কভিড-১৯ মহামারী পৃথিবী থেকে শেষ হয়ে যায়নি। এখনো প্রতিদিনই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নতুন নতুন সংক্রমণ ও মৃত্যুর খবর আসে। ২০১৯ সালের শেষদিন শুরু হওয়া এ মহামারী ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। যার রেশ গিয়ে পড়ছে সরাসরি বিশ্ব অর্থনীতির ওপর। তারপর গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ, যা যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। সরবরাহ চেইনে সংকটসহ নানা কারণে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি। আর এসব কিছুর কারণে চাপে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। সৃষ্টি হয়েছে বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতি।

বৈশ্বিক মন্দার কোনো কাঠামোবদ্ধ সংজ্ঞা নেই। বিশ্বব্যাংক এ শব্দযুগল ব্যবহার করে জনপ্রতি বৈশ্বিক জিডিপির পতন বোঝানোর জন্য। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কারখানার উৎপাদন, আন্তঃসীমান্ত পুঁজির প্রবাহ, কর্মসংস্থান এবং বাণিজ্যের মতো সূচকে বড় ধরনের পতন সৃষ্টির ফলে অর্থনীতিতে যে মন্দা সৃষ্টি হয়, সেটিই সত্যিকারের বৈশ্বিক মন্দা।

কিছুদিন আগেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সতর্ক করে বলেছিল, বিশ্ব অর্থনীতি এ মুহূর্তে মন্দার কবলে পতিত হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে রয়েছে। মূলত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। এর সঙ্গে ছিল মূল্যস্ফীতি ও মহামারীর দীর্ঘমেয়াদি চাপও। ওয়াল স্ট্রিটও চিন্তিত মূল্যস্ফীতি নিয়ে। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে যদি এ পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে তা দুর্বল করে দেবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকেও।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। যার অর্থ হলো সমস্যা বাড়ছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, এর বাইরেও। সম্পত্তি বন্ধকের উচ্চহারের কারণে মার্কিন আবাসন ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। জ্বালানি স্বল্পতার কারণে জার্মানিতে কলকারখানার উৎপাদন কমেছে এবং নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে চীনের কোথাও কোথাও লকডাউন ঘোষণার কারণে দেশটির ব্যবসায়ীদের কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।

বণিক বার্তা