বিশ্বের দ্রততম সুপারকম্পিউটার ‘ইওস (Eos)’-এর নির্মাণ কাজ চলছে বলে ঘোষণা দিয়েছে এনভিডিয়া। পাশাপাশি, নতুন ‘এইচ১০০’ জিপিইউ এবং ‘গ্রেস সিপিইউ সুপারচিপ’-এর ঘোষণা দিয়েছে চিপ নির্মাণে শীর্ষ প্রতিষ্ঠানটি। এনভিডিয়া নতুন কম্পিউটার চিপ আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির গতি বাড়াতে সক্ষম এমন নতুন প্রযুক্তির ঘোষণা দিয়েছে মঙ্গলবার। নতুন ঘোষণার মাধ্যমে লাভজনক ডেটা সেন্টার ব্যবসা খাতে এনভিডিয়া প্রতিযোগিতা বাড়ালো বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/219611008.jpg[/IMG]
মঙ্গলবার নতুন ‘এইচ১০০’ জিপিইউ দেখিয়েছে এনভিডিয়া। এআই অবকাঠামোর কেন্দ্রে থাকবে এটি। এ ছাড়াও, নতুন ‘গ্রেস সিপিইউ সুপারচিপ’-এর নানা তথ্য দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান এআরএম-এর তৈরি কাঠামোর ওপর নির্ভর করে চিপগুলোর নকশা করেছে মার্কিন এই নির্মাতা। অধিগ্রহণ চুক্তি বাতিল হওয়ার পর এআরএমের প্রযুক্তিনির্ভর এনভিডিয়ার প্রথম চিপ এটি। এ ছাড়াও, নতুন ‘ইওএস’ সুপারকম্পিউটারের ঘোষণা দিয়েছে এনভিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, বিশ্বের দ্রুততম এআই সিস্টেম হতে যাচ্ছে সুপারকম্পিউটারটি এটি চালু হবে এ বছরের শেষ নাগাদ। “ডেটা সেন্টারগুলো এআই কারখানায় পরিণত হচ্ছে – তথ্য পেতে পাহাড় সমান ডেটা প্রসেস করা হচ্ছে”। এমন পরিস্থিতিতে এইচ১০০ জিপিইউকে এআই অবকাঠামোর “ইঞ্জিন” বলে আখ্যা দিয়েছেন এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং। অনলাইনে আয়োজিত এআই নির্মাতাদের সম্মেলনে এনভিডিয়া বলেছে, একত্রে নতুন প্রযুক্তিগুলো ডেটা কম্পিউটিং-এর সময় কয়েক সপ্তাহ থেকে কমিয়ে কয়েক দিনে নিয়ে আসবে। এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো কাজগুলোও আছে এই প্রক্রিয়ার অধীনে।
এআই ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি বিভিন্ন খাতে ব্যবহার করছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। পরবর্তী ভিডিওর পরামর্শ থেকে শুরু করে, মোবাইল ফোনে টিভি দেখা, এমনকি নতুন ওষুধের আবিষ্কারেও ভূমিকা রাখছে এআই প্রযুক্তি। এমন পরিস্থিতিতে এনভিডিয়ার সর্বশেষ ঘোষণা নিয়ে প্রযুক্তিবাজারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘টেকঅ্যানালাইসিস রিসার্চ’-এর প্রধান বিশ্লেষক বব ও’ডানেল বলেন “সর্বশেষ ঘোষণা থেকে এটা নিশ্চিত যে এনভিডিয়া ক্লাউড কম্পিউটিং বাজারে ইনটেল এবং এএমডির জন্য বড় হুমকিতে পরিণত হচ্ছে।”
এতোদিন, ডেটা সেন্টারের জন্য শীর্ষ সিপিইউ নির্মাতার অবস্থানটি নিজের দখলে রেখেছিল ইনটেল। কিন্তু, সাম্প্রতিক সময়ে এই থাতে শক্ত প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু, এইচ১০০ চিপের বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ওমডিয়া’র ক্লাউড এবং ডেটা সেন্টার রিসার্চ বিভাগের প্রধান ভ্লাদ গালাবভ। বিদ্যুৎ খরচের কারণে বাজারে চিপটির চাহিদা সীমিত থাকতে পারে মনে করেন তিনি। তবে, এনভিডিয়ার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা কোলেট ক্রেসের মতে, এআই প্রযুক্তিতে আরও সামনে নিয়ে যাচ্ছে নতুন চিপগুলো। গেইমিং থেকে শুরু করে এন্টারপ্রাইজ ব্যবসা খাতে তার প্রতিষ্ঠানের এক লাখ কোটি ডলারের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। ভবিষ্যতে নিজের সফটওয়্যার ব্যবসা থেকেও আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছে এনভিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটি ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ব্যবহার করার কারণেই তাদের কম্পিউটার চিপ ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
“এর মধ্যেই আমাদের এন্টারপ্রাইজে সফটওয়্যার বিক্রি করছি আমরা। বর্তমানে এর আকার কয়েক কোটি ডলার এবং আমরা মনে করি যে আমাদের জন্য ব্যবসা প্রসারের সুযোগ এটি,” বলেন ক্রেস। সামনের দিনগুলোতে যন্ত্রাংশের সরবরাহে সীমাবদ্ধতা এবং উৎপাদন খরচ বাড়লেও সফটওয়্যার থেকে এনভিডিয়ার আয় বাড়বে বলে আশার কথা জানিয়েছেন তিনি। অটোমোবাইল খাতকে সামনে এগিয়ে নিতেও সফটওয়্যার চালকের ভূমিকায় থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন হুয়াং। “শত-কোটি ডলারের ব্যবসা হওয়ার পথে রয়েছে অটো” – বলেন তিনি।
মার্চ মাসেই স্বচালিত যানের জন্য নিজস্ব নকশার কম্পিউটার ‘ড্রাইভ ওরিন’ সরবরাহ করা শুরু করেছে এনভিডিয়া। এ ছাড়াও চীনের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা ‘বিওয়াইডি কোম্পানি লিমিডেট’ এবং বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা ‘লুসিড মোটর্স’ তাদের পরবর্তী প্রজন্মের গাড়িগুলোতে ‘এনভিডিয়া ড্রাইভ’ ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছেন হুয়াং।