বর্তমানের দরবৃদ্ধি দেখলে হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে যে মাত্র কয়েক মাস আগেও বাধাহীনভাবে পড়ছিল স্বর্ণের দর। নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে যে স্বর্ণের দরপতন কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছিল না, মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেই পণ্যটির দামই আজ রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে। এটি কি কেবলই বাজারের নিজস্ব উত্থান-পতন বৈশিষ্ট্যের ফল, নাকি এর পেছনে অর্থনৈতিক কোনো প্রভাব কাজ করছে?

শুক্রবার নিউইয়র্কে সর্বশেষ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স স্বর্ণ ১ হাজার ৯০২ ডলার ২ সেন্টে লেনদেন হয়েছে, যা ২০১১ সালের রেকর্ড সর্বোচ্চ দরের প্রায় কাছাকাছি। এছাড়া গত মার্চের চেয়ে এ দর প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।

বিষয়টি বিশ্লেষকদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতির যখন টালমাটাল অবস্থা, তখন স্বর্ণের দাম বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাসে আর্থিক বাজারের এমন ভ্রান্তি উদ্রেককারী আচরণ আর দেখা যায়নি। তাহলে কি করোনা মহামারী নিজেই স্বর্ণের বাজারের এই নজিরবিহীন ঊর্ধ্বগতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে?

আসলে মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের মনে কিছু ভীতি কাজ করছে। করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ রুখতে সরকারগুলোর আবার লকডাউনে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা, অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে নজিরবিহীন প্রণোদনা প্যাকেজ অব্যাহত রাখা, ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি মুদ্রা ছাপানোর সম্ভাবনা, ইউরো ও ইয়েনের বিপরীতে ডলারের মানে হঠাৎ ধস নামা, যুক্তরাষ্ট্র-চীন উত্তেজনা বৃদ্ধি—বিনিয়োগকা ীরা সবকিছুই গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। এ অবস্থায় তাদের কাছে নিরাপদ বিনিয়োগ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা হঠাৎ বেড়ে গেছে।

বণিক বার্তা