ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ের জন্য নিজেদের তৃতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে চীন। নতুন এ স্টক এক্সচেঞ্জটি রাজধানী বেইজিংয়ে স্থাপন করা হবে বলে জনান দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বাণিজ্য ও পরিষেবা-সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিক মেলায় দেয়া ভাষণে এমনটা জানান শি জিনপিং। বর্তমানে চীনের মূল ভূখণ্ডে দুটি পুঁজিবাজার রয়েছে। এর একটি সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ, যা অর্থনৈতিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত। আরেকটি দেশটির দক্ষিণের শহর শেনজেনে অবস্থিত শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ। চীনা কোম্পানিগুলো দেশের অভ্যন্তরে ও যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরনের চাপের মুখে রয়েছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ স্থাপনের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
নতুন এ স্টক এক্সচেঞ্জ স্থাপনের ব্যাপারে বিশদ কোনো বর্ণনা দেননি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে চায়না সিকিউরিটিজ রেগুলেটরি কমিশন (সিএসআরসি) প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের পর একটি ক্ষুদ্র বিবৃতি প্রদান করে। বিবৃতিতে বলা হয়, সিএরআরসি নীতিনির্ধারকরা এ উদ্যোগের সম্ভাবনা নিয়ে বেশ আশাবাদী। ফলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকৃতির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো আরো ভালো কিছু করতে পারবে বলে মনে করছে সিএসআরসি।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1579777534.jpg[/IMG]
নিয়ন্ত্রকরা জানায়, প্রস্তাবিত এ স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধনের নিয়মাবলি অনেকটা সাংহাই স্টার মার্কেটের মতোই হবে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ নাসডাক প্লাটফর্মের একটি উপযুক্ত জবাব হিসেবে এ স্টক এক্সচেঞ্জ চালু করছে চীন। এমন একসময় নতুন স্টক এক্সচেঞ্জ চালুর পরিকল্পনা উন্মোচন করা হলো, যখন চীনের কোম্পানিগুলো বেইজিং ও ওয়াশিংটন দুই জায়গা থেকেই কড়া নজরদারি ও নিরীক্ষণের মধ্যে রয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনের কর্তৃপক্ষ বেশকিছু নিয়ম-কানুন ঘোষণা করেছে, যার ফলে দেশটির বেসরকারি খাতের ওপর বড় আকারের প্রভাব ফেলে। টেক জায়ান্ট, টিউটরিং ফার্মস থেকে শুরু করে মিউজিক স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম ও টিভি কোম্পানিগুলো সরকারের এসব নীতিমালায় প্রভাবিত হয়েছে। চীনা কোম্পানিগুলোর ওপর আরোপ করা কঠোর বিধিনিষেধের পাশাপাশি চীনা প্রশাসন এসব কোম্পানি বিদেশী অংশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকা শেয়ারের ওপরও নজরদারি বাড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি (ইভি) নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি তাদের কম্পিউটার চিপ মেকিং ইউনিটের শেয়ার বিক্রির পরিকল্পনা স্থগিত করেছে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বেইজিংয়ের চলমান দমননীতির সর্বশেষ শিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার বিক্রিতে এ প্রভাব ফেলে। চলতি মাসের শুরুতে বেইজিং চলমান এ দমননীতি আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত চালিয়ে নেয়ারও ইঙ্গিত দেয়। ফলে চীন তার অর্থনৈতিক কাঠামোকে একটি নতুন রূপরেখা দিতে চায় বলে জানায় দেশটির নীতিনির্ধারকরা। এদিকে ওয়াল স্ট্রিটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা দ্য সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি) বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে চীনা কোম্পানিগুলোর নিবন্ধন ও শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তথ্য দাবি করছে।