চীনের উৎপাদন মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ে ১৭ মাসের সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। এ পরিসংখ্যান বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের চাপকে অস্বীকার করেছে। রিয়েল এস্টেট খাতে ধীরগতির কার্যক্রম কাঁচামালের চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন মূল্যস্ফীতির গতি শ্লথ হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও মাংসের সরবরাহ সমস্যার কারণে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি দুই বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছেছে। খবর রয়টার্স।

গতকাল ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (এনবিএস) জানিয়েছে, জুলাইয়ে উৎপাদক মূল্য সূচক (পিপিআই) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে জুনেও এ বাড়ার হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ ছিল। গত মাসের পিপিআই বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ৪ দশমিক ৮ শতাংশের চেয়েও ধীর হয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে উৎপাদক মূল্যবৃদ্ধি গত বছরের অক্টোবরে ২৬ বছরের সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছার পর মন্থর হয়েছে। উৎপাদন মূল্যস্ফীতিতে এমন শ্লথগতি দেশটির নীতিনির্ধারকদের কিছুটা অবকাশ করে দিয়েছে। যখন রেকর্ড সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশির ভাগ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আক্রমণাত্মকভাবে সুদের হার বাড়িয়ে চলেছে।

যদিও চীনে এ পরিস্থিতির জন্য বিশ্লেষকরা মূলত দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদাকে দায়ী করেছেন। জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী হওয়ার মতো বিশ্বজুড়ে মূল্যের চাপ কিছুটা ধীর হওয়ার বিষয়টিও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের চীনা অর্থনীতিবিদ জিচুন হুয়াং একটি গবেষণা নোটে বলেন, পণ্যের দামে পতন, সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা সহজ হওয়ায় উৎপাদন মূল্যস্ফীতি বছরের বাকি সময়েও ধীর হবে।

ধীরগতির একটি চিহ্ন হিসেবে জুলাইয়ে পিপিআই আগের মাসের তুলনায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। এ নিয়ে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো মাসভিত্তিক পিপিআইয়ে পতন হয়েছে। এ সময়ে ধাতু ও পেট্রোকেমিক্যালে দামে সবচেয়ে বড় পতন হয়েছে।

জুলাইয়ে কারখানাগুলোর কাঁচামালের মূল্যও কমে গিয়েছে। গত সপ্তাহে চীনের সরকারি পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স (পিএমআই) অনুসারে, জ্বালানি ও কাঁচামালের ব্যয় কমে যাওয়ার বিষয়টি উৎপাদন দামে পতনের ইঙ্গিত দিয়েছিল। সব মিলিয়ে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সংকোচন থেকে রক্ষা পেলেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি যথেষ্ট ধীর হয়েছে। কভিডজনিত বিধিনিষেধ, ঋণে জর্জরিত রিয়েল এস্টেট বাজার ও ভোক্তা মনোভাবে পতন অর্থনীতিকে ধীর করে দিয়েছে।

বণিক বার্তা