নারী ও পুরুষ কর্মচারীর মধ্যে বিদ্যমান বেতনবৈষম্য প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক ইলেকট্রনিক পেমেন্ট প্রতিষ্ঠান মাস্টারকার্ড। প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত নারী কর্মীরা পুরুষের তুলনায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ কম বেতন পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে এ বৈষম্য দূর করার কথা বলা হয়। খবর ব্লুমবার্গ।

লিঙ্গ সমতাভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য সমান বেতন দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে বলে মাস্টারকার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটি একই স্তরের সব কর্মীর সমভূমিকার জন্য সমান বেতন প্রদানের লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তবে বেতনবৈষম্য সম্পর্কে কোম্পানির নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান অ্যান কেয়ারনস একটি ব্লগপোস্টে লেখেন, এখনো সারা বিশ্বে কোম্পানিটির নারী কর্মীরা পুরুষদের তুলনায় বেতন পান ৯২ দশমিক ২ শতাংশ। এ ধরনের বৈষম্য এটাই নির্দেশ করে যে, প্রতিষ্ঠানটির উচ্চ বেতনের পদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব অপেক্ষাকৃত কম। তিনি আরো বলেন, মাস্টারকার্ড সব ক্ষেত্রেই সমতা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এছাড়া বৈষম্যের এ চিত্র ভবিষ্যৎ সমতার জন্য কাজ করতে প্রেরণা জোগায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মাস্টারকার্ড যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় কোম্পানি, যারা সমতাভিত্তিক বেতন প্রদানের লক্ষ্যে স্পর্শকাতর হলেও এ মূল্যায়ন জনসমক্ষে হাজির করল। এদিকে মাস্টারকার্ডের অন্যতম বৃহত্তম ব্যাংক অংশীদার সিটিব্যাংক এরই মধ্যে জানুয়ারিতে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গভিত্তিক বেতনবৈষম্যের চিত্র উপস্থাপন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানটির নারী কর্মীরা পুরুষের তুলনায় বেতন কম পান ২৭ শতাংশ। এক বছর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে এ বেতনবৈষম্য ছিল ২৯ শতাংশ।

এর বাইরে ব্রিটেনে মাস্টারকার্ডের ২৫০ জন কর্মীর বেতনের হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে। নারী ও পুরুষের মধ্যে এখানেও ব্যাপক বৈষম্য লক্ষ করা গেছে। দেশটির নারী কর্মীরা পুরুষের তুলনায় ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেতন কম পায় বলে মাস্টারকার্ডের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে বেতনবৈষম্যের বিষয়ে ব্যাংক ও বিভিন্ন অর্থিক প্রতিষ্ঠান শেয়ার অংশীদার ও অ্যাক্টিভিস্টদের চাপের মুখোমুখি হয়েছিল। এর অংশ হিসেবে মাস্টারকার্ডের শেয়ার অংশীদার অর্জুনা ক্যাপিটাল লিঙ্গভেদে বৈশ্বিক গড় বেতনবৈষম্যের চিত্র জানতে চায়। একই সঙ্গে প্রতিভাবান নারীকে নিয়োগ ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি রয়েছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হয়। এর পর পরই মাস্টারকার্ড বেতনবৈষম্যের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। কোম্পানিটির সর্বশেষ টেকসই প্রতিবেদন অনুযায়ী তাদের বৈশ্বিক শ্রমশক্তির মোট কর্মীর প্রায় ৩৯ শতাংশ নারী। এছাড়া ব্যবস্থাপনায় জ্যেষ্ঠ নারী কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন ২৯ শতাংশ।

বণিক বার্তা