২০২১ সালের শুরুর দিক থেকেই যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির গতি ঊর্ধ্বমুখী। কভিডজনিত প্রতিবন্ধকতা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে পণ্য ও সেবার মূল্য। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন নতুন করে প্রতিবন্ধকতা যুক্ত করে। সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত হয় জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের মূল্য। এ ধারাবাহিকতায় গত মাসে ব্রিটিশ মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এ হার দেশটির গত চার দশকের ইতিহাসে দেখা যায়নি। এ অবস্থায় বেতন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের ব্যবধান বেড়ে ব্রিটিশদের জীবনমানে তীব্র পতন দেখা দিয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ানের খবর অনুসারে, পেট্রল, ডিজেল ও খাদ্যের মূল্য যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হারকে ৪০ বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় ঠেলে দিয়েছে। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের (ওএনএস) পরিসংখ্যান অনুসারে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের পরিমাপ ভোক্তা মূল্যসূচক জুনে ৯ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। মে মাসেও এ হার ৯ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। এর আগে ২০২১ সালের জুনে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ২ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর টানা নয় মাস ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে এ হার। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড আশঙ্কা করছে, চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে জ্বালানির মূল্য আরো বাড়লে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।

এদিকে ভোগ্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান দাম ব্রিটিশদের প্রকৃত মজুরিও কমিয়ে দিয়েছে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এ মজুরি মে পর্যন্ত তিন মাসে ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ কম ছিল। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ মাসে প্রকৃত মজুরিতে পতন অব্যাহত রয়েছে। ২০০১ সালে আধুনিক রেকর্ড শুরু হওয়ার পর এটিই সর্বোচ্চ পতন। ওএনএসের তথ্য অনুসারে, বোনাস ব্যতীত বেতন বাড়ার হার ৪ দশমিক ২ থেকে সামান্য বেড়ে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ হয়েছে। যেখানে মূল্যবৃদ্ধির হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি। এ অবস্থায় নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলো অতিরিক্ত খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।

বণিক বার্তা