ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর আপৎকালীন বিনিয়োগ হিসেবে কমেছে স্বর্ণের চাহিদা। এর প্রভাবে গতকাল মূল্যবান ধাতুটির দাম ১ শতাংশের বেশি কমে নেমেছে দুই সপ্তাহের সর্বনিম্নে। খবর রয়টার্স।
স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য নেমেছে ৩ হাজার ৩২৬ ডলার ৮৭ সেন্টে, যা গত ১১ জুনের পর সর্বনিম্ন। একই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম ১ দশমিক ৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সের মূল্য নেমেছে ৩ হাজার ৩৩৯ ডলার ৪০ সেন্টে।
আন্তর্জাতিক ব্রোকার কোম্পানি অ্যাকটিভ ট্রেডসের সিনিয়র অ্যানালিস্ট রিকার্ডো ইভানজেলিস্টা বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কমেছে স্বর্ণের চাহিদা। তাই গতকাল মূল্যবান ধাতুটির বাজারদর নিম্নমুখী হয়েছে। তবে শিগগিরই স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ডলারের নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা কম।’
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/784584984.jpg[/IMG]
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর মঙ্গলবার বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। এ সময় কমে যায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। তবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগে তিনি তেহরানে হামলার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, বছরের শেষ নাগাদ মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) প্রায় ৫৭ শতাংশীয় পয়েন্ট সুদহার কমাবে। স্বর্ণ বাজারের বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের হাউজ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিটির শুনানির জন্য অপেক্ষা করছেন।
অস্ট্রেলিয়াভিত্ত ক বহুজাতিক ব্যাংক ও আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এক বিশ্লেষণী নোটে জানিয়েছে, স্বর্ণের দাম কিছুটা স্থিতিশীল হয়ে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে। বছরের শেষ নাগাদ প্রতি আউন্সের দাম পৌঁছতে পারে ৩ হাজার ৬০০ ডলারে।
ব্যাংকটির বিশ্লেষকরা জানান, দীর্ঘমেয়াদে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে। এরপর ২০২৬ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি উন্নত হলে ধীরে ধীরে তা আবার কমে আসবে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি ব্যাংক অব আমেরিকার (বিওএফএ) বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, সামনের দিনগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ নিয়ে উদ্বেগ স্বর্ণের দাম বাড়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে। মার্কিন বাজেট ঘাটতির প্রভাবে এ সময় মূল্যবান ধাতুটির দাম পৌঁছতে পারে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলারে, যা বর্তমান দামের তুলনায় প্রায় ১৮ শতাংশ বেশি।
এদিকে অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যে স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম কমেছে দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি আউন্সের মূল্য নেমেছে ৩৬ ডলার ৮ সেন্টে। এ সময় প্লাটিনামের দাম ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি মূল্য পৌঁছে ১ হাজার ৩১২ ডলার ৫৮ সেন্টে। গতকাল প্যালাডিয়ামের দাম কমেছে দশমিক ৬ শতাংশ। আউন্সপ্রতি মূল্য নেমেছে ১ হাজার ৭০ ডলার ৪৯ সেন্টে।