২০১৯ সালের শেষ তিন মাসে আরো একটি দুর্বল প্রান্তিকের মুখোমুখি হয়েছে ইউরোপের অর্থনৈতিক ‘পাওয়ার হাউজ’ হিসেবে পরিচিত জার্মানির অর্থনীতি। মন্থর ব্যয় ও রফতানির কারণে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিটির প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত ছিল।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে জার্মানির জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে শূন্য শতাংশ। মূলত বাণিজ্য উত্তেজনা, গাড়ি শিল্পে নিয়ন্ত্রণ পরিবর্তন ও ইউরোপের মন্থর অর্থনীতির চাপে সংগ্রাম করতে হচ্ছে দেশটির রফতানিনির্ভর শিল্পকে।

এছাড়া গত বছরের শেষ তিন মাসে মন্থর সরকারি ও ভোক্তা ব্যয়ও জার্মানির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এদিকে জার্মানির প্রবৃদ্ধি পরিসংখ্যান প্রকাশের পর ডলারের বিপরীতে ইউরো মান হারিয়েছে। গতকাল ১ ডলারের বিপরীতে ১ দশমিক ০৮২৮ ইউরো লেনদেন হয়, যা ২০১৭ সালের মে মাসের পর সর্বনিম্ন।

২০১৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় গত বছরের শেষ প্রান্তিকে জার্মানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া নির্মাণ খাতসহ শিল্পোৎপাদনে দশমিক ৫ শতাংশ পতন দেখা গেছে।

পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের শেষ প্রান্তিকে ইউরো অঞ্চলের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আগের প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল দশমিক ৩ শতাংশ।

অনলাইন ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান আইজির জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক জশুয়া ম্যাহনি বলেন, জার্মানির অর্থনীতি ইউরো অঞ্চলের শক্তির বদলে সম্ভবত সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতায় পরিণত হয়েছে। ইউরোপের শিল্প পরাশক্তিটি ক্রমাগতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্য নিয়ে ক্রোধের শিকার হয়ে আসছে।

তবে সরকারি পরিসংখ্যানে জার্মানির অর্থনীতির ওপর নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রভাব এখনো দেখা যায়নি বলে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন। তারা বলেন, জার্মানির মতো রফতানিনির্ভর অর্থনীতি শিগগিরই প্রবৃদ্ধি ফেরত আসবে না।

জার্মান শিল্পের জন্য রফতানি প্রকৃতপক্ষেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ রফতানিকারক দেশ জার্মানি। অধিকাংশ উন্নত দেশের তুলনায় জার্মানির অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ম্যানুফ্যাকচারিং ের অবদান অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ, জার্মানির অর্থনীতির ২০ শতাংশে অবদান রয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং ের, যেখানে যুক্তরাজ্যের ৯ শতাংশ ও মার্কিন অর্থনীতির ১০ শতাংশে অবদান রয়েছে খাতটির।

বণিক বার্তা