আগামী কয়েক দশকের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ স্তরে পৌঁছাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা অগ্রগতি কোনোটাই খোয়াতে হবে না চীনকে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিএনএন বিজনেস।

রকি মাউন্টেন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এনার্জি ট্রানজিশনস কমিশনের অংশীদারিত্বে শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ দেশটি জনপ্রতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তিন গুণ বাড়িয়েও চীন তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে পারে।

এনার্জি ট্রানজিশনস কমিশনের চেয়ারম্যান এডায়ের টার্নার বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় অবস্থান, এর বৃহৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস এবং গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোয় প্রযুক্তির দিক থেকে নেতৃত্বের আসনে থাকায় জ্বালানি রূপান্তর ও ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে চীন। ইউকে ফিন্যান্সিয়াল অথরিটি ও ইউকে ক্লাইমেট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান টার্নারের মতো বিভিন্ন আর্থিক ও এনজিও খাতের বিশেষজ্ঞ, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, জ্বালানি উৎপাদক ও ভোক্তাদের সমন্বয়ে এ কমিশনটি গঠিত।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১৮৭ দেশের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম প্রধান পরিবেশ দূষণকারী দেশটি। চলতি মাসের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের ভূমিকা আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। টার্নার বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে এ শতকের মাঝামাঝিতে শূন্য কার্বন ব্যবহার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে চীনের কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২০৫০ সালের মধ্যে নিট কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে পারলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি আরো শক্তিশালী হবে।

২০৫০ সালের মধ্যে চীন যদি সম্পূর্ণ ধনী অর্থনীতিতে পরিণত হয় এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনে, তাহলে দেশটিতে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন টার্নার।

প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়, চীন যেন ইস্পাত, সিমেন্ট ও রাসায়নিকের মতো ভারী শিল্পে কার্বন ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধের দিকে জোর দেয়। আরো যে পদক্ষেপ নিতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ চালিত সড়ক ও রেল পরিবহন, দূরপাল্লার আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন ও জাহাজ চালানোর ক্ষেত্রে বায়োফুয়েল ব্যবহার করে।

বণিক বার্তা