+ Reply to Thread
Results 1 to 1 of 1

Thread: সুবারু এক্সভি!

  1. #1 Collapse post
    Senior Member Montu Zaman's Avatar
    Join Date
    Feb 2018
    Posts
    1,379
    Accrued Payments
    1,767.32 USD
    Thanks
    1,746
    Thanked 3,036 Times in 670 Posts
    SubscribeSubscribe
    subscribed: 0

    সুবারু এক্সভি!

    বিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা নিয়ে আজকে আপনাদের সামনে পেশ করছি জাপানের সবচেয়ে অফ-রোড ক্যাপেবল বি-সেগমেন্ট ক্রসওভার এসইউভি, যার নাম হলো সুবারু এক্সভি!!
    [ATTACH]14334[/ATTACH]
    লিফটেড হ্যাচব্যাক নামে এক টাইপের গাড়ি আছে, যেগুলো বানানো হয় হ্যাচব্যাক গাড়িতে হাইয়ারিং স্প্রিংস বসিয়ে। আমাদের কিছুদিন আগে রিভিউ করা একটি লিফটেড হ্যাচ ছিলো মাজদা সিএক্স-৩, যেটি বানানো হয় মাজদা-২ গাড়িটির চ্যাসিস উঁচু করে। যদিও স্টেশন ওয়াগনকে উঁচু করলে সেটাকে বলা হয় ‘লিফটেড ওয়াগন’, কিন্তু হ্যাচব্যাককে উঁচু করা গাড়িকে ফরমালি বলা হয় ক্রসওভার এসইউভি বা সিইউভি। এই টাইপের গাড়ির সবচেয়ে বড় উদাহারণ হচ্ছে সুবারু এক্সভি, কারণ সুবারু ইম্প্রেজা হ্যাচকেই ৯০ মিমি. উঁচু করে বানানো হয় সুবারু এক্সভি।
    বাংলাদেশের সুবারু ২০১৮ সালে অফিশিয়াল লঞ্চ করার সময়ে যেই ৩টি গাড়ি দিয়ে লঞ্চ হয়, সেগুলোর মধ্যে একটি হলো এক্সভি। আমাদের দেশে সুবারু এক্সভি বিক্রি করা হয় “১.৬-আই এস” ট্রিমে, যেটার দাম ৪১.৫ লাখ টাকা। সুবারু বাংলাদেশের স্টকে এখনো ২০১৯ মডেলের এক্সভি আছে, যেগুলো আবার ২টি ট্রিমে বিক্রি হয়। “১.৬-আই” ট্রিমের দাম ৩৬.২৫ লাখ টাকা, এবং “১.৬-আই এস” ট্রিমের দাম ৩৭.৭৫ লাখ টাকা। সবগুলোই অফিশিয়াল ব্র্যান্ড নিউ, এবং জাপানে বানানো।
    জেডিএমেও কিন্তু সুবারু এক্সভি বিক্রি হয়, তাই চাইলে আপনারা রিকন্ডিশন্ড এক্সভি-ও কিনতে পারেন আরও কম দামে। ২০১৭ সাল থেকেই জাপানে এই গাড়িটি বিক্রি হচ্ছে। ‘১৭ মডেলের ৩০ হাজার কিমি চলা এক্সভি ১.৬ পাওয়া যাবে ৩০ লাখ টাকায়! জেডিএমে আবার ২০১৯ সাল থেকে ২০০০ সিসির হাইব্রিড এক্সভি-ও আছে, যার নাম সুবারু এক্সভি ই-বক্সার। অকশন সাইটে আমরা ৫৫ হাজার কিমি চলা একটাই এক্সভি ই-বক্সার দেখেছি, যেটা বাংলাদেশের কিনলে দাম পড়বে ৩৩ লাখ টাকার মতো।
    Exterior :-
