করোনা মহামারীর প্রাথমিক ধাক্কা সামলে চীনসহ কিছু দেশে শিল্পোৎপাদন ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হলেও এর পরিসর এখনো সীমিত। ফলে তা বিশ্ব অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত গতি আনতে পারেনি। এখনো জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ববাণিজ্য। এসব কারণে চলতি বছর সারা বিশ্বে বাণিজ্যিক লেনদেন গত বছরের চেয়ে ৭-৯ শতাংশ কমতে পারে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ। গতকাল এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ইউএন কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আঙ্কটাড)। খবর রয়টার্স।

হঠাৎ করেই মহামারীর দমকা হাওয়া লেগেছে বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যে। নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে গেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। স্থবিরতা নেমে এসেছে শিল্পোৎপাদন, ভ্রমণ, ভোক্তাব্যয়—সব খাতেই। ভেঙে পড়েছে চাহিদা ও সরবরাহ শৃঙ্খল। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বছরওয়ারি আনুমানিক ১৯ শতাংশ সংকোচন হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রাক্কলন করা হচ্ছে। আঙ্কটাড বলছে, এই বাণিজ্য সংকোচনের প্রভাব পড়েছে বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপরই।

অবশ্য তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক বাণিজ্যে কিছুটা উত্তরণ দেখা গেছে। তবে তা এখনো সংকোচনের পর্যায়ে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তৃতীয় প্রান্তিকে বিশ্ববাণিজ্যে বছরওয়ারি সংকোচনের হার দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

নিজেদের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে আঙ্কটাড বলেছে, ‘তৃতীয় প্রান্তিকে হোম অফিস ইকুইপমেন্ট ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্যের বাণিজ্য বেড়েছে। টেক্সটাইল খাতের বাণিজ্যেও বেশ ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে এ সময়ে মোটরগাড়ি ও জ্বালানির বাণিজ্য কমেছে।’

চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে বিশ্ববাণিজ্যে প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ শতাংশ কমতে পারে বলে ধারণা করছে আঙ্কটাড। অবশ্য সংস্থাটি বলছে, করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ ঘিরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার কারণে পতনের এ হার আরো বাড়তে পারে। আঙ্কটাডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামনের মাসগুলোয় করোনা সংক্রমণ ফের বেড়ে গেলে নীতিনির্ধারকদের জন্য পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে এবং বিশ্ববাণিজ্যে আচমকা বিধিনিষেধের খড়্গ নেমে আসতে পারে।

বণিক বার্তা