বৈশ্বিক সূচকে চীনের অন্তর্ভুক্তি : উদীয়মান বাজারের জন্য উদ্বেগের: আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বিভিন্ন বৈশ্বিক সূচকে চীনা শেয়ার ও বন্ডের অন্তর্ভুক্তি বিশ্বের অন্যান্য উদীয়মান বাজারের শেয়ার ও স্থায়ী আয়-সম্পদের জন্য ভালো খবর না-ও হতে পারে। কেননা এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতিটির অন্তর্ভুক্তিতে নিজেদের উপস্থিতির প্রকাশ ঘটাতে বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওতে পরিবর্তন আনতে পারে। খবর দ্য ন্যাশনাল।

বৈশ্বিক সূচকগুলোয় চীনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এক বিশ্লেষণে আইএমএফ জানিয়েছে, এরই মধ্যে চীনা বন্ড অন্তর্ভুক্ত করতে বেঞ্চমার্ক-তাড়িত বিনিয়োগকারীরা নিজেদের পোর্টফোলিও সমন্বয় করছে। এর ফলে উদীয়মান বাজারগুলোর সরকারি বন্ড ইস্যুকারীরা প্রত্যেকে গড়ে ১০০ কোটি ডলার থেকে ৩০০ কোটি ডলার পর্যন্ত বরাদ্দ হ্রাসের মুখে পড়তে পারে।

আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি জানিয়েছে, চীনা অন্তর্ভুক্তির কারণে পোর্টফোলিও সমন্বিত করার জন্য বিনিয়োগকারীরা অন্য উদীয়মান বাজারগুলো থেকে বন্ড কেনা কমিয়ে দিতে পারে। বেশকিছু দেশের ক্ষেত্রে এর প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশ বড় হতে পারে, বিশেষ করে তাদের ক্ষেত্রে, যাদের বেঞ্চমার্ক-তাড়িত হোল্ডিংগুলো উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিদেশী ঋণ নিয়ে গঠিত।

বেশ কয়েক বছরের জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে বিশ্বের প্রধান প্রধান বন্ড সূচকগুলো চীনা বন্ডকে অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করেছে। যার ফলে বহু বিনিয়োগকারী, যাদের অনেকেরই প্রথমবার বিশ্বের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক পরাশক্তির প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

কেবল গত পাঁচ বছরেই চীনা সরকারি বন্ডের বিদেশী মালিকানা চার গুণ বেড়ে প্রায় ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া অনশোর ইকুইটির মালিকানাও বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে অন্যান্য উদীয়মান বাজারের তুলনায় তা বেশ নিচেই রয়েছে। বিদেশী মালিকানা বৃদ্ধির এ প্রবণতা ভবিষ্যতে আরো ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আইএমএফ জানিয়েছে।

বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ব্লুমবার্গ বার্কলেস সূচকের সম্পদের পরিমাণ মোট ২ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে। এদিকে ২০২০ সাল নাগাদ চীনে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কোটি ডলার প্রবেশ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ব্লুমবার্গ বার্কলেস গ্লোবাল এগ্রিগেটেড ইনডেক্স ২০ মাসের বেশি মেয়াদি চীনা সরকারি বন্ড ও পলিসি ব্যাংক বন্ড অন্তর্ভুক্ত করা শুরু করে।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ বন্ডবাজার চীন। বৈশ্বিক সূচকগুলোয় অন্তর্ভুক্তির মাইলফলকের কারণে চীনের ১৩ ট্রিলিয়ন ডলার বন্ডবাজারে বাইরে থেকে কয়েক হাজার কোটি ডলার আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এদিকে এফটিএসই রাসেলস ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট বন্ড ইনডেক্সে (ডব্লিউজিবিআই) অন্তর্ভুক্তির জন্য চীনা সরকারি বন্ডকে পর্যবেক্ষণের তালিকায় রাখা হয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চীনা সরকারি বন্ড সম্পর্কে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।

নিউজ বনিকবার্তা