চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে থাইল্যান্ডের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। দেশটির জাতীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন কাউন্সিলের (এনইএসডিসি) গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঙ্গা রফতানি ও শক্তিশালী পর্যটন খাতের ওপর দাঁড়িয়ে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশটির অর্থনীতি। প্রথম প্রান্তিকে ২ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পর দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি। তবে রয়টার্সের ১৬ অর্থনীতিবিদের এক জরিপে ৩ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
এনইএসডিসির উপাত্তে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে থাইল্যান্ডের অর্থনীতি ২ দশমিক ৪ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির পেছনে চাঙ্গা রফতানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশটির জিডিপিতে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভূমিকা রাখে রফতানি খাত। এছাড়া পর্যটন খাতেরও রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির জিডিপিতে পর্যটন খাতের হিস্যা ১৫ শতাংশ।
এনইএসডিসির মহাসচিব ধানুচা পিচায়ানান বলেন, কভিড নীতিমালা শিথিল করায় দেশটির পর্যটন খাত চাঙ্গায় ভূমিকা রেখেছে। চলতি বছরে বিদেশী পর্যটকের আগমন বেড়েছে। গত জুনে থাইল্যান্ডের রফতানি হয়েছে ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের একই মাসের চেয়ে যা ১১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। এতে চলতি বছরের প্রথমার্ধে দেশটির রফতানি দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯০০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ১২ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়া প্লাস সিকিউরিটিজের এক বিশ্লেষক নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, ২০২২ সালে থাইল্যান্ডের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে রফতানিমুখী খাতের। পর্যটন ও ভোক্তা খাত এক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ফেব্রুয়ারিতে পর্যটন বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর থেকেই থাইল্যান্ডে পর্যটক আগমন বাড়তে থাকে। জানুয়ারি-জুনে দেশটিতে পর্যটক আগমন হয়েছে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯৯ জন। যেখানে পুরো ২০২১ সালে পর্যটক এসেছেন ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৬৯ জন।
ভ্রমণে বিধিনিষেধ শিথিলের কারণে চলতি বছরে ৭০ লাখ থেকে এক কোটি পর্যটক প্রত্যাশা করছে থাইল্যান্ডের পর্যটন কর্তৃপক্ষ। তবে করোনা মহামারীপূর্ব ২০১৯ সালে আসা ৩ কোটি ৯৮ লাখ পর্যটকের তুলনায় তা অনেক কম।
[IMG]http://forex-bangla.com/customavatars/1975420385.jpg[/IMG]
সম্প্রতি মুদ্রাবাজারে মান বেড়েছে থাইল্যান্ডের মুদ্রা বাথের। ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এর জন্য দেশটির পর্যটন খাতকে কৃতিত্ব দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে পর্যটন খাতের প্রবৃদ্ধি চলতি বছরের বিশ্লেষকদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। চলতি মাসে থাই মুদ্রার দর বেড়েছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বর্তমানে মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাথের মান দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৩। থাইল্যান্ডের পর্যটন খাত জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। এ বছর দেশটিতে পর্যটক সংখ্যার পূর্বাভাস বাড়ানো হয়েছে। এক সমীক্ষায় বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ডলারের বিপরীতে বাথের দর হবে ৩৫ দশমিক ২। সে হিসাবে এ মাসেই বিশ্লেষকদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে বাথের মান। থাই মুদ্রার পুনরুদ্ধারের কারণ হিসেবে ডলারের দরপতনকে দায়ী করা হচ্ছে। এছাড়া থাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি পরিবর্তন, পর্যটন খাতের পুনরুদ্ধার ও অর্থনৈতিক তথ্যের স্বচ্ছতাও এতে অবদান রেখেছে।
এদিকে তিন বছরের মধ্যে প্রথম সুদের হার বাড়িয়েছে ব্যাংক অব থাইল্যান্ড। মালায়ান ব্যাংকিং বিএইচডির কৌশলবিদরা জানান, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাথের মান ৩৪ দশমিক ৮-এ পৌঁছবে। অন্যদিকে স্কশিয়াব্যাংক এফএক্সের কৌশলবিদ কি জাওয়ের প্রত্যাশা, ওই সময় থাই মুদ্রার মান ৩৫ থেকে ৩৬-এর মধ্যে থাকবে।