নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ক্রিপ্টোবান্ধব নীতি প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর তার বিজয়ে ডিজিটাল মুদ্রাবাজারে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে। প্রথমবারের মতো লাখ ডলারের ঘর পার হয়ে যায় বিটকয়েনের মূল্য। তাতে সাড়া দিয়ে হঠাৎ নিজের নামেই মিম কয়েন বাজারে আনলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে কয়েন বাজারে সাড়া তোলার পর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পেলেন স্ত্রী মেলানিয়াকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা নতুন এক প্রবণতা তৈরি করবে, যা আগামী কয়েক মাসে কিছু উত্তেজনাকর মুহূর্ত তৈরি করতে পারে। খবর এফটি। প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প নামের মিম কয়েনের বাজারমূল্য গত রোববার নাগাদ ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। তবে মেলানিয়ার চালু করা কয়েনের কারণে তা দ্রুত কমেও যায়।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/530957187.jpg[/IMG]
গতকাল প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চালু করেন নিজের নামে মিম কয়েন, যার মূল্য ৬ ডলার থেকে বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে ৭৫ ডলারে ওঠে।
এদিকে রোববার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের স্ত্রী মেলানিয়া নিজের নামে মিম কয়েন চালু করেন, যা কিনা সন্ধ্যার মধ্যে বাজারমূল্যে ৮৫০ কোটি ডলারে পৌঁছে যায়।
প্রতিবেদন অনুসারে, মেলানিয়ার কয়েন ঘোষণার পর পরই ট্রাম্পের কয়েনের মূল্য ৭৫ ডলার থেকে অর্ধেকেরও বেশি কমে যায়। ফলে বাজারমূল্য থেকে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার দ্রুত হারিয়ে যায়। তবে পরবর্তী সময়ে কয়েনটির অবস্থান কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।
অতি দ্রুতই ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েন ক্রিপ্টো বাজারে অন্যতম বড় মিম কয়েন হয়ে ওঠা অনলাইনের ‘ভাইরাল মুহূর্তের’ প্রতিনিধিত্ব করে। বলা হয়ে থাকে, এটি কখনই ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যনির্ভর নয়, বরং এটি ইন্টারনেট সংস্কৃতির অংশ। এখানে মানুষ হাস্যরস বা ভাইরাল ট্রেন্ড তৈরি করতে চায়। এছাড়া মিম কয়েনগুলোর কোনো ব্যবসায়িক মডেল বা নগদপ্রবাহ নেই।
ক্রিপ্টো খাতের নির্বাহী ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন, নতুন প্রশাসন ক্রিপ্টো সম্পদের প্রতি আরো সহানুভূতিশীল নীতি গ্রহণ করবে। মূলত এ কারণে গত নভেম্বরে ট্রাম্পের নির্বাচনী জয়ের পর নতুন মিম কয়েন ও এর মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে ক্রিপ্টো নির্বাহী ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানের পর নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মিম কয়েনের ঘোষণা দেন ট্রাম্প, যা কিনা ক্রিপ্টো বাজারের অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে বড় তিন ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ বাইন্যান্স, কয়েনবেস ও ক্রাকেন দ্রুত পরিস্থিতির অনুকূলে সাড়া দিয়েছে। তারা এরই মধ্যে ট্রাম্প কয়েনের লেনদেনের পরিকল্পনা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ক্রিপ্টোকারেন্সি ে ট্রাম্প পরিবারের আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার তিন ছেলে ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি ফাইন্যান্সিয়াল’ নামে একটি ক্রিপ্টো উদ্যোগকে সমর্থন দিচ্ছেন। এরিক ট্রাম্প বাবার নামে বাজারে আসা কয়েনকে ‘পৃথিবীর সবচেয়ে হট মিম’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড লিবার্টি সবে শুরু করছে’।
এদিকে মিম কয়েন উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্পের সাবেক কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর অ্যান্থনি স্কারামুচি। তার মতে, ডিজিটাল কারেন্সির বাজারে এর প্রভাব নেতিবাচক হবে। অ্যান্থরি স্কারামুচি বলেন, ‘ট্রাম্পের মিম কয়েন ইন্ডাস্ট্রির জন্য খারাপ। নিজেকে বিভ্রান্ত করবেন না।’

ক্রিপ্টো উদ্যোক্তা জোনাথন বিক্সবির মতে, মূল্যের অপ্রত্যাশিত উত্থান ঘটে ট্রাম্পের মিম কয়েন এমন ‘ব্যানানা জোনের’ সূচনা হতে পারে। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রের সেলিব্রিটিদের নতুন করে প্রচারে ফিরে আসার সুযোগ দেবে। সব মিলিয়ে নতুন নতুন মিম কয়েনের আবির্ভাবে আগামী কয়েক মাস খুবই উত্তেজনাপূর্ণ হতে চলেছে।