[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/424342948.jpg[/IMG]
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) ১৭ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সুদহার বাড়িয়েছে। গত মার্চে প্রথম দফায় সুদহার বাড়িয়ে শূন্য থেকে দশমিক ১ শতাংশ করেছিল বিওজে। এবার দ্বিতীয় দফায় তা বাড়িয়ে দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। দেশের মুদ্রানীতিকে স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নিয়েছে ব্যাংকটি। অর্থনীতিতে মুদ্রার প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে গত কয়েক বছরে বিপুল পরিমাণ সরকারি-বেসরকারি বন্ড ক্রয়ের কর্মসূচি নিয়েছিল বিওজে। সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি এবার সে কর্মসূচি থেকে বেরিয়ে আসার পরিকল্পনাও নিয়েছে ব্যাংকটি। এছাড়া বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান থেকেও সরে আসবে তারা। জাপান এমন সময় সুদহার বাড়াল, যখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার কমানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। আজ সুদহার কমানোর ঘোষণা দিতে পারে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড।
মুডিজ অ্যানালিটিকসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ স্টেফান অ্যাংরিক বলেন, ‘*বুধবার রাতে জাপানি সংবাদমাধ্যমে সুদহার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর প্রচার করা হয়। তখন থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল সুদহার বাড়ানো হতে পারে।’ তবে চাহিদা প্রভাবিত মূল্যস্ফীতির অবস্থা ও অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান বিবেচনায় এ সিদ্ধান্তকে তেমন জুতসই মনে হচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’
সরকারি তথ্য বলছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে জাপানি অর্থনীতি ২ দশমিক ৯ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। একই সময়ে ভোক্তামূল্য প্রত্যাশার চেয়ে কম হারে বেড়েছে। বছরের শুরু থেকে জুন পর্যন্ত ভোক্তামূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ ২ দশমিক ৬ শতাংশ।
এইচএসবিসির এশিয়ার অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রেডরিক নিউম্যান বলেন, ‘*ভোক্তারা খুব অল্পই ব্যয় করছেন। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়িয়ে একটি শক্ত বার্তা দিতে চেয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের হাতে থাকা পরিসম্পদ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার বিষয়টিও বাস্তবায়ন করা হবে। বড় কোনো পরিবর্তন না এলে মুদ্রানীতি আরো কঠোর করতে যাচ্ছে বিওজে। আগামী বছরের শুরুতে আরেক দফায় সুদহার বাড়তে পারে।’
প্রসঙ্গত, গত মার্চে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো সুদহার বাড়িয়েছিল বিওজে। এর আগে বিশ্বে একমাত্র জাপানই ছিল নেতিবাচক সুদহারের দেশ। ২০১৬ সালে স্থবির অর্থনীতিতে গতি আনতে বিওজে সুদহার নেতিবাচক বা শূন্যের নিচে নির্ধারণ করে দিয়েছিল। নেতিবাচক সুদহার থাকলে ব্যাংকে টাকা জমা রাখতে বাড়তি অর্থ খরচ করতে হয়। এ ধরনের সুদহার মানুষকে ব্যাংকে টাকা জমা রাখার পরিবর্তে ব্যয় করতে উৎসাহিত করে।
কভিড-১৯ মহামারীর সময় বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক সীমিত ভ্রমণ ও লকডাউনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় সুদহার কমিয়ে দিয়েছিল। তখন সুইজারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ কিছু দেশ নেতিবাচক সুদহার চালু করেছিল। এরপর মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ড মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সুদহার বাড়িয়ে দিয়েছে।