চলমান চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইউনাইডেট নেশন্স কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) প্রতিবেদনে। বাণিজ্যযুদ্ধের ফলে চীনা রফতানি কমায় উচ্চমূল্য গুনতে হচ্ছে মার্কিন ভোক্তাদের। অন্যদিকে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব পণ্য রফতানি হতো, মার্কিন ব্যবসায়ীরা সেগুলো চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে সরাসরি সম্পৃক্ত নয় এমন কিছু দেশ থেকে রফতানি শুরু করায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন চীনা রফতানিকারকরা।

এদিকে ২০১৮ সালের গ্রীষ্ম থেকে দুই দেশের মধ্যে প্রতিশোধমূলক বাণিজ্যযুদ্ধ শুরুর পর উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের যেসব পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র বর্ধিত হারে করারোপ করেছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সেসবের আমদানি ২৫ শতাংশেরও বেশি কমেছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অর্থনীতিবিদ আলেসান্দ্রো নিকিতা। তিনি বলেন, বাণিজ্যযুদ্ধের মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনের রফতানি কমেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির রফতানি যে পরিমাণ কমেছে, তা পূর্ববর্তী প্রান্তিকগুলোর তুলনায় বেশি।

নিকিতা বলেন, এরই মধ্যে চীনের রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। তবে মার্কিন প্রশাসন চীনা পণ্যে বর্ধিত হারে শুল্ক আরোপ করলেও বাণিজ্যযুুদ্ধের মধ্যেই বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের ৭৫ শতাংশ রফতানি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা চীনা কারখানাগুলোর প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার সক্ষমতার প্রমাণ দেয়।

আঙ্কটাডের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনা রফতানিকারকরা বর্ধিত শুল্ক নিজেরা বহন করতে শুরু করেন। ফলে কমে আসে নিজেদের পণ্যের রফতানি খরচ। যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রফতানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এরই মধ্যে ‘ট্রেড ডাইভারশন ইফেক্ট’ তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ চীন থেকে আমদানির পরিবর্তে অপেক্ষাকৃত কম দরে তাইওয়ান, মেক্সিকো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ভিয়েতনাম থেকে আমদানি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে চীনের ঘাটতি পূরণে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির তালিকায় নতুন নতুন দেশের নাম বেড়েই চলেছে।

বর্ধিত শুল্কারোপ কার্যকর হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে চীনা অফিস মেশিনারি পণ্যের রফতানি ৬৫ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে কৃষিজাত খাদ্য, যোগাযোগ সরঞ্জাম ও প্রিসিশন যন্ত্রপাতির রফতানি কমেছে ৩০ শতাংশেরও বেশি।

বণিক বার্তা