-
চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য ৯ গুণ বেড়েছে
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) চীনের যোগ দেয়ার ২০ বছর পূর্তি হলো। এ সময়ে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য নয় গুণ বেড়েছে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি হওয়ার দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কঠিন লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছে এশিয়ার অর্থনৈতিক জায়ান্টটি। তবে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত উদ্যোগগুলোয় প্রত্যাশিত সংস্কার কার্যকর এবং দেশের বিভিন্ন অংশে সমতাপূর্ণ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এখনো হিমশিম খাচ্ছে চীন। খবর নিক্কেই এশিয়া।
২০০১ সালের ডিসেম্বরে ডব্লিউটিওতে যোগ দেয় চীন। সস্তা শ্রমের ওপর দাঁড়িয়ে অল্প সময়ের ব্যবধানেই বিশ্বের কারখানায় রূপান্তরিত হওয়া দেশটির রফতানি বাড়তে থাকে। শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে আমদানিও বাড়াতে থাকে চীন।
জাতিসংঘ বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলনের (আঙ্কটাড) বরাতে জানা গেছে, ২০০১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে চীনের রফতানি ও আমদানি বেড়েছে যথাক্রমে ৮৭০ ও ৭৪০ শতাংশ। বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়েছে ৮১০ শতাংশ, যেখানে পুরো বিশ্বের বৈদেশিক বাণিজ্য বেড়েছে ১৮০ শতাংশ।
দেশীয় কোম্পানিগুলোকে ভর্তুকি ও বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ শুরু থেকেই চীনের পিছু ছাড়ছে না। এতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১১ জাতিরাষ্ট্রের সিপিটিপিপিতে যোগ দিয়ে বৈশ্বিক বাণিজ্যে আরো শক্তিশালী অবস্থানের উচ্চাভিলাষ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সাংহাইয়ে আয়োজিত চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপোতে বাণিজ্য উদারীকরণে দেশটির বিশাল অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিনি বলেন, ডব্লিউটিওতে যোগ দিয়ে যে অঙ্গীকার করেছিল তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেছে চীন। বৈদেশিক পণ্য আমদানিতে শুল্ক ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ করা হয়েছে। ডব্লিউটিওতে যোগদানের সময় যেখানে শুল্ক ৯ দশমিক ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার শর্ত ছিল।
বণিক বার্তা
-
ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় বাড়ছে চীনের স্বর্ণ উত্তোলন
চীন বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ উত্তোলক দেশ। মূল্যবান ধাতুটি ব্যবহারের দিক থেকেও নেতৃস্থানীয় দেশটি। গত বছর বিভিন্ন রকম প্রতিবন্ধকতার কারণে দেশটির স্বর্ণ উত্তোলন ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছর পরিস্থিতি ইতিবাচকতায় মোড় নিয়েছে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় উত্তোলন ৪ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় তথ্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ডেটা।
সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লোবাল ডেটার প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত বছর চীনে স্বর্ণ উত্তোলনের উৎস কমে যায়। স্বর্ণ ও অন্য খনিজসম্পদ উত্তোলনের ক্ষেত্রে পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় ক্ষুদ্র ও কম উত্তোলন সক্ষমতার খনিগুলো। মূলত এসব কারণেই ওই বছর উত্তোলন কমে গিয়েছিল। তবে চলতি বছর থেকে উত্তোলন বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
গ্লোবাল ডেটা বলছে, ২০২১-২৫ সালের মধ্যে চীনে স্বর্ণ উত্তোলনের চক্রবৃদ্ধি প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ১ দশমিক ১ শতাংশ। চীন বেশ কয়েকটি স্বর্ণ উত্তোলন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যেই এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা। এসব প্রকল্পই ভবিষ্যতে চীনকে স্বর্ণ উত্তোলনে সবচেয়ে বড় সুবিধা দেবে।
বণিক বার্তা
-
চীনের আমদানিতে উল্লম্ফন রফতানি প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি
নভেম্বর মাসে চীনের রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশ। নিংবো জোশান বন্দর ছবি: রয়টার্স
চীনের রফতানি প্রবৃদ্ধি আবারো গতি হারিয়েছে। শক্তিশালী ইউয়ানের চাপ, দুর্বল চাহিদা ও উচ্চ ব্যয় নভেম্বরে দেশটির রফতানি প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিয়েছে। যদিও গত মাসে দেশটির আমদানি অপ্রত্যাশিতভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উচ্চ চাহিদা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির আমদানি উল্লম্ফনে সহায়তা করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর রয়টার্স।
গতকাল প্রকাশিত কাস্টমস ডাটা অনুসারে, নভেম্বরে চীনের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ বেড়েছে। আগের মাসে ২৭ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি ধীর। যদিও এ প্রবৃদ্ধি রয়টার্সের জরিপে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশিত ১৯ শতাংশকে ছাড়িয়ে গেছে।
