নতুন করে প্রকাশিত অর্থনৈতিক উপাত্ত বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বর্তমানে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। এমনকি নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধে আরোপিত লকডাউন ধীরে ধীরে তুলে নেয়া শুরু হলেও দেশটির অর্থনীতির দ্রুত পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। এএফপি।

স্থানীয় সময় শুক্রবার প্রকাশিত উপাত্তে দেখা গেছে, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে গত মাসে শিল্প উৎপাদনের যেমন রেকর্ড পতন হয়েছে, তেমনি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশটির অর্থনীতির জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ খুচরা বিক্রি খাত। মূলত বৈশ্বিক মহামারী কভিড-১৯ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য খাতে অভাবনীয় সংকট সৃষ্টি করেছে। আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে মারা গেছে ৮৬ হাজারের মতো মানুষ। অন্যদিকে ভাইরাস প্রতিরোধে নেয়া পদক্ষেপ দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে কার্যত বিবশ করে তুলেছে। আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বেকারত্ব। কয়েক মাস আগেও যেসব মার্কিন নাগরিক নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে অবদান রাখছিলেন, তারা এখন বেকারত্ব ভাতার জন্য আবেদন করতে বাধ্য হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত বেকারত্ব ভাতার জন্য আবেদন করেছেন ৩ কোটি ৬৫ লাখ আমেরিকান। লকডাউন ঘোষণার পর মধ্য মার্চ থেকে প্রতি সপ্তাহে এ আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে বৈ কমছে না, যা দেশটির অর্থনীতির দুরবস্থারই প্রতিফলন।

যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রির উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অক্সফোর্ড ইকোনমিকস বলছে, পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের বিমুখতা সত্যিই হতাশাজনক। তাছাড়া ঊর্ধ্বগামী বেকারত্ব, কমে যাওয়া উপার্জন, ভঙ্গুর ভোক্তা মনোবল খুচরা বিক্রির ওপর ধারাবাহিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বাণিজ্য বিভাগের প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, মার্কিন অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভোক্তাব্যয়। কিন্তু এপ্রিলে এ ব্যয়ের পতন হয়েছে ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ, মাসিক হিসাবে দেশটির ভোক্তাব্যয়ে এর বেশি পতন আর কখনই দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে দোকানের ক্রেতানির্ভর ব্যবসা খাত। এর মধ্যে পোশাক বিক্রির পতন হয়েছে ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ। একইভাবে ইলেকট্রনিকস পণ্য ও আসবাব বিক্রি কমেছে যথাক্রমে ৬০ দশমিক ৬ ও ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে এর বিপরীতে ব্যতিক্রম অনলাইন খুচরা বিক্রি। এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে এ বিক্রির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ।

বণিক বার্তা