মহামারীর শুরু থেকেই জিরো কভিড নীতি অব্যাহত রেখেছে চীন। প্রায় আড়াই বছর ধরে বারবার লকডাউনসহ কভিডজনিত বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে দেশটি। ফলে দুর্বল হয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে ভোক্তা ব্যয়। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সরবরাহ ব্যবস্থা। মন্দা দেখা দিয়েছে ঋণে জর্জরিত দেশটির আবাসন খাতেও। সব মিলিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শ্লথগতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অবকাঠামো ব্যয়কে উৎসাহিত করতে ৫০ হাজার কোটি ইউয়ান (৭ হাজার ৪৬৯ কোটি ডলার) অবকাঠামো বিনিয়োগ তহবিল গঠন করবে চীন।

পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত দুজন ব্যক্তি গতকাল রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তহবিলটি গঠন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও সূত্র দুটি বিস্তারিত কোনো বিবরণ প্রকাশ করেনি। আবার অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশনও রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি।

সম্প্রতি কভিডজনিত লকডাউন শেষে নানা ধরনের অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করছে চীন। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটি এখনো জিরো কভিড নীতি থেকে সরে আসেনি। ফলে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রায় ৫ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পাওয়া দেশটির জন্য কঠিন হবে।

এদিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে বেশির ভাগ সহায়তামূলক পদক্ষেপ চলতি বছর কভিডের প্রভাব মোকাবেলার জন্য আর্থিক প্রণোদনা থেকে এসেছে। অর্থায়নের খরচ কমাতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি সহজ করে চলেছে। চাকরি হারানো ও আয় কমে যাওয়ার মধ্যে চীনা ভোক্তারা ব্যয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। কারণ রফতানিকারকরা সম্ভাব্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মুখে পড়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়ে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ, উচ্চ কাঁচামালের ব্যয় এবং সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতাগুলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস পূরণে ঝুঁকি তৈরি করেছে।

বণিক বার্তা