[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1445785478.jpg[/IMG]
চীনের আবাসন খাতের দুর্দশা যেন কাটছেই না। চলতি বছর আবাসিক সম্পত্তি খাতের অবস্থা আরো খারাপ হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ বাড়ির ক্রেতারা বেশ সতর্কভাবে পদক্ষেপ ফেলছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আবাসন খাতের সংকট নিয়ে যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, ২০২২ সালের বাস্তব অবস্থা তাকেও ছাড়িয়ে যাবে। এক জরিপে দেখা গিয়েছে, নতুন বাড়ির দাম ২০২২ সালে ১ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে। গত ২৯ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ পূর্বাভাস হিসাব করা হয়। এর আগে মে মাসে ত্রৈমাসিক সমীক্ষায় বিশ্লেষকরা প্রত্যাশা করেছিলেন, চলতি বছর হয়তো বাড়ির দাম অপরিবর্তিতই থাকবে।
২০২২ সালে সম্পত্তি বিক্রির ক্ষেত্রে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ অতিমন্দা দেখা দিয়েছে, যা মে মাসের জরিপে পাওয়া ফলাফলের চেয়ে অনেক বেশি। চীনের অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশই আবাসন খাতসংশ্লিষ্ট। ২০২০ সালের গ্রীষ্ম থেকেই এ খাতটি নানা ধরনের বিপর্যয় মোকাবেলা করছে। সে সময় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এ খাতের জন্য বরাদ্দ অতিরিক্ত সুবিধা বন্ধ করে দিতে শুরু করে। অবশ্য এর জন্য দায়ীও ছিলেন আবাসন খাতের কিছু ব্যবসায়ী। তারা ঋণ পরিশোধে ও প্রকল্প বাস্তবায়নে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছিলেন। যেহেতু আবাসন প্রকল্পগুলোর কাজ থমকে ছিল, তাই ক্রেতারাও মূল্য পরিশোধ করছিলেন না। ফলে খাতজুড়ে রীতিমতো বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। বিপর্যস্ত এ খাতটি সে সময় থেকেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির জন্য রীতিমতো বোঝায় পরিণত হয়। এমনিতেই কভিড-১৯ সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে চীনের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ওপর আবাসন খাতটি হয়ে উঠেছে আরো বড় চিন্তার কারণ।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান মুডি’সের বিশ্লেষক ড্যানিয়েল ঝৌও বলেন, চীনের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং প্রকল্পের সম্পূর্ণতা নিয়ে যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে তা আগামী ৬ থেকে ১২ মাস বাড়ির ক্রেতাদের মধ্যে বিরাজ করবে। কভিড-১৯ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কারণে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতায় ব্যবসা ও বেচাকেনার যে ক্ষতি হয়েছে তাও ভোক্তার মনোভাব নষ্ট করেছে।
এরই মধ্যে আবাসন খাতের উন্নতির লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দেশটির সরকার। অন্তত ২০০ শহরের আবাসন খাতকে সহায়তা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নগদ সহায়তা এবং বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ছোট আকারের কিস্তি পরিশোধের সুবিধা। চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সুদের হার কমিয়েছে। গত ২২ আগস্ট থেকে বাড়ি ক্রেতাদের জন্য এ সুবিধা চালু করা হয়। চায়না ইনডেক্স একাডেমির বিশ্লেষক হুয়াং ইউ বলেন, আবাসন খাতের স্থিতিশীলতার জন্য বেশকিছু নীতি প্রণয়ন করা প্রয়োজন। যেমন দ্বিতীয় সারির শহরগুলোর জন্য সম্পত্তি পুনঃবিক্রি ও ঋণের ক্ষেত্রে নিয়মে কিছু শিথিলতা আনা প্রয়োজন। কিছু আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জন্য আর্থিক সহায়তা দেয়াও প্রয়োজন। যাতে তারা অসমাপ্ত প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ করতে পারে।
সব ঠিক থাকলে আগামী বছর বাড়ির দামে কিছুটা উন্নতি হবে বলে প্রত্যাশা করছেন অর্থনীতিবিদরা।