে। একই দশা মুদ্রাবাজারেরও।