    সুবারু এক্সভি গাড়িটি এক দেখায় ভালো লাগার মতো একটা গাড়ি। যেহেতু ইম্প্রেজা হ্যাচব্যাক-এর সাস্পেনশন পাল্টে উঁচু করে বানানো হয় এক্সভি, এজন্য দেখতে ইম্প্রেজার মতোই হুবহু অনেক বেশি সুন্দর এই গাড়িটি। সামনে লম্বা শেপের একজোড়া হেডলাইট, যেটার এস ট্রিমে আছে খুবই খুবই সুন্দর দেখতে ডে-টাইম রানিং লাইটস। ২ হেডলাইটের মাঝে ছোট সাইজের গ্রিল, যার উপর একটা নিকেল বার দেওয়া, আর ওই বারের উপরে লাগানো আছে নীল ব্যাকগ্রাউন্ডের উপর ৬টি তারা আঁকানো সেই র্যা লি-কাঁপানো সুবারুর লোগো। বাম্পারের একটু উপরে একদম সিম্পল ছোট গোল ২টি ফগলাইট। একটা জিনিস অনেক ভালো লাগলো দেখে যে, হেডলাইটের নীচে ওয়াশিং স্প্রেয়ার লাগানো যেটা সাধারণত অফ-রোড ফোকাসড গাড়িতেই থেকে থাকে। আপনি মনে করেন চরম কাঁদা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন আপনার এক্সভি নিয়ে, কাঁদা ছিটে পড়লো হেডলাইটের উপর। এখন আপনি গাড়ির ভিতরে বসে একটা সুইচ চাপ দিবেন, হেডলাইটের নীচে থাকা ওই চারকোনা জিনিসটি উঠে এসে জোরে পানি স্প্রে করবে হেডলাইটের উপর, তাতে আপনার গাড়ির হেডলাইট যাবে একদম পরিষ্কার হয়ে! সাইড প্রোফাইলে আসলে দেখা যায় ৫টি স্পোকের সুন্দর ১৮” সাইজের রিমস। মাজদা সিএক্স-৩ এর মতো এই গাড়িটিতেও আছে ডোর-মাউন্টেড লুকিং গ্লাস। দরজার উপর তেমন কোনো রেখার খেলা নেই, সিম্পল একটা শোল্ডার লাইন আছে জানালার নিচ থেকে। এক্সভি-এর জানালা অনেক বড়, স্বাভাবিক সব গাড়ির মতো, এবং পিছনের সারির দরজার হ্যান্ডেলও সাধারণ স্টাইলের। উপরে দেখা যায় রুফ-র্যা ক। পিছনে আসলে আমরা দেখতে পাই চিকন সুন্দর একজোড়া টেইললাইট। টেইললাইটের নীচে দিয়ে গাড়ির বডি বেশ বাড়ানো। একটা খুঁত হচ্ছে, যেহেতু এই গাড়িটি সিএক্স-৩ এর মতো একটি লিফটেড হ্যাচ, তাই এর টেইলগেট বেশ ছোট আর কার্গো-স্পেসের নিচের বর্ডার বেশ উঁচুতে, যার কারণে ভারী ব্যাগ উঠাতে গায়ের জোর খাটাতে হবে। কিন্তু হ্যাঁ, পিছনের জানালা অনেক বড়, তাই পিছনে লুকিং গ্লাস দিয়ে তাকালে অনেকটা ভিউ পাওয়া যায়। এই গাড়িটিকে ইম্প্রেজা হ্যাচ থেকে এক্সভি বানাতে গিয়ে যেন একটা হেভি অফ-রোডার টাইপ ভাইব আসে, তাই গাড়ির চারিপাশে মোটা লেয়ারে ব্ল্যাক প্লাস্টিক ক্ল্যাডিং দেওয়া। অন্য সব গাড়িতে এই জিনিসটি আমার খুবই অপছন্দ হলেও এই গাড়িতে এটা দেওয়া একদম ঠিকাছে, কারণ এই গাড়িটা একটা ডেডিকেটেড অফ-রোডার তাই এই গাড়িটিতে এটা না থাকলেই বরঞ্চ খুঁত ধরতাম।
    সুবারু এক্সভি গাড়িটি সাইজে সি-সেগমেন্ট ক্রসওভার এসইউভির সমান হলেও সুবারু একে ভেজেল, সি-এইচআর ও সিএক্স-৩ দের প্রতিযোগী হিসেবে বেচে থাকে। দৈর্ঘ্যে গাড়িটি ১৭৬ ইঞ্চি, যা করোলা ক্রসের চেয়েও বেশি। তাই বুঝাই যাচ্ছে এই সেগমেন্টে লেগরুম সবচেয়ে বেশি হচ্ছে এক্সভি-এর। এছাড়া গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সও অনেক --> ২২০ মিমি!! এই গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স এমনকি নিসান এক্স-ট্রেইলের চেয়েও বেশি।
