ব্লকচেইন ও ডিজিটাল সম্পদভিত্তিক আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে মালদ্বীপ সরকার। এতে ব্যয় হবে ৮ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ৮৮০ কোটি ডলার। মূলত আর্থিক সংকট কাটাতে এ উদ্যোগ নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটি। খবর এফটি।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1806014218.jpg[/IMG]
দুবাইভিত্তিক পারিবারিক বিনিয়োগ সংস্থা এমবিএস গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট এ প্রকল্পে ৮৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। পাঁচ বছর মেয়াদে বাস্তবায়িত এ বিনিয়োগ মালদ্বীপের প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের বার্ষিক জিডিপিকেও ছাড়িয়ে যাবে। অনলাইনে দেয়া সাক্ষাৎকারে মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী মুসা জামির বলেন, ‘পর্যটন ও মৎস্যনির্ভর অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন সম্ভাবনায় বিনিয়োগ করতে মালদ্বীপকে ঝুঁকি নিতে হবে।’
তিনি জানান, আগামী দুই বছরে বড় অংকের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে মালদ্বীপের, যা দেশটির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ব্লকচেইন হাব নির্মাণের চুক্তিকে সে কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার একটি সম্ভাব্য উপায় হিসেবে দেখছেন মুসা জামির।
শেখ নায়েফ বিন ঈদ আল থানির মালিকানাধীন এমবিএস গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট জানিয়েছে, তারা এরই মধ্যে ৪০০-৫০০ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে। সংস্থার প্রধান নির্বাহী নাদিম হুসেইন জানান, প্রকল্পটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে। এতে ৮ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার জায়গায় একটি আধুনিক হাব গড়ে তোলা হবে। এটি ৬ হাজার ৫০০ জনের আবাসন এবং ১৬ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বিশ্বব্যাপী ব্লকচেইন ও ডিজিটাল সম্পদের জন্য একটি আর্থিক মুক্তাঞ্চল হিসেবে প্রকল্পটির লক্ষ্য চার বছরের মধ্যে মালদ্বীপের জিডিপি তিন গুণ এবং পঞ্চম বছরে ১০০ কোটি ডলারের বেশি আয় নিশ্চিত করা।
সম্প্রতি মালদ্বীপ সরকার ও এমবিএস গ্লোবালের মধ্যে এ যৌথ প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
কয়েক মাস আগেই মালদ্বীপকে ঋণ খেলাপি হওয়া থেকে রক্ষা করতে ৭৬ কোটি ডলার জরুরি আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল ভারত। চলতি বছর মালদ্বীপকে প্রায় ৬০-৭০ কোটি ডলার এবং ২০২৬ সালে আরো ১০০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে, এর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার শরিয়াহভিত্তিক সুকুক ঋণ।
মালদ্বীপের অর্থমন্ত্রী মুসা জামির বলেন, ‘ভারত ও চীন গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হলেও নতুন এ আর্থিক কেন্দ্র মালদ্বীপের জন্য একটি ভিন্নধর্মী ও টেকসই অর্থনৈতিক মডেল হতে পারে।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ভৌগোলিক অবস্থান মালদ্বীপের পক্ষে কাজ করলেও দুবাই ও মরিশাসের মতো শক্তিশালী প্রতিযোগীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আঞ্চলিক আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে।