সদ্য বিদায়ী বছরের প্রথম ভাগে কভিড-১৯ মহামারীর চলমান প্রবাহের মাঝেও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছিল দেশগুলোয়। তবে আবারো কভিডের সংক্রমণ বাড়ায় বছরের দ্বিতীয়ার্ধে পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। এছাড়া বছরজুড়ে ছিল সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা ও শ্রমবাজারে সংকট। তবে মহামারীই নতুন বছরের একমাত্র চ্যালেঞ্জ নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর বিশ্ব অর্থনীতিতে আরো বেশকিছু হুমকি রয়েছে। খবর ডয়েচে ভ্যালে।

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম শ্লথগতিতে হওয়ায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) অর্থনীতিবিদরা অক্টোবর ও ডিসেম্বরে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে এনেছেন। বিশেষজ্ঞরা প্রবৃদ্ধির গতি ফেরাতে নতুন বছরে কভিডের টিকাদান কার্যক্রম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

গত নভেম্বরে দক্ষিণ আমেরিকায় ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব হয়। কভিডের সবচেয়ে সংক্রমণযোগ্য ধরনটির কারণে ধস নামে বিশ্ব অর্থনীতি ও পণ্যবাজারে। এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২২ সালে ওমিক্রনের চেয়ে বড় উদ্বেগ হবে এর থেকেও শক্তিশালী নতুন কোনো ধরনের আবির্ভাব। এ বিষয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপিনাথ বলেছেন, পূর্বাভাস অনুযায়ী মহামারীর প্রভাব আরো বেশি স্থায়ী হলে আগামী ৫ বছরে বৈশ্বিক জিডিপি ৫ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার হারাতে পারে। নতুন বছরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিটি দেশের ৭০ শতাংশ নাগরিককে অবশ্যই টিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বিদায়ী বছরে সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা বিরাজমান ছিল। কনটেইনারের অভাবসহ জাহাজীকরণেও সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে উৎপাদকদের। ফলে পণ্য ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতেও দেরি হয়। তাই বাজারে পণ্যের চাহিদাও ছিল। এর কারণে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অটোমোবাইল শিল্পে। সেমিকন্ডাক্টরসহ বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশের সরবরাহ কম থাকায় অটোমোবাইল প্রস্তুতকারকরা উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়। তবে জাহাজীকরণ খরচ কমে সরবরাহ বৃদ্ধি হলেও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ২০২২ সালেও সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা থাকবে।

বণিক বার্তা