ভারতকে উন্নত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় (ইউএসটিআর)। এতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যে বিশেষ সুবিধা পেত, তার জন্য আর বিবেচিত হবে না ভারত। এতে যুক্তরাষ্ট্রের জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্সেস (জিএসপি) সুবিধা ফিরে পেতে ভারত যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেখানে বড় একটি ধাক্কা খেল দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা জিএসপির আওতায় গত জুন নাগাদ ভারতীয় রফতানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশ করতে পারতেন। অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিমাপে কোনো দেশের মোট জাতীয় আয় (জিএনআই) ও বিশ্ববাণিজ্যে দেশটির অংশীদারিত্ব বিবেচনা করছে ইউএসটিআর। উন্নয়নশীল দেশ হতে গেলে বিশ্ববাণিজ্যে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ অংশীদারিত্ব দিয়ে যা পরিমাপ করা হতো, ওই সীমা অনেক আগেই অতিক্রম করে ফেলেছে ভারত। ২০১৭ সালে বৈশ্বিক বাণিজ্যে ২ দশমিক ১ শতাংশ রফতানি এবং ২ দশমিক ৬ শতাংশ আমদানির প্রতিনিধিত্ব করেছে নয়াদিল্লি। ইউএসটিআর আরো জানায়, বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত অনুসারে জিএনআই ১২ হাজার ৩৭৫ ডলারের নিচে থাকলেও ভারতসহ জি২০ভুক্ত আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা উন্নত বিশ্ব হিসেবে গণ্য হবে।

জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের বিষয়টি গত কয়েক মাসে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলছেন, উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রদত্ত জিএসপি সহায়তা প্রয়োজন নেই। ভারত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজেই অবস্থান করে নিতে পারবে। অন্যদিকে ভারতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় বলছে, সাশ্রয়ী প্রতিপক্ষের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে তারা। জিএসপি সুবিধা হারালে বাজার অংশীদারিত্ব হারানোরও ভয় করছেন তারা।

২০১৮ সালে ভারতের জিএসপি সুবিধাপ্রাপ্তির যৌক্তিকতা নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের আরোপিত বেশকিছু বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব রাখছে বলে ওই মূল্যায়নে জানানো হয়। সেই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বরে ভারতের ৫০টি আইটেমে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহারের নির্বাহী আদেশ জারি করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

বণিক বার্তা