আগামী সপ্তাহেই হোয়াইট হাউজে নতুন প্রেসিডেন্ট আসছেন। ওয়াশিংটনের সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। ২০০৫ সালে ইইউ জোটে যুক্ত হওয়ার আলোচনা শুরুর পর থেকেই আঙ্কারা ও ব্রাসেলসের মধ্যে তিক্ততা বাড়তে থাকে এবং অভিবাসী ইস্যু ও মধ্যপ্রাচ্যে ভূমিকার জন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তা চূড়ায় পৌঁছেছে। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের সঙ্গে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জের আশঙ্কায় আগেভাগেই ব্রাসেলসের দিকে যেন সমঝোতার জলপাই পাতা এগিয়ে দিয়েছেন। খবর এএফপি।


তুরস্কের কর্তৃত্ববাদী প্রেসিডেন্ট যদিও ‘সম্পর্কের নতুন অধ্যায়’ খোলার আহ্বান জানিয়েছেন, তবে বেশকিছু ইস্যুতে ইউরোপীয় উদ্বেগ সহসাই কাটছে না। ভূমধ্যসাগরের পূর্বাঞ্চলে তুরস্ক যখন প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করছে, তখন আঙ্কারার ওপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞার খসড়া করছে ব্রাসেলস। গত বছর এ ইস্যুতে গ্রিসের সঙ্গে নৌপথে তীব্র বিরোধের সূত্রপাত হয়েছিল। একই সঙ্গে পুরনো সন্দেহ তো রয়েছেই। একই সঙ্গে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলসের সঙ্গে বিরোধ হজম করা এরদোগানের জন্য কঠিন ঠেকতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। করোনা মহামারীতে অর্থনীতি যেখানে বিপর্যয়ের সামনে দাঁড়িয়েছে, সেখানে দ্রুত বৈশ্বিক বাজারের সঙ্গে বন্ধুতামূলক সম্পর্ক স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। ইউরোপের বাজারের ওপর তুরস্কের অর্থনীতি বড় আকারে নির্ভরশীল। সরকারি উপাত্তে দেখা গেছে, ২০০২ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তুরস্কের প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের (এফডিআই) ৬৭ দশমিক ২ শতাংশ এসেছে ইউরোপ থেকে। বৈদেশিক সম্পর্কে অস্থিরতায় গত বছর তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান পড়েছে এক-পঞ্চমাংশ। স্থানীয় মুদ্রা চাঙ্গায় দেশটিকে তার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে হাত দিতে হয়েছে। এছাড়া তুরস্কের অর্থনীতির বেহাল দশার জন্য তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ও নিজ জামাতাকে পর্যন্ত বরখাস্ত করতে হয়েছে এরদোগানের। এর কয়েকদিন বাদেই প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় চালুর ঘোষণা দেন তিনি।

২০২১ সালে ৩ হাজার ৯১টি নতুন প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার বরাদ্দের ঘোষণা করেছে তুরস্ক। এ বিনিয়োগের সিংহভাগই আসবে ইউরোপ থেকে।

বণিক বার্তা