নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। প্রায় অবধারিত মন্দার কবল থেকে বাঁচতে উপায় খুঁজছে দিশেহারা বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো। এরই মধ্যে সুদহার কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভসহ (ফেড) বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তার পরও ভাইরাসের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে রক্ষার বিষয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না অর্থনীতিবিদরা।

এ পরিস্থিতিতে অভূতপূর্ব আর্থিক পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার ১ ট্রিলিয়ন ডলারের সহায়তা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে সংকটাপন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ুলোকে প্রায় ৪০ হাজার কোটি ডলারের ঋণ সুবিধা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। সত্যি হলো, যুদ্ধবিগ্রহ ছাড়া শান্তিকালীন অবস্থায় এর আগে দেশ দুটি এমন কোনো আর্থিক পদক্ষেপ আর নেয়নি।

মূলত, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না, এমন সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছিল মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারকে। এর পরই গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটন ও লন্ডন অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এ বৃহৎ আর্থিক পরিকল্পনার ঘোষণা দেয়।

মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানিউচিন বলেন, সম্ভাব্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের এ প্রণোদনা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সরাসরি অর্থ দেয়ার পক্ষে। যত দ্রুত সম্ভব তাদের কাছে সহায়তার চেক পাঠানো হবে। জনপ্রতি ১ হাজার হিসাবে এ সহায়তার মোট পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ২৫ হাজার কোটি ডলারে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তি তাদের কর পরিশোধের জন্য নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৯০ দিন বেশি পাবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আগে থেকেই তার সরকার একটি বাস্তবমুখী ব্যয় পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য আলোচনা জারি রেখেছিল। এ পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সরাসরি নগদ অর্থ দেয়ার কথাও ভাবা হচ্ছিল। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে তার সরকার বড় কিছু করতে যাচ্ছে। ভাইরাসের বিষয়ে তিনি আরো বলেন, আমরা এ অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সম্ভাব্য সবকিছু করব। আমাদের এ লাড়াইয়ে জয়ী হতেই হবে। এজন্য দ্রুত ও প্রত্যক্ষ আর্থিক সহায়তা ছাড়া উপায় নেই। আমরা চাইনি, এ অদৃশ্য শত্রুর কারণে মানুষ তাদের কর্মসংস্থান হারাক কিংবা অর্থ সংকটে পড়ুক।

স্টিভেন মানিউচিন বলেন, তিনি আশা করছেন দুই সপ্তাহের মধ্যে মানুষের কাছে চেক পৌঁছে যাবে। কারণ আমেরিকানদের এখনই অর্থের প্রয়োজন। তাছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও এ মুহূর্তেই সংকটে থাকা সবার হাতে এ অর্থ পৌঁছে দিতে চাচ্ছেন।

বণিক বার্তা