বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি এমন আর্থিক খাত খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। করোনার প্রকোপে ত্রাহি অবস্থা এখন বৈশ্বিক ব্যাংকিং খাতেও। মন্দ ঋণ, নন-পারফর্মিং সম্পদের বৃদ্ধি ও আয় কমে যাওয়ায় মুনাফা পতনের প্রেক্ষাপটে ব্যয়সংকোচনের পথে হাঁটতে হচ্ছে খাতসংশ্লিষ্টদের। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কিছু ব্যাংক আগেই এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে নীরবে অল্প হলেও কর্মী ছাঁটাই করেছিল। কিন্তু ২০২০ সালের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন সামনে রেখে ইউএইর বহু ব্যাংক ব্যাপক মাত্রায় কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি কঠোর ব্যয়সংকোচনের পথে হাঁটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর গালফ নিউজ।

গত মঙ্গলবার বিভিন্ন শাখার ৮০০ কর্মীকে ছাঁটাই করে দুবাইয়ের বৃহত্তম ব্যাংক এমিরেটস এনবিডি। ব্যাংকিং খাতসংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত করেছেন যে এমিরেটস এনবিডির মতো আগামী কয়েক সপ্তাহে কর্মী ছাঁটাই করতে যাচ্ছে আরো অনেক ব্যাংক। শুধু দুবাইয়েই নয়, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদভুক্ত (জিসিসি) সব দেশের ব্যাংকিং খাতেই বর্তমানে একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে। লকডাউন ও কভিড-১৯-এর সংক্রমণজনিত প্রভাব মোকাবেলায় জিসিসির আর্থিক নীতিনির্ধারকরা ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকজুড়ে বেশকিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করে। এসব পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত হয় অঞ্চলটির ব্যাংকিং খাতও। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যাংকগুলো ইনস্টলমেন্ট গ্রহণ স্থগিতের পাশাপাশি মওকুফ করে অসংখ্য ফি। একই সঙ্গে সহায়তা অব্যাহত রাখে গুরুত্বপূর্ণ এমএমই (ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ) খাতেও। কারণ লকডাউনের মধ্যে সার্বিক ব্যবসা কার্যক্রম একেবারেই থমকে যায়।

এ সংকট থেকে উত্তরণে সরকারগুলো বিভিন্ন আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। একইভাবে ঋণ গ্রহণে উৎসাহী করতে সুদহার হ্রাসের পাশাপাশি বেশকিছু পদক্ষেপ নেয় এ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। আশা করা হয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ীরা ঋণ গ্রহণে সাহসী হবেন। একই সঙ্গে পরিশোধের ক্ষেত্রেও তাদের ঝামেলায় পড়তে হবে না। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকোচন, ঋণ প্রবৃদ্ধির ধীরগতি এবং সাধারণ মানুষের চাকরি চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংগুলোকে সব শেষে ব্যাপক মুনাফা পতনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

বণিক বার্তা