বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা সাজিয়েছিল বেন্টলি মোটরস। চলতি দশকের শেষ দিকে পুরোপুরি ইভিতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এর অংশ হিসেবে শিগগিরই আসার কথা ছিল কোম্পানির প্রথম ইভি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে অল-ইলেকট্রিক পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেছে ব্রিটিশ বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেন্টলির প্রধান নির্বাহী অ্যাড্রিয়ান হলমার্ক। সম্প্রতি তিনি জানান, কার্বন নিরপেক্ষতা ও পুরোপুরি ইভি খাতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা কয়েক বছরের জন্য পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী লক্ষ্যমাত্রার বদলে বিইভি বা ব্যাটারিচালিত গাড়ির পাশাপাশি প্লাগ-ইন হাইব্রিড তৈরি করবে বেন্টলি। তিনি বলেন, ‘২০৩১ সালে সব গাড়ি বিইভি হোক বা না হোক, ওই সময়ে আমাদের হাতে কিছু হাইব্রিড গাড়ি থাকতে পারে। আমরা হয়তো কয়েক বছরের জন্য পিছিয়ে যাচ্ছি।’
বিশ্বব্যাপী ইভির বাজার দ্রুত সম্প্রসারণের প্রত্যাশা করা হলেও বাস্তবে অনেকটাই মন্থর গতি দেখা যাচ্ছে। এ কারণে একাধিক গাড়ি কোম্পানি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে। এখন এ খাতে ‘বিলম্ব’ বা ‘বাতিল’ খুবই পরিচিত শব্দে পরিণত হয়েছে। বেন্টলির কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যে সে বিষয়টি প্রতিফলিত হচ্ছে।
আগামী বছর বেন্টলির প্রথম ইভি সড়কে নামার কথা ছিল। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগের অংশ হিসেবে প্রতি বছর একটি নতুন অল-ইলেকট্রিক মডেল আসার কথা ছিল। তবে কোম্পানি বলছে, প্রথম ইভির জন্য ক্রেতাদের ২০২৬ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এর প্রভাব পড়বে পরবর্তী গাড়িগুলোয়। [IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1232175770.jpg[/IMG]
অ্যাড্রিয়ান হলমার্ক জানান, বেন্টলির প্রথম অল-ইলেকট্রিক গাড়ির বিলম্বের পেছনে রয়েছে সফটওয়্যার সমস্যা। এছাড়া মান অনুযায়ী গাড়ির নকশার জন্য যথেষ্ট সময়ও প্রয়োজন। অবশ্য পরিবর্তিত বাজার পরিস্থিতির তুলনায় এগুলো খুবই প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘আগামী কয়েক বছরে প্লাগ-ইন হাইব্রিডে বিনিয়োগ কয়েক মিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেবে বেন্টলি।’ বেন্টলি বর্তমানে ২ লাখ ৩ হাজার ২২০ ডলারে বেন্টায়াগা এসইউভি প্লাগ-ইন হাইব্রিড ও ২ লাখ ২১ হাজার ২২০ ডলারে ফ্লাইং স্পার সেডান বিক্রি করছে। উভয় ইঞ্জিনেই ইভি ও বৈদ্যুতিক সুবিধা রয়েছে। এছাড়া শিগগিরই বিখ্যাত ভি-১২ ইঞ্জিন এবং জুলাই বা আগস্টের মধ্যে নন-হাইব্রিড ভি-এইটসহ ঐতিহ্যবাহী অন্তর্দহন ইঞ্জিন উৎপাদন বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। ফক্স ওয়াগনের মালিকানাধীন বেন্টলি সম্প্রতি ২০২৩ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে জানা যায়, গত বছর কোম্পানিটি বিশ্বব্যাপী ১৩ হাজার ৫৬০টি গাড়ি সরবরাহ করেছিল, যা আগের বছরের ১৫ হাজার ২০০টির তুলনায় ১১ শতাংশ কম। গত বছর আয় করে ৩২১ কোটি ডলার, যা ২০২২ সালের তুলনায় ১৩ শতাংশ কম।