মহামারীর বিপর্যয় অনেকটা কাটিয়ে উঠেছে বিশ্ব অর্থনীতি। গত বছর রেকর্ড অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দেখা পায় অনেক দেশ। এ অবস্থায় গত মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন সব হিসাব যেন পাল্টে দিয়েছে। শঙ্কা দেখা দিয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে যাওয়ার। যদিও আগের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাই অব্যাহত রেখেছে বিশ্বের শীর্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। সংস্থাগুলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রেখেছে। খবর রয়টার্স।

গত বছর থেকেই বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান রয়েছে মূল্যস্ফীতির পারদ। কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের পর তুমুল ভোক্তা চাহিদা সরবরাহ ব্যবস্থায় চাপ তৈরি করে। চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে পণ্য না পাওয়ায় বেড়ে গেছে দাম। জ্বালানি থেকে খাদ্য পর্যন্ত প্রতিটি পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এর মধ্যে ইউক্রেন সংকট মূল্যস্ফীতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে জ্বালানির বাজার। এ অবস্থায় সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায় অটুট রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো।

চলমান ভূরাজনৈতিক সংকটে বৃহৎ অর্থনৈতিক ধাক্কার ঝুঁকিতে রয়েছে ইউরোপ। তবে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) স্পষ্ট করে দিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি ইউরো অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। যুদ্ধকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে অভিহিত করেছে ইসিবি। পাশাপাশি ব্যাংকটি জানিয়েছে, এ অবস্থা প্রবৃদ্ধিকে ধীর করে দিতে পারে। তবে এটি তাত্ক্ষণিকভাবে মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলছে। এজন্য ইসিবি চলতি বছরের মাঝামাঝিতে বাজারে নগদ অর্থ সরবরাহ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। বছরের শেষ দিকে ঋণে সুদের হার বাড়ানো হবে বলেও জানানো হয়েছে। এমনটা করলে এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরো অঞ্চলে সুদের হার বাড়বে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসিবি নীতিনির্ধারক বলেন, আপনি যেকোনো উপায়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে পারেন। তবে এ হার ক্রমবর্ধমান এবং আমাদের লক্ষ্যের অনেক উপরে রয়েছে। মূল্যস্ফীতিকে ২ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য ছিল এবং আমরা এটি করতে ব্যর্থ হয়েছি।

বণিক বার্তা