রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে নিম্ন আয়ের দেশগুলো খাদ্য ঝুঁকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্বব্যাংক। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর রেমিট্যান্সও কমে যাবে। এছাড়া বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটও তৈরি হবে। বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। করোনায় চাপে থাকা অর্থনীতিতে আরো চাপ বাড়াচ্ছে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি উসকে দিচ্ছে পণ্যমূল্য। কমে যাচ্ছে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা। ক্রমবর্ধমান নির্মাণ সামগ্রীর ব্যয় জ্বালানি তেল ও পরিবহন খরচে ঝুঁকি বাড়ছে ব্যবসায়। অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে নতুন বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কিছু উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ খাদ্যের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল। ইউরোপ, মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার অনেক দেশ তাদের আমদানি করা গমের ৭৫ শতাংশেরও বেশি নেয় রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। যুদ্ধের কারণে দেশগুলো রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানি করতে পারছে না। খাদ্য পরিবহনও ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে খাদ্যের দাম বাড়তে পারে, এমনকি তৈরি হতে পারে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাশিয়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদের বাজারেও একটি প্রধান শক্তি। এটি প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজারের এক-চতুর্থাংশ, কয়লার বাজারের ১৮ শতাংশ, প্লাটিনামের বাজারের ১৪ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের বাজারে ১১ শতাংশ জোগান দেয়। এই পণ্যগুলোর সরবরাহে বিরাট প্রভাব পড়েছে। এটি বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও কমিয়ে দেবে। বিশ্বব্যাংকের অনুমান, তেলের দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে। এটা চলতে থাকলে পণ্য-আমদানিকারী উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশে প্রবৃদ্ধি হতাশাজনকভাবে কমবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত যদি স্থায়ী হয় তবে চীন, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কের মতো তেল আমদানিকারক দেশগুলোতেও প্রবৃদ্ধি কমবে। বিশ্বব্যাংক বলছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ধারণা করা হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকায় ২ শতাংশ, তুরস্কে ২ থেকে ৩ শতাংশ এবং চীন ও ইন্দোনেশিয়ার প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু সংঘাতের কারণে দেশগুলো প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারবে না। বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ২০ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেন থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে। যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে বৃহত্তম গণ-অভিবাসন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মধ্য এশিয়ার অনেক দেশে সংঘাতের ফলে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।