[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/769202391.jpg[/IMG]
যশোরের কেশেবপুর উপজেলার বুড়িভদ্রা নদীর তীরে অবস্থিত ভরত রাজার দেউল। ভরতভায়না নামে পরিচিত এ বৌদ্ধ স্থাপনাটি নির্মিত হয় প্রায় ১৮০০ বছর পূর্বে, গুপ্তযুগে। নির্মাণ করেন রাজা ভরত। তৎকালীন সুন্দরবন অঞ্চলের প্রতাপশালী এ রাজা নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি টিকিয়ে রাখতে মনস্থির করেন একটি ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মাণের। আর স্থান হিসাবে নির্ধারণ করেন খরস্রোতা ভদ্রা নদীর তীরবর্তী এলেকা। কালের আবর্তে তা ভরতভায়না নামে পরিচিতি লাভ করে। স্থাপনাটির মূল আকর্ষণ হলো এটি দেখতে কিছুটা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যার রয়েছে ৪টি উইং ওয়ালে ঘেরা ৮২টি স্তূপাকার সহ মোট ৯৪টি কক্ষ, একটি সুউচ্চ মঞ্চ, বেশ কয়েকটি ছোট বড় প্রকোষ্ঠ ও জলাধার। এটি মূলত ইট ও কাদা নির্মিত একটি ইমারত, যা সময়ের বিবর্তনে পরিণত হয়েছে মাটির টিবিতে। ব্যবহূত ইটের পরিমাপ ৩৬ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার। এত বড় ইট এতদাঞ্চলের যেকোনো পুরাকীর্তিতে মেলা প্রায় দুর্লভ। নান্দনিক এ নির্মাণশৈলীর চারধারে একাধিক সুরক্ষা প্রাচীর ছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে এখন সেসব দৃশ্যত নয়। ভূমি থেকে মূল বেদির উচ্চতা ১১.৮৮ মিটার, ব্যাস ২৭৫ মিটারের অধিক। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে কিছুটা হ্রাস পায় বেদির উচ্চতা। ১৮৮৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ কয়েক দফায় খনন করে ১২টির মতো প্রত্নবস্তু আবিষ্কার করেন। এর মধ্যে মূর্তিখচিত পোড়ামাটির ফলক, অলঙ্কৃত ইট, দেব-দেবীর হাতের ভগ্নাংশ ও মৃন্ময় তেলের প্রদীপ উল্লেখযোগ্য। যেগুলো সংরক্ষিত আছে খুলনার শিববাড়িতে, বিভাগীয় জাদুঘরে। দেউলের দুই পাশে দুটি পানির পাতকূয়া পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার হলো পাতকূয়াতে কলাগাছ ডুবিয়ে দিলে তা পূর্বদিকের ভদ্রা নদীতে ভেসে উঠতো বলে জনশ্রুতি আছে।