[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1274407189.jpg[/IMG]
অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করে তুলতে কয়েক বছর ধরেই কাজ করছে ওমান। জ্বালানি তেলনির্ভরতা কমিয়ে অর্থনীতির অন্য ক্ষেত্রগুলো প্রসারিত করতে চাইছে উপসাগরীয় দেশটি। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ২০২১-২৩ সালের মধ্যে পর্যটন খাতে ৩০০ কোটি ওমানি রিয়াল (৭৮০ কোটি ডলার) বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য নেয়া হয়েছিল। তবে এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে দেশটির পর্যটন খাত। ওমানের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পর্যটন মন্ত্রী সেলিম আল মাহরুকির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ওমান নিউজ এজেন্সি (ওএনএ) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত দেশটি ৪৪০ কোটি ডলার পর্যটন বিনিয়োগ পেয়েছে। মন্ত্রী বলেছেন, ওমানের পর্যটন উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে প্রশাসনিক ব্যবস্থা তৈরি, আইনি কাঠামোর আধুনিকায়ন, পর্যটন আইন ও নির্বাহী প্রবিধানগুলো হালনাগাদ করা এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাস-ঐতিহ্য আইন ও বিনিয়োগের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রণোদনা দিতে এক চুক্তি সম্পর্কিত কাঠামোর সংশোধন করা।
অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে এবং জ্বালানি তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভিশন ২০৪০ গ্রহণ করেছে ওমান। এরই অংশ হিসেবে পর্যটন খাতকে বিকশিত করতে চাইছে দেশটি। উপসাগরীয় প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় ওমান ছোট অপরিশোধিত জ্বালানি উত্তোলনকারী। মহামারীতে জ্বালানি তেলের চাহিদা এবং ২০১৪ সালে দাম পতনের কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল দেশটি। বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য নিয়মিত ওঠানামা করায় হঠাৎ করে সংকটে পড়ে যাওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটি জ্বালানি নির্ভরশীলতা কমাতে উদ্যোগী হয়েছে।
ওমানের ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্ট্যাটিস্টিকসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, মে মাসে দেশটিতে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা ২ লাখ ১৬ হাজার ৫৪৮-এ পৌঁছেছে। এ সংখ্যা গত বছরের একই মাসে ৬ হাজার ৩৬ জনের তুলনায় ৩৫ গুণ বেশি। এ পর্যটকদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি এসেছেন উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে। এর বাইরে ওমান ভ্রমণ করা শীর্ষ পাঁচে রয়েছে অন্যান্য আরব রাষ্ট্র, এশিয়া, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির তিন তারকা থেকে পাঁচ তারকা হোটেলে অতিথির সংখ্যা এক বছর আগের তুলনায় মে মাসে দ্বিগুণ হয়ে ১ লাখ ৪০ হাজারে পৌঁছেছে। এ সময়ে হোটেলগুলোয় ফাঁকা সিটের বিপরীতে পর্যটকের সংখ্যা ৪২ দশমিক ৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যেখানে গত বছরের একই সময়ে এ হার ছিল ২৪ শতাংশ। ফলে এ সময়ে হোটেলগুলোর আয়ও তিন গুণের বেশি বেড়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ও এক বছর আগের ৪০ লাখ থেকে বেড়ে মে মাসে ১ কোটি ৩০ লাখ রিয়ালে পৌঁছেছে। ২০৪০ সালের মধ্যে পর্যটক থেকে বার্ষিক ৯০০ কোটি রিয়াল আয়ের লক্ষ্য ওমানের। মহামারীর আগে ২০১৯ সালে এ খাতের আয় ছিল ১২০ কোটি রিয়াল।
গত মাসে গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশন ২০২২-২৩ সালে ওমানের পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধারে একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছিল। ২০২৪-২৬ সালের মধ্যে এ খাতে মধ্যমেয়াদে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফিচ সলিউশন জানিয়েছে, কভিডজনিত স্থবিরতা কাটিয়ে ২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে দেশটির পর্যটন খাত উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার হয়েছে। আসন্ন বছরগুলোয় এ খাতে পুনরুদ্ধারের গতি আরো বেগবান হবে।