    Interior :-
    সুবারু এক্সভি-এর ইন্টেরিওর লাক্সারিয়াস না হলেও প্র্যাক্টিকাল ইন্টেরিওরের বড় উদাহারণ দেওয়া যাবে এই গাড়িটির ইন্টেরিওর দ্বারা। শুধুমাত্র কালো রঙেই এই গাড়িটির ইন্টেরিওর অ্যাভাইলেবল, তাই কালারটাই প্রথমে বুঝিয়ে দেয় যে সুবারু এই গাড়িটিকে লাক্সারিয়াস হিসেবে বানায়নি। প্রথমে আসুন দেখি ড্যাশ প্যানেলটি। প্রথমেই চোখে পড়বে বিশাল ৮ ইঞ্চি সাইজের ইনফোটেইনমেন্ট ডিসপ্লে, যেটাতে আছে অ্যাপল কারপ্লে ও অ্যান্ড্রয়েড অটো। কিন্তু জেডিএম রিকন্ডিশন্ড কিনলে এগুলো পাবেন না। জেডিএম এক্সভি-তে যেই প্যানাসনিকের ডিসপ্লে থাকে, ওইটাতে অবশ্য ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি আছে। একটা ভালো দিক হচ্ছে, রেডিও টিউনিং এবং ভলিউম কন্ট্রোলের জন্য ফিজিক্যাল ডায়াল আছে, যেখানে সি-এইচআর ও ভেজেল এদের কারোরই ফিজিক্যাল ডায়াল নেই, টাচ করে ভলিউম কন্ট্রোল করতে হয়, যেটা সম্পূর্ণ মনোযোগ কেড়ে নেয় যদি ড্রাইভার এটা করতে যায়। কিন্তু খুঁত হচ্ছে, ভলিউম নব বাঁয়ে দিয়ে টিউনিং নব ডানে দেওয়া উচিত ছিলো। কারণ, স্টিয়ারিং হুইলে আলাদা ভলিউম বাটন আছেই, তাই আসল ডায়ালটি বাঁয়ে দিলে সামনের যাত্রী সেটা সহজে ইউজ করতে পারতো, আবার স্টিয়ারিংয়ে রেডিও টিউনিং বাটন নেই, তাই একমাত্র ডায়াল/নবটি ডানে দিলে ড্রাইভার বাম হাত নাগালের মধ্যে রেখে রেডিও চ্যানেল পাল্টাতে পারতো, আবার ভলিউম বাড়াতে-কমাতে পারতো স্টিয়ারিং থেকেই। যাইহোক, এই স্ক্রিনের উপরে আছে আরেকটা ছোট স্ক্রিন। এই স্ক্রিনটা হচ্ছে এই ইন্টেরিওরের সবচেয়ে বড় চমক! শুধু যে এই স্ক্রিনে এসির সব তথ্য দেখায় তাই নয়, এই স্ক্রিনে গাড়ির মবিল চেঞ্জ করার সময় হলে মনে করায় দিবে, একদম রিয়েল-টাইম ফুয়েল ইকোনমি দেখাবে, হাইব্রিড ভ্যারিয়েন্টে ব্যাটারির চার্জের পরিমাণ, পাওয়ার-ফ্লো সব দেখাবে। আরেকটা জিনিসও দেখায়, যেটা পরে বলবো। পরের আইটেমে আসি। মেইন ইনফোটেইনমেন্ট ডিসপ্লের ২ পাশে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজারকে কপি করে দেওয়া ইয়া বিশাল সাইজের ২টা এসি ভেন্ট। এই ২টা এসি ভেন্ট এতোই বড় যে পিছনের সারিতে এসি ভেন্ট লাগে না, গাড়ি অনেক জলদি ঠান্ডা হয়ে যায়। এই গাড়ির এসির সমস্ত কন্ট্রোলস আগেকার আমলের গাড়ির মতো অ্যানালগ ডায়ালের মাধ্যমে সেট করতে হয়, যেটা আমরা মাজদা সিএক্স-৩ গাড়িটিতেও দেখেছি। কিন্তু সিএক্স-৩তে যেখানে একদম ডায়ালের উপর প্রিন্ট করা লেখা দেখে সেট করতে হয়, সেখানে এই গাড়িতে টেম্পারেচার দেখায় ওই যে উপরের ছোট ডিসপ্লেতে যেটা আগেই বলেছি। এখানে একটা খুঁত হচ্ছে, সাধারণত এসির বাটনগুলোর একদম কাছেই স্ক্রিন থাকে যেখানে এসির সব তথ্য দেখায়, কিন্তু এই গাড়িতে নীচে হাত দিয়ে সব কন্ট্রোল করতে হয়, আবার চোখ রাখতে হবে অনেকটা উপরে। এসির কন্ট্রোল প্যানেলের নীচে ২টা ফোন চার্জ দেওয়ার ইউএসবি পোর্ট এবং একটি ৩.