যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ে হঠাৎ করেই বাজারে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এবার সেই চিন্তার রেখা আরো বাড়িয়ে দিল মার্কিন বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা গোল্ডম্যান স্যাকস গ্রুপ ইনকরপোরেশন। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বর্তমানে ডলারের মানের যা পরিস্থিতি, তাতে এটি বৈশ্বিক রিজার্ভ কারেন্সির মর্যাদা হারাতে পারে। খবর ব্লুমবার্গ।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ম্রিয়মাণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে শিগগিরই নতুন দফায় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে চলেছে মার্কিন কংগ্রেস। অন্যদিকে ফেডারেল রিজার্ভ এরই মধ্যে চলতি বছরের জন্য ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ চালু করেছে। গোল্ডম্যানের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থনীতি বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা ডলারের অবমূল্যায়নের আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বৈশ্বিক বাজারে ডলার তার আধিপত্য হারাতে পারে।

অবশ্য গোল্ডম্যান বলছে, এমনটি যে হবেই, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে সব আর্থিক সংকটের সময়ই এ সম্ভাবনা উঁকি দেয়। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। ডলারের মান নিয়ে বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগের কারণে চলতি মাসে বাজার কিছুটা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, মানিটাইজেশনের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে এবং স্বর্ণের ওপর চাপ তৈরি হবে।

গোল্ডম্যানের বিশ্লেষক জেফ্রেই কুরি ও তার দল বলছেন, ‘যখন অন্য সব বিনিয়োগ সম্পদের ওপর আস্থা উঠে যায়, তখন স্বর্ণকেই নিরাপদ সম্পদ মনে করা হয়। বিশেষ করে বর্তমানের মতো পরিস্থিতিতে, যখন বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের মুদ্রার মান কমাচ্ছে এবং প্রকৃত সুদহার রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনছে।’ তারা আরো বলেন, ‘এখন যে লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, তাতে রিজার্ভ কারেন্সি হিসেবে ডলারের টিকে থাকার বিষয়টি আসলেই হুমকির মুখে রয়েছে।’

কভিড-১৯ মহামারীর শুরুর দিকে মূল্যস্ফীতি নিয়ে ওয়াল স্ট্রিট খুব বেশি মাথা ঘামায়নি। কিন্তু গোল্ডম্যানের এ সতর্কবার্তা জানিয়ে দিচ্ছে, সেই অবস্থান থেকে সরে আসার সময় হয়ে গেছে।

বণিক বার্তা