৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ট্রান্স-আটলান্টিক জোট মিলে অটল এক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল, যার ওপরই গড়ে উঠেছে উন্নত এক ইউরোপের ভিত্তি। আর বিশ্বজুড়ে কর্তৃত্ব স্থাপনের লড়াইয়ে নেতৃত্বও দিয়েছে পশ্চিমা সামরিক-রাজনৈতিক জোট, যার নেতৃত্বে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু এই সম্পর্কে এখন বড় এক ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ২০২০ সালে এসে বড় অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড়িয়েছে আটলান্টিকের দুই পাড়ের এই সম্পর্ক।

নভেল করোনাভাইরাস রাজনীতি, অর্থনীতিসহ নানাভাবে বিশ্বকে বদলে দিচ্ছে। গত সপ্তাহে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকা থেকে বাদ দেয় যুক্তরাষ্ট্রকে। তার মানে, যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাসটির প্রকোপ না কমায় অদূর ভবিষ্যতে ইউরোপে আমেরিকানদের স্বাগত জানানো হবে না। যদিও বিতর্কিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে এ তালিকায় রেখেছে ইউরোপ, যে চীনে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি। এখানে ইউরোপ ও চীনের পারস্পরিক সমঝোতা রয়েছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অবশ্য এখানে রাজনৈতিক কোনো কারণ দেখছে না, তারা এখানে মহামারীর তথ্য-প্রমাণকেই ভিত্তি হিসেবে নিয়েছেন। অন্তত এই কথাটি শান্ত করতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, যিনি একাধিকবার ইউরোপিয়ান ব্লককে আক্রমণ করেছেন।

ইউরোপেরই কেউ কেউ অবশ্য এমন সিদ্ধান্তের বিরোধী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়নের এক কূটনীতিক বলেছেন, ‘অতীতে আমি দেখেছি, যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে আমরা চীনকে রাখতাম না।’

বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় এ বিষয়টি ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ককে ধ্বংস করে দিতে পারে। যদিও কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত ওয়াশিংটনের এখন হয়তো ইউরোপিয়ান বিষয় নিয়ে ভাবার সুযোগ নেই। এটাও সবার জানা, ইউরোপিয়ান জাতিগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহত্তর কূটনৈতিক স্বায়ত্তশাসন চায়। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের জন্যই এটি সত্য।

বণিক বার্তা