৫ মিমি অক্সিলারি জ্যাক পোর্ট আছে গান বাজানোর জন্য। প্যানাসনিকের সাউন্ড সিস্টেম আছে, যা বেশ ভালো মিউজিক কোয়ালিটি আউটপুট দেয়। গেজ ক্লাস্টারে ২টি অ্যানালগ মিটার আছে, যার একটা ট্যাকোমিটার (আরপিএম যেটাতে দেখায়) এবং আরেকটি স্পিডোমিটার (স্পিড যেটাতে দেখায়)। ২টির মাঝে একটা ডিসপ্লে আছে যেখানেও ফুয়েল ইকোনমি দেখায়, আবার ক্রুজ কন্ট্রোলের তথ্য এবং একদম অ্যাকচুয়াল স্পিডের পরিমাণ দেখায়, মানে মিটারে যদি ২০ ও ৪০-এর মাঝে থাকে, তাহলে অ্যাকচুয়াল স্পিড যদি ধরেন ২৭ কিমি/ঘন্টা হয়, সেটা সংখ্যায় দেখাবে সেখানে।
    এবার আসি ভিতরের স্পেসে। গাড়িটি যেহেতু দৈর্ঘ্যে টয়োটা করোলা ক্রসের চেয়েও বড়, তাই বুঝাই যাচ্ছে ভিতরে বসার জায়গা অনেক বেশি। একটি রিভিউতে দেখলাম, যে রিভিউয়ার সে নিজেই বলে যে সে ৬ ফুটের বেশি লম্বা। তিনি ড্রাইভার’স সিটে নিজের মতো আরাম করে সিট পিছিয়ে বসে, এরপর ড্রাইভারের ঠিক পিছনের সিটে বসার পরও তার কাছে একগাদা লেগরুম থাকে। মানে ড্রাইভার নিজেই ৬ ফুটি লোক হলেও তার পিছনে আরেকজন ৬ ফুটি লোক আরামে বসতে পারবে এতো লেগরুম। আর পিছনের সারির সিটটা এতো পার্ফেক্টলি পিছনে হেলানো যে লং-জার্নিতে প্রথমত একদমই পিঠ-ব্যাথা তো করেই না, আবার গাড়িটা একটা গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বাড়ানো হ্যাচব্যাক হলেও ৬ ফুটি সেই রিভিউয়ারটির মাথার উপর অনেক জায়গা ফাঁকা থাকে। সুবারু বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া এক্সভি-এর এস ট্রিমে ফুল লেদার দেওয়া সিট থাকলেও জেডিএম এক্সভিতে সব ট্রিমেই কাপড় আর লেদার একসাথে করা সিট থাকে। হাইব্রিড অ্যাডভান্সড ট্রিমে আবার সিটের কালার কালো আর নীল একসাথে করা থাকে। বাই দ্যা ওয়ে, জেডিএম এক্সভি-তে ফ্যাক্টরি অপশন হিসেবে কিন্তু ফুল লেদার সিট অফার করা হয়। তাই আপনার ফুল লেদার লাগলে অকশন থেকে সেরকমই একটা এক্সভি নিতে পারেন। সারা ড্যাশবোর্ড জুড়েই সফট-টাচ লেদারে মোড়া, এবং সারা গাড়ির যেখানে যেখানে কর্নার করা, সেখানেই কমলা সুতায় সেলাই করা আছে লুকস বৃদ্ধির জন্য।
    Powertrain :-
