বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বাড়াতে শুরু করেছে। উন্নত দেশগুলো এ হার বাড়াচ্ছে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করার জন্য। অন্যদিকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছে নিজেদের মুদ্রাকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য। ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে সুদের হার ৮০ বার বেড়েছে। এর মধ্যে উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোয় বেড়েছে ৬০ বার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২০ সালে যখন বিশ্বে মহামারীর আঘাত দেখা দিল, তখন কিন্তু দেশগুলো অর্থনীতিকে সহায়তা করতে সুদহার কমিয়ে দিয়েছিল। তবে এখন মহামারী-পরবর্তী অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও সরবরাহ চেইন সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো আবার সুদহার বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে।
অবশ্য এর প্রতিক্রিয়াও দেখা যেতে শুরু করেছে। সহজ মুদ্রানীতির কারণে যে অর্থ পুঁজিবাজার বা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ করা হয়েছিল, সেগুলোই এখন নিরাপদ বিনিয়োগে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এ পরিস্থিতি অর্থনীতির জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে ৮০ বার সুদের হার বৃদ্ধির যে প্রবণতা, তা গত বছর একই সময়ের তুলনায় সাত গুণ বেশি। ২০১১ সালের সঙ্গে তুলনা করলে ৫৬ গুণ বেশি। সে সময় থেকেই মূলত এশিয়ায় মূল্যস্ফীতি শুরু হয়েছে। ২০০৬ সালের তুলনায় এ বছর সুদের হার ৬৫ গুণ বেড়েছে। বিশ্বের ৩৮টি দেশ ও অঞ্চলের সুদের হার বৃদ্ধির প্রবণতাকে সন্নিবেশিত করেছে নিক্কেই। সেখানে দেখা গিয়েছে, চীনে সুদের হার কমানোর বিষয়টি তুলনামূলক সীমিত। দেশটিতে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে একটা বড় সময় লকডাউন ছিল, যা চীনের অর্থনীতিকে অনেক বেশি অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিয়েছিল। আরেকটি দেশ হলো রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের কারণে যে দেশটি এখন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কবলে।
জানুয়ারি-জুন পর্যন্ত উন্নত দেশগুলোয় ২০ বার বেড়েছে সুদের হার। এর আগে এ রেকর্ড ছিল ২০০৬ সালে। সে সময় ২৮ বার সুদের হার বাড়ানো হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ গত মার্চে সুদের হার বাড়াতে শুরু করে। চলতি সপ্তাহে ৭৫টি মূল পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে সুদের হার বাড়ানো হয়, যা ১৯৯৪ সালের পর সর্বোচ্চে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/735291852.jpg[/IMG]