যুক্তরাষ্ট্রের সানদিয়াগোর ২০ বছর পুরনো বেকারি কন পেন রাস্টিক ব্রেডস অ্যান্ড ক্যাফে। চলতি মাসে বেকারিটিতে পরিচালিত নিরীক্ষার পর সেখানে অবৈধভাবে কর্মরত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরই বন্ধ হয়ে যায় বেকারিটির ব্যবসা।

গত এপ্রিলে নেব্রাস্কায় বন্ধ হয়ে যায় আলু প্রক্রিয়াজাতের একটি প্রতিষ্ঠান। এটিও বন্ধ হয়ে যায় সেখানে কর্মরত অভিবাসীদের ওপর পরিচালিত অভিযানের কারণে। গত আগস্টে নিউইয়র্কের একটি রেস্তোরাঁর ভাগ্যেও একই কারণে একই পরিণতি ঘটে।

এদিকে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা বলছেন, অভিযানের কারণে তারা আগের মতো পর্যাপ্ত অভিবাসী শ্রমিক খুঁজে পাচ্ছেন না। যে কারণে তাদের চাষাবাদের পরিমাণ কমে গেছে, বাদ দিতে হচ্ছে বিভিন্ন ফসল, ঝুঁকতে হচ্ছে অটোমেশনের দিকে। আর এ পরিস্থিতিতে মাঠেই নষ্ট হচ্ছে উৎপাদিত ফসল। অনেক ক্ষেত্রেই পুরো কৃষি ব্যবসা বিক্রি করে দেয়ার চিন্তা করতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মহার কমছে, অন্যদিকে দেশটির শ্রমসংকট দিন দিন আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিসহ বিভিন্ন ব্যবসা খাতের সার্বিক পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমতি ছাড়া কাজ করছে ৭৬ লাখ অভিবাসী। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এ-সংখ্যক অভিবাসী দেশটির মোট শ্রমশক্তির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। দিন দিন অভিবাসী শ্রমিকের চাহিদা বাড়লেও সরকারি কঠোর নীতিমালার কারণে এ শ্রমশক্তি এখন কমতির দিকে। অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে কাজ করেন। এর মধ্যে রয়েছে খাবার প্রক্রিয়াজাত, খামার, হোটেলসহ রেস্তোরাঁ ও ভবন নির্মাণ খাত। এছাড়া তারা শিশু যত্ন ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবেও দেশটির অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন।

এদিকে অর্থনৈতিক ঝুঁকি থাকলেও কঠোর অভিবাসন আইনের পক্ষে কথা বলছেন ট্রাম্পপন্থী অনেকেই। তাদের দাবি, কম দক্ষ অভিবাসী কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা করার কারণে দেশটির প্রকৃত নাগরিকরা বেতন পাচ্ছেন কম।

বণিক বার্তা