    এবার আসি গাড়ির পাওয়ারট্রেইনে। নন-হাইব্রিড সুবারু এক্সভি-তে আছে ১৬০০ সিসির ফ্ল্যাট-ফোর সিলিন্ডারের ইঞ্জিন, যার শক্তি ১১৪ হর্সপাওয়ার ও ১৫০ নিউটন-মিটার টর্ক; এবং হাইব্রিড এক্সভি-তে আছে ২০০০ সিসির ফ্ল্যাট-ফোর ইঞ্জিন ও সাথে ইলেকট্রিক মোটর, যার কম্বাইন্ড শক্তি ১৬৪ হর্সপাওয়ার ও ২৬০ নিউটন-মিটার টর্ক। ২টি ইঞ্জিনই সুবারুর নিজেদের তৈরি “লিনেয়ারট্রনিক সিভিটি” গিয়ারবক্সের মাধ্যমে ৪টি চাকায় পাওয়ার দেয়, এবং উল্লেখ্য ব্যাপার হচ্ছে, সুবারুর এই গিয়ারবক্সটি হোন্ডার সিভিটির পর দুনিয়ার দ্বিতীয় সবচেয়ে রিলায়েবল সিভিটি। এখন, ফ্ল্যাট ইঞ্জিন আবার কীরকম? আমরা যেসব সাধারণ গাড়ি দেখি যেমন এলিওন, প্রিমিও, সিভিক, হ্যারিয়ার, এক্স-ট্রেইল, প্রাডো ইত্যাদি ইত্যাদি, এই গাড়িগুলোর সিলিন্ডারের মধ্যে পিস্টনগুলো থাকে ইঞ্জিনের মধ্যে খাঁড়াভাবে পাশাপাশি। কিন্তু ফ্ল্যাট ইঞ্জিনের পিস্টনগুলো থাকে শোয়ানো অবস্থায় বিপরীতদিকে মুখ করে। মানে, ইঞ্জিনের থাকে ২টা সিলিন্ডার ব্যাংক যেখানে আমাদের সাধারণ ইঞ্জিনে একটা সিলিন্ডার ব্যাংক থাকে। এরপর, ২টি পিস্টন একদিকে মুখ করে থাকে, আবার তাদের বিপরিতে আরও ২টা সিলিন্ডার মুখ করে থাকে। এখন, একটা সাইডে ২টা সিলিন্ডার যখন চলন্ত অবস্থায় থাকে, তখন দেখলে মনে হয় একটা বক্সার/মুষ্টিযোদ্ধার হাত দিয়ে বক্সিং করার মতো বা ঘুষি মারার মতো। এই কারণেই এই ইঞ্জিনকে পপুলার কালচারে বলা হয় “বক্সার ইঞ্জিন”। এমনকি সুবারু এক্সভি-এর হাইব্রিড ভ্যারিয়েন্টের নামও “ই-বক্সার” অর্থাৎ ইলেকট্রিফাইড বক্সার। এখন, বক্সার ইঞ্জিনের সুবিধা হচ্ছে, ইঞ্জিনটি আকারে চ্যাপ্টা হওয়ার কারণে চ্যাসিসের অনেকটা নিচের দিকে বসানো থাকে, যার কারণে গাড়ির সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি (মাধ্যাকর্ষণ কেন্দ্র) অনেক কম হয়। যত কম সেন্টার অফ গ্র্যাভিটি, ততো ভালো হ্যান্ডলিং। সাথে এই গাড়িগুলোতে কোনো স্ট্রাট বার বা সুয়ে বার না লাগিয়েই একদমই বডিরোল নেই। মুজ টেস্টেও সুবারুর সব গাড়ির রেজাল্ট অত্যাধিক ভালো হয়। সাথে যেহেতু বক্সার ইঞ্জিন বা ফ্ল্যাট ইঞ্জিনে পিস্টন বিপরীত মুখে কাজ করে, তাই একটা সিলিন্ডার ব্যাংকে তৈরি হওয়া ভাইব্রেশন অন্য সিলিন্ডার ব্যাংক শুষে নেয়, যার কারণে বক্সার ইঞ্জিনের ভাইব্রেশন খুবই খুবই কম।
    সুবারু এক্সভি গাড়িটি কোনো দিক থেকেই আহামরি ফাস্ট না। বক্সার ইঞ্জিনের হ্যান্ডলিং অত্যাধিক ভালো হলেও টর্ক ডিপ থাকে শুরু দিকে, যেটা গাড়ির ইনিশিয়াল টান বেশ স্লো করে দেয়। বিশেষ করে ১৬০০ সিসির এক্সভি বেশ স্লো এর কম্পিটিটরদের থেকে। কিন্তু হ্যাঁ, হাইব্রিডটার কম্বাইন্ড হর্সপাওয়ার আবার প্রাডোর চেয়েও ৪ হর্সপাওয়ার বেশি, সাথে টর্কও অনেক অনেক বেশি, সিএক্স-৩ ডিজেলের চেয়ে মাত্র ১০ এনএম কম, এবং হাইব্রিড বলে সবটা টর্ক এক নিমিষে চলে আসে, তাই কোনো টর্ক ডিপ-ও নেই। সব মিলিয়ে এক্সভি ই-বক্সার মোটামুটি অনেকটা ফাস্ট, অন্তত ভেজেল হাইব্রিডের চেয়ে বেশি। কিন্তু এই গাড়িটিকে ফাস্ট হওয়ার জন্য বানানোই হয়নি, এই গাড়িটিকে বানানো হয়েছে অফ-রোডে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে। আসুন দেখি এই অফ-রোড পার্ফরম্যান্স কেমন।
