চলতি বছরে বৈশ্বিক পিসি বিক্রি ৯ দশমিক ৫ শতাংশ কমবে। যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটভিত্তি বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান গার্টনারের সাম্প্রতিক পূর্বাভাসে এ তথ্য উঠে এসেছে। পিসি বাজারের সব সেগমেন্টেই বিক্রি লক্ষণীয়ভাবে কমবে বলে মনে করে গার্টনার। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে ক্রোমবুক সেগমেন্টটি। গত বছর ৩ লাখ ৪২ হাজার ইউনিট ক্রোমবুক বিক্রি হয়েছিল, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি ছিল। কিন্তু চলতি বছরে ৩ লাখ ১০ হাজার ইউনিট ক্রোমবুক বিক্রির পূর্বাভাস গার্টনারের। গত বছরের তুলনায় যা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ কম। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও সরবরাহ চেইন সংকটের কারণে পিসি বিক্রিতে প্রভাব পড়তে যাচ্ছে।
গার্টনারের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক রঞ্জিত অ্যাটওয়াল বলেন, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, উচ্চমূল্যস্ফীতি, মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা ও সরবরাহ চেইন সংকটের কারণে ভোক্তা ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পিসির চাহিদা কমেছে। চলতি বছরে ভোক্তা পিসি চাহিদা ১৩ দশমিক ১ শতাংশ কমতে পারে। অঞ্চলওয়ারি ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় পিসি বিক্রি ১৪ শতাংশ কমবে। ভোক্তা চাহিদায় শ্লথগতিতে ২০২২ সালে এ অঞ্চলে রেকর্ড সর্বনিম্ন পিসি বিক্রি হবে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও চীনা লকডাউনে যন্ত্রাংশ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটনায় এ অঞ্চলে ভোক্তা চাহিদায় প্রভাব পড়েছে। ২০২২ সালে বৈশ্বিক ডিভাইস বিক্রি (পিসি, ট্যাবলেট ও সেলফোন) ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমতে যাচ্ছে। বৃহত্তর চীন ও পূর্ব ইউরোপে বিক্রিতে দুই অংকের সংকোচন হতে পারে। চলতি বছরে সার্বিক ডিভাইস বিক্রি হতে পারে ১৯০ কোটি ৭০ লাখ, গত বছরের চেয়ে যা ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমতে পারে।
চলতি বছরে বৈশ্বিক মোবাইল ফোনের চালান কমতে পারে ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে স্মার্টফোনের চালান কমতে পারে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। স্মার্টফোন বিক্রিতে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে চীন। চলতি বছরে দেশটিতে স্মার্টফোন বিক্রি ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ কমতে পারে। দুই বছর ধরেই ফাইভজি ফোন গ্রহণে এগিয়ে ছিল বৃহত্তর চীন। গত বছর এ সেগেমেন্ট ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। কিন্তু সার্বিক স্মার্টফোন বাজার ধাক্কা খাওয়ার ফলে ফাইভজি স্মার্টফোন চলতি বছরে ২ শতাংশ কমতে পারে। গার্টনারের বিশ্লেষক অ্যাটওয়াল বলেন, চলতি বছরের শুরুতে আশা করা হচ্ছিল চীনের ফাইভজি ফোনের বাজারে দুই অংকের প্রবৃদ্ধি হবে। চীনের জিরো টলারেন্স কভিড-১৯ পলিসির ফলে কয়েক দফা লকডাউনে দেশটির ম্যানুফ্যাকচারিং খাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ভোক্তা মনোভাব পাল্টে গিয়েছে। অনেক ব্যবহারকারীই ফাইভজি স্মার্টফোনসহ অগুরুত্বপূর্ণ পণ্য ক্রয় বন্ধ করে দিয়েছে।
২০২২ সালে বৈশ্বিক ৭১ কোটি ইউনিট ফাইভজি ফোন বিক্রি হবে বলে পূর্বাভাস গার্টনারের। ২০২১ সালের চেয়ে তা ২৯ শতাংশ বেশি হলেও পূর্বের প্রাক্কলনের চেয়ে কম। চলতি বছরের শুরুতে ৯ কোটি ৫০ লাখ ইউনিট ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, যা আগের বছরের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি। ২০২৩ সালে ফাইভজি স্মার্টফোন সেগমেন্টে বেশ চাঙ্গা প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করে গার্টনার। এ সময় অনেকে ফোরজি স্মার্টফোন ফেলে ফাইভজি স্মার্টফোন হাতে নেবে।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1542848843.jpg[/IMG]