যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বেঞ্চমার্ক সুদের হার ০.২৫ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে ৪.০০% - ৪.২৫% এর মধ্যে নির্ধারণ করেছে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/2022142502.jpg[/IMG]
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) বুধবার সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। গত ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো সুদের হার কমানোর ঘটনা এটি। ফেডের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব ও শ্রমবাজারের দুর্বলতার ঝুঁকি। বিশেষ করে, কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বৃদ্ধি, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া এবং অন্যান্য দুর্বলতার কারণে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও, তিনি যে হারে সুদের হার কমানোর দাবি করেছিলেন, তার চেয়ে অনেক কম। কেবল নতুন ফেড গভর্নর স্টিফেন মিরানই এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
দুই দিনের নীতি নির্ধারণী বৈঠকের পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বেঞ্চমার্ক সুদের হার ০.২৫ শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে ৪.০০% - ৪.২৫% এর মধ্যে নির্ধারণ করেছে। তিনি ইঙ্গিত দেন, অক্টোবর এবং ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী বৈঠকগুলোতেও সুদের হার কমানো হতে পারে। পাওয়েল জানান, দুর্বল শ্রমবাজার এখন তার এবং তার সহকর্মীদের কাছে প্রধান বিবেচ্য বিষয়। তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিমুক্ত কোনো পথ নেই। ঠিক কী করা উচিত তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। আমাদের একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির দিকেও নজর রাখতে হবে। আমরা সর্বোচ্চ কর্মসংস্থানকে উপেক্ষা করতে পারি না।’
পাওয়েল মনে করেন, বর্তমানে যে গতিতে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, তা বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখতে যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সংখ্যালঘুদের মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে। সামগ্রিকভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির হার কমে যাওয়ায় বোঝা যাচ্ছে যে, শ্রমবাজার দুর্বল হচ্ছে। আমরা চাই না এটি আরো দুর্বল হোক।’ ফেডের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্প ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং হোয়াইট হাউসের কাউন্সিল অব ইকোনমিক অ্যাডভাইজারস-এর প্রধান মিরানকে নতুন গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। মিরান মঙ্গলবার এই পদে শপথ নিয়ে ০.৫০ শতাংশ পয়েন্ট সুদের হার কমানোর পক্ষে মত দিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন।
নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান বড় মাত্রায় হার কমানোর পক্ষে ছিলেন। তিনি আধা শতাংশ সুদ কাটার প্রস্তাব দেন এবং বছর শেষে সুদের হার ৩%–এর নিচে নামানো উচিত বলে মত দেন। তবে তার অবস্থান সমর্থন পায়নি অন্য সদস্যদের কাছ থেকে।
নতুন অর্থনৈতিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, ফেডের নীতিনির্ধারকরা এ বছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৩ শতাংশে থাকবে বলে মনে করছেন, যা জুনের পূর্বাভাসের মতোই। বেকারত্বের হার ৪.৫ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.৪% থেকে বাড়িয়ে ১.৬% করা হয়েছে।
সুদের হার কমানোর ঘোষণার পর শেয়ার বাজার প্রথমে কিছুটা বাড়লেও পরে মিশ্র অবস্থায় শেষ হয়। ডলারের মূল্য কিছুটা বেড়েছে। ট্রেজারি ইয়েল্ডে তেমন পরিবর্তন হয়নি। রেট ফিউচার বাজারগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, অক্টোবরের শেষে ফেডের পরবর্তী বৈঠকে আবারো সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ৯০ শতাংশেরও বেশি।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বরখাস্ত করার চেষ্টা সত্ত্বেও লিসা কুক এই বৈঠকে অংশ নেন। দুটি আদালত তার পক্ষে রায় দেয়ায় তিনি এ সুযোগ পান।