    প্রথমত হাই গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স তো একটা সুবিধা দিবেই এই গাড়িকে। এরপর আসছে বিখ্যাত “সিমেট্রিকাল অল-হুইল-ড্রাইভ”। সুবারুর এই অল-হুইল-ড্রাইভ সিস্টেমটি নামেই শুধু এ.ডব্লিউ.ডি, কিন্তু কাজে আসলে পিওর ফোর-হুইল-ড্রাইভ। র্যা লি-বিজয়ী এই সিস্টেমটিকে অনেকেই বলে থাকে অডি কোয়াট্রো এ.ডব্লিউ.ডি সিস্টেমের পর দুনিয়ার ২য় বেস্ট এ.ডব্লিউ.ডি সিস্টেম, এবং জাপানের বেস্ট। এই এক এ.ডব্লিউ.ডি সিস্টেমের কারণে এক সেট অফ-রোডিং টায়ার লাগাতে পারলে এক্সভি নিয়ে দুনিয়ার যেকোনো মাটির উপর আপনি চলাচল করতে পারবেন জীপ র্যাং গ্লারের মতো গাড়ির সাথে সাথে। শুধু তাই নয়, এই গাড়িটিতে আরও আছে ‘X-MODE’ নামের একটি অপশন। মনে করেন আপনি এক্সট্রিম অফ-রোড করছেন, এমন সময়ে মনে করেন আপনার এক্সভি-এর চাকা অতিরিক্ত ঘন বরফ বা ঘন কাঁদায় ফেঁসে গেলো। এক্ষেত্রে এক্স-মোড অন করলে ইসিইউ আগে দেখবে যে কোন চাকায় সবচেয়ে বেশি গ্রিপ আছে, এরপর গিয়ারবক্সের লক-আপ ক্লাচ বন্ধ করে সেই চাকায় সব পাওয়ার বুস্ট করবে যেটাতে গ্রিপ আছে, এবং আপনাকে কারোর সাহায্য ছাড়াই হাটু-সমান কাঁদা বা বরফ থেকে বের করে আনবে। এরপর খাঁড়া পাহাড় বেয়ে ওঠার সময়েও এক্স-মোড চালু করলে সবচেয়ে গ্রিপওয়ালা চাকায় শক্তি দিবে এবং পিছনের দিকে রোল করা থেকে আটকাবে, এরপর ক্ষেত্রবিশেষে অবস্থা বেগতিক হলে গিয়ারবক্সে সাধারণের চেয়ে ২৫% বেশি প্রেশার দিয়ে হলেও রোটেশোনাল ডিফারেন্স কন্ট্রোল করে পাহাড়ের উপরে আপনাকে যেমনে হোক নিয়ে যাবেই!!
    যেহেতু সুবারু এক্সভি গাড়িটি প্রাডো বা ল্যান্ড ক্রুজারের মতো ফুল-টাইম অল-হুইল-ড্রাইভ, এজন্য এই গাড়িটির ফুয়েল ইকোনমি খুব একটা ভালো না, ১৬০০ সিসি নন-হাইব্রিডে ৭-৮ কিমি/লিটার মাইলেজ দেয় ঢাকায়। হাইব্রিডটি এখনো দেশে আসেনি, কিন্তু কোম্পানি-ক্লেইম অনুযায়ী নন-হাইব্রিডের চেয়ে হাইব্রিডের মাইলেজ ৫ কিমি/লিটার বেশি।
    Safety :-