গত মাসে দেশটির আমদানি ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এমনকি এ হার অক্টোবরে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশকেও ছাড়িয়ে গেছে। অর্থনীতিবিদরা ২০ দশমিক ৬ শতাংশ আমদানি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভে থাকা নগদ অর্থ কমানোর ঘোষণা দেয়ার একদিন পর বাণিজ্যের এ তথ্য প্রকাশিত হলো। মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলতে চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো এ পদক্ষেপ নিয়েছে বেইজিং। কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে চীনা অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতির লক্ষণ রয়েছে। বিদ্যুতের ঘাটতি, প্রধান শিল্পের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও আবাসন খাতে ঋণের সমস্যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় বিশ্লেষকরা আগামী মাসে আরো সহায়ক নীতি পদক্ষেপের আশা করছেন।
বণিক বার্তা
-
ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে জাপানে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ
জাপানে বেসরকারি খাতের যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে। অক্টোবরে এ ক্রয়াদেশের পরিমাণ আগের মাসের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত বছরের ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। গতকাল প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
কিয়োদো নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্পোৎপাদন খাতের বাইরের ক্রয়াদেশ বাড়ার কারণে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ বেড়েছে। মন্ত্রিপরিষদ অফিস অনুসারে, বাজার অস্থিরতার কারণে এ ক্রয়াদেশের হিসাবে জাহাজ ও বিদ্যুৎ খাতকে বাদ দেয়া হয়েছে। অক্টোবরে যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশের পরিমাণ মোট ৮৭ হাজার কোটি ইয়েনে (৭৭০ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটির ক্রয়াদেশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
প্রতিবেদনে মন্ত্রিপরিষদ অফিস একটি মূল্যায়নে জানায়, করপোরেট মুনাফা বাড়ার একটি প্রধান সূচক হিসেবে চিহ্নিত যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশে কয়েক মাসের নিম্নমুখী প্রবণতার পর অক্টোবরে পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা গেছে।
দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি দেখলেও যন্ত্রাংশের ক্রয়াদেশ গড়ে তিন মাসে মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। এজন্য পুনরুদ্ধার বলতে গেলে আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে এবং আগামী কয়েক মাস দেখতে হবে।
বণিক বার্তা
-
জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদায় পুনরুদ্ধার
চলতি বছর শক্তিশালী পুনরুদ্ধার দেখেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বৈশ্বিক চাহিদা। তবে পুরোপুরি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এভিয়েশন খাতে কেরোসিনের নিম্নমুখী চাহিদা। শীর্ষস্থানীয় তথ্য সেবাদাতা ও বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ডাটা সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের বাজার নিয়ে গ্লোবাল ডাটার করা বিশ্লেষণ বলছে, কেরোসিন বাদে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা সম্পূর্ণভাবে মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে এসেছে। চলতি বছরজুড়ে কেরোসিনের চাহিদা মহামারীপূর্ব পর্যায়ের তুলনায় দুই-তৃতীয়াংশ নিচে অবস্থান করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেরোসিন প্রধানত জেট জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ খাতে নতুন করে বাধার সৃষ্টি করলে জেট জ্বালানির চাহিদা আবারো দুর্বল হয়ে পড়ে।
গ্লোবাল ডাটার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে কেরোসিনসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা ছিল মহামারীপূর্ব অবস্থার মাত্র ৩ শতাংশ নিচে। আকাশপথে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা কেটে গেলে সব ধরনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্যের চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরবে।
গ্লোবাল ডাটার ম্যানেজিং এনার্জি এনালিস্ট উইল স্কারগিল বলেন, বৈশ্বিক চাহিদা পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে চীন। দেশটির পরিবহন খাতে গ্যাসোলিনের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা বিশ্ববাজারে প্রভাবকের কাজ করেছে। এছাড়া পেট্রোকেমিক্যাল খাতে লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে নাপথা ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) চাহিদা।
অন্যান্য বড় অর্থনীতিগুলোয় চাহিদা এখনো পুরোপুরি মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরতে পারেনি। তবে চীনে এসব পণ্যের চাহিদায় শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি শূন্যস্থান পূরণে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এভিয়েশন খাতে নিম্নমুখী চাহিদার মানে বৈশ্বিক চাহিদা এখনো কিছু ঘাটতিতে রয়েছে।