সাল ২০৮০
আমি আমার রুমে বসে সুলাইমান সুকনের "মস্তিষ্কের ক্যান্সার " বইটি পড়ছিলাম।সুকন ভাই তার গাড়ি থেকে নামতে যাচ্ছে এমন অবস্থায় আমার নাতি দরজায় টোকা দিয়ে বললো,
"দাদা ভাই আসবো?"
আমি বললাম, "আয়"।
সে আমার হাতে বই দেখে বিপুল উৎসাহে জিজ্ঞেস করলো,
" দাদাভাই তুমি কি বিভূতি-ভূষণ বন্দোপধ্যায় কে চিনো?"
আমি বললাম,
"না, আমি একজন কিংবদন্তি সাহিত্যিক সুলাইমান সুকন কে চিনি!"
-দাদাভাই তুমি কি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কে চিনো?
আমি বললাম,
"না,আমি একজন কিংবদন্তি সাহিত্যিক সালমান মুক্তাদির কে চিনি!
-দাদাভাই তুমি কি হুমায়ূন আহমেদ কে চিনো?
আমি বললাম,
" না, আমি একজন কিংবদন্তি লেখক তৌহিদ আফ্রিদিকে চিনি,আমি একজন কিংবদন্তি লেখিকা রাবা খান কে চিনি"
কথা গুলো শুনে সে বেশ কিছুক্ষণ আমার দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে।মাথায় টোকা দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,
"-কিরে কি হয়েছে?"
নাতি চাপা উত্তেজনায় বললো,
"-দাদাভাই উনারা তোমাদের সময়ের সাহিত্যিক ছিলো?"
আমি বললাম,"হ্যা"
সে এবার আরো অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
-"সত্যি তোমাদের সময় বইমেলায় উনাদের বই বের হতো?"
আমি বললাম, "হ্যা বের হতো"
হঠাৎ সে আমার পা ছুঁয়ে সালাম করলো।আমি কিছুই বুঝলাম না।আমি জিজ্ঞেস করলাম, "কি ব্যাপার?"
-"দাদাভাই উনাদের মতো কিংবদন্তির বই তোমাদের সময় বের হতো, তোমরাই তো একেকজন কিংবদন্তি"
আমি খানিক ভেবে বললাম,"এভাবে তো ভেবে দেখিনি"!নাতি চলে গেলো।নাতির কথা শুনে খুব নস্টালজিক হয়ে গিয়েছি।বিষন্ন মন নিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। হঠাৎ পাশের ফ্ল্যাট থেকে শব্দ ফেলাম দুজন অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর আর কিশোরী একজন আরেকজন কে বলছে,"কাছে আসো না আরো কাছে আসো না। হুশ কথা বলো না কোনো কথা বলো না"।চশমা টা খুলে অশ্রুভেজা চোখ টা মুছলাম।চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে,"হে কিংবদন্তি সালমান মুক্তাদির তুমি কোথায়? "