    আমরা সাধারণত অন্য সব রিভিউতে এই অংশটি রাখি না, কিন্তু আজকে আমরা রাখতে বাধ্য। কারণ, সুবারু জাপানের সবচেয়ে নিরাপদ গাড়ি বানায়, যার মধ্যে এক্সভি-ও বাদ যায় না। সুবারু-এর সেফটি সিস্টেমের নাম হচ্ছে “সুবারু আই-সাইট”। আই-সাইট কথাটির মানে হলো দৃষ্টিশক্তি। সুবারুর এই সিস্টেমে গাড়ির সামনের উইন্ডিশিল্ডের একদম উপরে বসানো আছে ২টি কালার ক্যামেরা। এখন, এই ক্যামেরা ২টি সবসময়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আপনার আরেক জোড়া চোখের ডিউটি পালন করবে। এই আই-সাইট সফটওয়্যারে সবরকম অবস্ট্যাকেলের সিমুলেশন সেভ করা আছে। যখনই সামনে কোনো অবস্ট্যাকেলের সাথে মেমোরিতে থাকা স্যাম্পল মিলিয়ে মিল খুঁজে পায়, তখনই ড্রাইভারকে সতর্কবার্তা পাঠাবে ব্রেক করার জন্য। ড্রাইভার যদি খেয়াল না করে আর ততক্ষনে অনেক দেরি হয়ে যায়, গাড়ি নিজেই ব্রেক করবে অ্যাক্সিডেন্ট এড়াতে। এখন, অন্য যেকোনো সিস্টেমের চেয়ে এটা বেশি অ্যাকুরেট হওয়ার কারণ হচ্ছে, অন্য সিস্টেমে রাডার ইউজ করে এটা করা হয়, কিন্তু এখানে ক্যামেরার মাধ্যমে রিয়েল-টাইম দৃশ্য দেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সবটা কন্ট্রোল করা হয়, তাই সবকিছু হয় খুবই অ্যাকুরেট। সাথে অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেলে অ্যাক্সিডেন্টের পূর্বের ও পরের ৩০ সেকেন্ড ধরে টোটাল ১ মিনিটের একটা ভিডিও রেকর্ড করে রাখবে যেন আপনি ভিডিওটি নিয়ে আদালতে দেখাতে পারেন আপনি নির্দোষ হলে। অর্থাৎ, এই গাড়িতে ড্যাশ-ক্যামের দরকার নেই কারণ বিল্ট-ইন আছে। সুবারু বাংলাদেশ এই সিস্টেম ছাড়া গাড়ি আনে দেশে, কিন্তু এটি চাইলে জেডিএম এক্সভিতে পাওয়া যাবে।
    Verdict :-
    অনেক বেশি বড় পোস্ট ছিলো, এজন্য আগেই মাফ চেয়ে নিচ্ছি। এখন, আমাদের মতামত কি গাড়িটার সম্পর্কে? সুবারু এক্সভি এই পোস্টের লেখকের নিজেরই অনেক পছন্দের একটা গাড়ি। এই গাড়িটি সবদিক থেকে অসাধারণ। ভিতরে প্র্যাক্টিকাল ইন্টেরিওর, গাড়ির নজরকাড়া চেহারা, চরম অফ-রোডিং পার্ফরম্যান্স, সেফটি অপশন --> সব মিলিয়ে গাড়িটি ৩৫-৪০ লাখ টাকা দামে একটা রিয়েল ডিল-ব্রেকার। কিন্তু ১৬০০ সিসির গাড়ি বাংলাদেশে কিনলে অনেক আফসোস হয় যে মাত্র ১০০ সিসির জন্য বাৎসরিক ট্যাক্সের পরিমাণ একদম ডাবল। এজন্য কস্ট-সেভিং ফ্যাক্টরে এই গাড়িটি রিকমেন্ডেড না। ০-১৬০০ সিসি নন-হাইব্রিডের ইম্পোর্ট ট্যাক্সের শতাংশ এবং ১৮০০-২০০০ সিসি হাইব্রিডের ট্যাক্সের শতাংশ একই, এজন্য কিনতে গেলে ২টিরই ইম্পোর্ট ট্যাক্স সমান পড়বে। শুধু হাইব্রিডের দাম জাপানে বেশি বলে ৩-৪ লাখ টাকা দাম বেশি পড়বে। যেহেতু বাৎসরিক ট্যাক্সের পরিমাণ ১৫০১ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত একই, এজন্য হাইব্রিডটি কিনলে বছর শেষে টাকা বাঁচবে বেশি। সুবারু বাংলাদেশের উচিত হাইব্রিডটি নিয়ে আসা, কারণ পার্টসের অভাবে অনেকেই জেডিএম রিকন্ডিশন্ড হাইব্রিডটি কিনতে চাইবে না যেখানে হাইব্রিডটাই বেশি ভাল সবদিক থেকেই।
    Attached Images  

