অ্যাপল ও গুগল নতুন প্রজন্মের স্মার্টফোন উন্মোচন করবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই। সেখানে বড় একটা পরিবর্তন হয়তো সাধারণ গ্রাহকের নজর এড়িয়ে যাবে। উৎপাদিত ওই ফোনের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ কিন্তু চীনে হয়নি।

অ্যাপলের সর্বশেষ আইফোন সংস্করণের একটা ছোট অংশ উৎপাদন হবে ভারতে। গুগলের পিক্সেল ফোন উৎপাদন হবে ভিয়েতনামে। হঠাৎ এ পরিবর্তনের কারণও অস্পষ্ট নয়। কয়েক বছর ধরেই চীনের পরিবেশ বাইরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানে জন্য প্রতিকূল।

চলমান ভূরাজনৈতিক টানাপড়েন এবং কভিড-১৯-এর ধাক্কা। শিরোনাম থেকে কোনোভাবেই সরছে না চীনের নাম। তার ওপর আমেরিকার কোম্পানিগুলোর জন্য অন্য চিন্তা। ট্রাম্পের সময় বাণিজ্যিক যুদ্ধটা অবরোধ এবং শুল্ক ধার্য করে ভিন্ন মাত্রা নিয়েছিল। সেই ছুড়ে দেয়া ইটের জবাবে পাটকেল ছুড়তে পারে চীন। গত মাসে ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর সেই আশঙ্কাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। চীনে বিনিয়োগ করতে গিয়ে মাঝপথে যে মূলধন আটকে যাবে না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে?

এখন পর্যন্ত চীনই বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ইলেকট্রনিক পণ্য প্রস্তুতকারক। তবে শুধু স্মার্টফোন উৎপাদনই চীন থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে, ব্যাপারটা এমন নয়। অ্যাপল তাদের আইপ্যাড উৎপাদন উত্তর ভিয়েতনামে সরিয়ে নিয়েছে। মাইক্রোসফটের এক্সবক্স পরিচালিত হচ্ছে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি থেকে। অ্যামাজন ফায়ার টিভি ডিভাইস উৎপাদন করছে ভারতের চেন্নাইতে। কয়েক বছর আগেও সবক’টির কেন্দ্র ছিল চীনে। হার্ডওয়্যার ও নির্মাণ উদ্যোগে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এক্লিপস ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। প্রতিষ্ঠাতা লিয়র সুসান মনে করেন, চীনের উৎপাদন সাম্রাজ্যে ধাক্কা লেগেছে। ধীরে ধীরে তারাও চীন থেকে গুটিয়ে নিচ্ছে ব্যবসা।

এশিয়াজুড়েই ছড়িয়ে পড়ছে নানা রকমের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। ভিয়েতনামের শিল্পবান্ধব ভূমি, মালয়েশিয়ার উৎপাদন ব্যবস্থার পুনর্জাগরণ এবং ভারতে শ্রমিকের সহজলভ্যতা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করে। অথচ এ মুহূর্তে চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে কোম্পানিগুলো। গত এক দশকে সবচেয়ে ধীর এখন চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

বণিক বার্তা