জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। জোর দেয়া হচ্ছে প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণে নেয়া কার্যক্রমে। উন্নত দেশগুলো লক্ষ্য অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারলেও পিছিয়ে রয়েছে অনুন্নত দেশগুলো। এক্ষেত্রে দেশগুলোর সামনে অন্যতম বড় বাধা পর্বতসম ঋণের বোঝা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দরিদ্র দেশগুলোর বাজেটের বড় একটি অংশই চলে যায় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে। এরপর দেশগুলোর পক্ষে জলবায়ু সম্পর্কিত কার্যক্রমে ব্যয় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

দারিদ্র বিমোচনে কাজ করা শীর্ষস্থানীয় একটি দাতব্য সংস্থার মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার চেয়ে নিম্ন আয়ের দেশগুলো ঋণ পরিশোধে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করে। জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র ৩৪টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বছরে ৫৪০ কোটি ডলার ব্যয় করছে। যেখানে ঋণ পরিশোধে এ দেশগুলোর ব্যয়ের পরিমাণ ২ হাজার ৯৪০ কোটি ডলার।

উগান্ডার ঘোষণা অনুযায়ী, জলবায়ু সম্পর্কিত জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০১৬-২০ সালের মধ্যে দেশটির জলবায়ু প্রকল্পগুলোয় ৫৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ব্যয় করার কথা ছিল। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতাদের তহবিল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পূর্ব আফ্রিকার দেশটি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধেই বার্ষিক বাজেটের বেশির ভাগ অর্থ ব্যয় করে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ দেশটির মোট ঋণের বোঝা ৭৩ কোটি ৯০ লাখ এবং ২০২৫ সাল নাগাদ ১৩৫ কোটি ডলারে উন্নীত হবে।

তবে উগান্ডা একমাত্র নিম্ন আয়ের দেশ নয়, যারা ঋণের সুদ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত নগদ অর্থের সন্ধান করছে। জুবিলি ডেবট ক্যাম্পেইনের প্রাক্কলন, ২০২৫ সালের মধ্যে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৩৪টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সীমিত করার চেয়ে ঋণ পরিশোধে সাতগুণ বেশি ব্যয় করবে।

দাতব্য সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হাইডি চাও বলেন, চলতি সপ্তাহের শেষে গ্লাসগোয় কপ২৬ জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতার ওপর ঋণের প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরবে। দেশগুলো এমন একসময়ে ধনী দেশ, ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে কোটি কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধের প্রভাবটি তুলে ধরছে, যখন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দেশগুলোর বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রয়োজন। তিনি বলেন, অনুদানের মাধ্যমে জলবায়ু তহবিল সরবরাহের পাশাপাশি ঋণও বাতিল করতে হবে।

বণিক বার্তা