    Though trading on financial markets involves high risk, it can still generate extra income in case you apply the right approach. By choosing a reliable broker such as InstaForex you get access to the international financial markets and open your way towards financial independence. You can sign up here.


  2. Remove Your Thanks

    The Following 5 Users Say Thank You to Montu Zaman For This Useful Post:

    BDFOREX TRADER (2021-05-16), FXBD (2021-05-16), Rassel Vuiya (2021-05-16), Tofazzal Mia (2021-05-16), Unregistered (1)

+ Reply to Thread

Posting Permissions

  • You may not post new threads
  • You may not post replies
  • You may not post attachments
  • You may not edit your posts
Bangladesh Forex Forum – Presentation
You are welcome to the forum serving as a virtual salon for communication of traders of all levels. Forex is a dynamically developing financial market which is open 24 hours a day. Anyone can get access to this market via a brokerage company. On this forum you can discuss the numerous advantages of trading on the currency market and all aspects of online trading on MetaTrader4 or MetaTrader5 platforms.

Bangladesh Forex Forum – Trading discussions
Every forumite can join a discussion of various issues, including those related to Forex but not limited to. The forum has been designed for sharing opinions and helpful information and is open for both professionals and beginners. Mutual assistance and tolerance are highly appreciated. If you would like to share you experience with others or deepen your knowledge of trading craft, you are most welcome to the forum threads dedicated to trading discussions.

Bangladesh Forex Forum – Dialogue between brokers and traders (about brokers)
In order to be successful on Forex, it is crucial to choose a brokerage company with due diligence. Make sure you broker is really reliable! Thus you will be impervious to many risks and will make profitable trades on Forex. On the forum a rating of brokers is represented; it is based on comments left by their customers. Post your opinion about the brokerage company you work with, it will help other traders avoid mistakes and choose a good broker.

Unleashed communication on Bangladesh Forex Forum
On this forum you can talk about not only trading issues, but any other topics you like. Offtopping is allowed in a special thread too! Humour, philosophy, social problems or practical wisdom – converse about anything you are interested in, including forex trading if you like!

Bonuses for communication on Bangladesh Forex Forum
Those who post messages on the forum can receive money bonuses and use them for trading on an account of a forum sponsor. The forum is not meant for gaining profit; however forumites can get these small bonuses as reward for the time spent on the forum and sharing views on the currency market and trading.