সুন্দর পিচাই; বিশ্বজুড়ে যাকে সবাই এক নামে চেনেন। বৈশ্বিক সার্চ জায়ান্ট গুগল ও গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তিনি। ভারতের সামান্য এক মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা পিচাই জীবনে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছেন। তামিলনাড়ু রাজ্যে জন্ম নেয়া পিচাইয়ের শৈশব কেটেছে চেন্নাইতে।

গত সোমবার সিঙ্গাপুর ফিনটেক ফেস্টিভ্যালে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, অন্তর্ভুক্তি ও সুযোগের প্রশ্নটি তার জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। খুব সাধারণ একটি পরিবারে জন্ম সুন্দরের। জন্মের আগে তার মা স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতেন। বাবা রঘুনাথ পিচাই ছিলেন একটি কারখানার বিদ্যুৎ মিস্ত্রি। দুই কক্ষের ছোট্ট একটি বাসার একটিতে ছোট ভাই নিয়ে ঘুমাতেন তিনি। ছোটবেলায় তাদের বাড়িতে কোনো টিভি ছিল না। ছিল না কোনো প্রযুক্তির ছোঁয়া। এমন পরিবেশই তাকে বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতি গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।

পিচাই বলেন, ভারতে বেড়ে ওঠার সময়ে আমার কম্পিউটার কিংবা ফোন ব্যবহারের খুব বেশি সুযোগ ছিল না। ফোন করার জন্য এলাকার একটি ফোন ব্যবহার করতে আমাকে লম্বা লাইনে অপেক্ষা করতে হতো।

সুন্দরের বয়স যখন ১২ বছর, তখন তাদের বাড়িতে প্রথম টেলিফোন সেট আসে। এ টেলিফোন প্রযুক্তির প্রতি সে তুমুল আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, অবশেষে আমাদের পরিবার একটি রোটারি ফোন পেয়েছিল। তারপর ফোনটি আমাদের জীবনকে আরো উন্নত করে তোলে। এটিই বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি সহায়তা পৌঁছে দিতে আমাকে একটি পথ করে দিয়েছিল।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন সুন্দর। আইআইটি খড়গপুরে স্নাতকে ভালো ফল করেন। এরপর স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড সেমি কন্ডাক্টর ফিজিক্স নিয়ে পড়ার জন্য বৃদ্ধি পেয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। তার আগে পর্যন্ত তিনি দেশেই পড়াশোনা করেছেন। পিচাই যে পরিবেশে বড় হয়েছেন, সেখানে বর্তমান সময়ে এসেও প্রযুক্তির বিভাজন রয়ে গেছে। পিচাইয়ের বেড়ে ওঠা চেন্নাই শহরে দু-চারটি টেলিফোন কিংবা কম্পিউটারের দেখা মিললেও শহরের বাইরে এগুলো চেনার কোনো সুযোগ ছিল না।

বণিক বার্তা