বৈশ্বিক চিপ সংকটের কারণে তৃতীয় প্রান্তিকে ফক্সওয়াগন ও স্টেলান্টিসের গাড়ি নির্মাণ কমেছে ১৪ লাখ ইউনিট। সম্প্রতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইউরোপের শীর্ষ দুই গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি। তবে তারা এও জানিয়েছে, ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তাদের কারখানা কার্যক্রম। ইউরোপের শীর্ষ এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি ফক্সওয়াগন জানায়, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে কম পরিচালন মুনাফা করেছেন তারা। জার্মান এ গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি বলছে, তারা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আট লাখ কম গাড়ি নির্মাণ করেছে, যা ২০২০ সালের চেয়ে ৩৫ শতাংশ কম।
অন্যদিকে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি স্টেলান্টিস বলছে, তারা জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ছয় লাখ কম গাড়ি নির্মাণ করেছে। চিপস্বল্পতার কারণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৩০ শতাংশ কম গাড়ি নির্মাণ করেছে স্টেলান্টিস। অক্টোবরে চিপ সরবরাহে কিছুটা উন্নতি হয়েছে এবং চতুর্থ প্রান্তিকে এ ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্টেলান্টিসের ফাইন্যান্স প্রধান রিচার্ড পালমার। তবে সরবরাহ চেইনে চলমান সংকট বিবেচনায় নিয়ে অটো চিপের স্বল্পতা নিয়ে পূর্বাভাস দেয়া কঠিন। ২০২২ সালে যে বৃহদাকারে গাড়ি উৎপাদন বাড়বে—এমনটা আশা করছেন না পালমার। চলতি বছরের আয়ের পূর্বাভাস কমিয়েছে স্টেলান্টিস।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/536945019.jpg[/IMG]
চলতি বছরের শুরুতে ফিয়াট ক্রাইসলার ও ফ্রান্সের পিএসএর একীভবনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ব্র্যান্ড স্টেলান্টিস। চলতি বছরে সমন্বিত মুনাফা পূর্বাভাস ১০ শতাংশ। গত বছর করোনার হানায় কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হওয়া গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিগুলোকে এখন চিপ সরবরাহ নিয়ে ভোক্তা ইলেকট্রনিকস খাতের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। জাপানের চিপ কারখানায় আগুন লাগা থেকে শুরু করে মালয়েশিয়ায় করোনা লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরবরাহ চেইন। বিভিন্ন শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ এ চিপের কারণে অনেক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিই তাদের কারখানা বন্ধ রাখছে বা গাড়ি নির্মাণ কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে গাড়ির চাহিদা থাকায় নতুন ও পুরনো গাড়ির দাম বেড়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ স্টেলান্টিসের নতুন গাড়ি সরবরাহ আগের বছরের চেয়ে ৪২ শতাংশ কমেছে। ২০২২ সালের আগে গাড়ি নির্মাণ স্বাভাবিক হওয়ার আশা করছে না ইউরোপীয় এ গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিটি।
তৃতীয় প্রান্তিকে ফক্সওয়াগনের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ২৮০ কোটি ইউরো বা ৩৩০ কোটি ডলার, গত বছরের চেয়ে যা কমেছে ১২ শতাংশ। এমনকি রেফিনিটিভ ডাটার পূর্বাভাসের ২৯৯ কোটি ইউরোর চেয়ে কম মুনাফা করেছে জার্মানির এ গাড়ি নির্মাতা জায়ান্ট। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণে চলতি দশকের মাঝামাঝি ইলোন মাস্কের টেসলাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে ফক্সওয়াগন। ফক্সওয়াগনের ফাইন্যান্স প্রধান আহনো আঁলি জানান, চিপস্বল্পতায় এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বাজার অস্থিরতায় আমাদের গাড়ি নির্মাণ কঠিন ঠেকছে। তবে চতুর্থ প্রান্তিকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশাবাদী। জেনারেল মোটরস (জিএম) ও রেনোঁর মতো অন্যান্য শীর্ষ গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিও চিপস্বল্পতায় ধুঁকছে।